মোঃ যুবরাজ মৃধা, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর আউলিয়াপুরে চাঞ্চল্যকর শিশু রাতুল’কে হত্যার পরে মৃতদেহ গুমসহ চেতনানাশক প্রয়োগের মাধ্যমে ঐ পরিবারের দোকানে চুরির ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনসহ শিশুর মৃত দেহ উদ্ধার ও বিপুল পরিমাণ চোরাই মালামালসহ ২ জন আসামী গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ দুপুরে পটুয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোঃ সাইদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ছোট আউলিয়াপুরের বাসিন্দা ও ডেকোরেটর সাউন্ড ব্যবসায়ী মোঃ গোলাম রহমান লিটনের ১০ বছর বয়সী শিশু ছেলে রাতুল কে সাইকেল কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিজের পরিবারের সকলকে খাবারের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানোর কথা বলে। আসামীদের দেওয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী রাতুল তার পরিবারকে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ায়। পরে আসামীরা রাতুলের সহযোগিতায় বসত ঘর ও বসত ঘর সংলগ্ন ডেকোরেটরের দোকানে প্রবেশ করে ডেকোরেটরের রুমের মধ্যে থাকা মালামাল চুরি করে।
পরে ঘটনার প্রতক্ষ্য দর্শী ও সাক্ষী নির্মুল করতে শিশু সন্তান মোঃ রাতুল (১০) কে জোরপূর্বক বসত ঘরের পিছনের দরজা দিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায় এবং হত্যা করে। মোঃ রাতুল (১০) ছোট আউলিয়াপুর এলাকার মোঃ লিটন ঘরামীর ছেলে। সে আউলিয়াপুর হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র।
পরে অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা পুলিশের একটি চৌকস আভিযানিক দল গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতব্যাপী পটুয়াখালীর জৈনকাঠী ইউপির সেহাকাঠী এলাকা হতে ঘটনার সাথে জড়িত দুই আসামীকে আটক করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, ছোট আউলিয়াপুরের মফেজ মাতুব্বরের ছেলে মোঃ আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও জৈনকাঠী ইউপির এনছান হাওলাদারের ছেলে মোঃ হানিফ হাওলাদার (৪১)।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা জানান, শিশু রাতুলের লাশ গুমের উদ্দেশ্যে আউলিয়াপুর ইউনিয়নের পূর্ব আউলিয়াপুর এলাকার মোঃ জয়নাল বিশ্বাসের বাড়ীর পিছনে পরিত্যক্ত টিনসেড ইটের ওয়াল ঘরের কাঁচা মেঝের পশ্চিম-দক্ষিণ কোনে ৫ ফুট মাটির গভীরে লাশের গায়ে লবণ দিয়ে পলিথিনে মুড়িয়ে মাটি চাপা দিয়ে রাখেন।
এছাড়াও মোঃ হানিফ হাওলাদার (৪১) এর বসত ঘরের পিছনে রান্না ঘরের মাটির নিচ হতে সাউন্ড সিস্টেমের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি এবং বসত ঘরের পিছনে ডোবা হতে অটোরিক্সার ব্যাটারী উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানায় গত ২১-০৯-২০২৩ তারিখে মামলা নং-২১, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী ২০০৩) এর ৭/৩০ তৎসহ ৩২৮/৪৫৭/৩৮০ পেনাল কোড মামলা রুজু করা হয় এবং গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর চেষ্টা চলমান রয়েছে। এ মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আহমাদ মাঈনুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জসীম, পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম আরিফ ও সহ-সভাপতি উপাধ্যক্ষ জসীম উদ্দিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন