কমলনগরে পরকিয়ায় বাধা দিলে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধর করায় আদালতে মামলা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুর কমলনগরে দীর্ঘ দিন যাবত মাদ্রাসার বিভিন্ন ছাত্রী এবং শিক্ষিকাদের সাথে পরকিয়ার মত অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত থাকার কারনে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্তে যৌতুকের দাবিতে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকের (মোহতামিম) বিরুদ্ধে স্ত্রীকে শারিরিক নির্যাতন করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের প্রতি সমন জারি করেন।

গত ১৬ আগস্ট লক্ষ্মীপুর জেলার সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কমলনগর আদালতে নির্যাতিত স্ত্রী বাদী হয়ে স্বামী ও দেবরকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ২৯ জুন মাওলানা ওমর ফারুকের (৪২) সঙ্গে নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর থানার চর জব্বর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ উল্ল্যাহ মেয়ে সালমা বেগম (৩৫) ইসলামি শরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয়। সংসারে ১ ছেলে ও ৪ মেয়ে সন্তান রয়েছে । জানা যায়, বিয়ের কিছু দিন পরে স্বামী ওমর ফারুকের স্থায়ী বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পরে স্ত্রী পৈতৃক ওয়ারিশ সম্পত্তি বিক্রি করে তার নামে জমি ক্রয় করার জন্য স্বামীকে ১০ লাখ টাকা দেয়। কিন্তু ফারুক নিজের নামে জমি ক্রয় করেন। স্ত্রী এক সাক্ষাতকারে বলেন,মাওলানা ওমর ফারুক দীর্ঘ দিন তার মাদ্রাসার বিভিন্ন ছাত্রী এবং শিক্ষিকাদের সাথে গভীর রাতে অফিসের পেছনের গোপন কক্ষে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হলে স্ত্রীর হাতে ধরা পরে। এর পর থেকেই স্ত্রীকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্তে প্রতিনিয়ত শারিরিক নির্যাতন এবং মোটা অংকের যৌতুক দাবি করতে থাকেন ।

একপর্যায়ে যৌতুক না পেয়ে সালমা বেগমকে স্বামী ওমর ফারুক ও তার ভাই মাওলানা মো. গিয়াস উদ্দিন অত্যাচার ও নির্যাতনের মাত্রা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয় । এমনকি বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। গত ১৪ আগস্ট নগদ ৩ লাখ টাকা দাবি করলে নির্যাতনের ভয়ে তাদের কথা মত টাকা পরিষদ করে । টাকা পেয়ে শুরু হয় ঘর থেকে বের করে দেওয়ার আরেক ফাদ, তাতে তারা সফল হয় । নানা অজুহাতে অভিযুক্ত স্বামী ও তার দেবর সালমা বেগমকে বেদরক মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয় । সেই থেকে ছেলেমেয়ে নিয়ে ভাইয়ের বাড়িতে থাকছেন সালমা বেগম। ঘটনার পর থেকে তার কোনো খোঁজ খবরও নেওয়া হয় না। অভিযুক্ত স্বামী ওমর ফারুক চর জাঙ্গালিয়া গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে ও হাজির হাট মাখরাজুল উলুম মহিলা মাদ্রাসাসহ তিনটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও একমাত্র পরিচালক ।

এই বিষয়ে সালমা বেগম আরো বলেন, আমার স্বামী আমাকে যৌতুকের দাবিতে অনেক নির্যাতন করেছে। আমি সামাজিক কারণে কাউকে এতদিন কিছু বলিনি। যতটুকু পেরেছি পিতার ওয়ারিশ সম্পত্তি বিক্রি করে এনে দিছি। তারপরও সে ও তার ভাই আমাকে বহু নির্যাতন করেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা ওমর ফারুকের সব প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। এমনকি মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.