ভাঙ্গুড়ায় সেই নকল ঘি’য়ের কারখানা পরিদর্শন করলেন এসিল্যান্ড

সিরাজুল ইসলাম আপন, ক্রাইম রিপোর্টার (পাবনা):
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সেই নকল ঘি’য়ের কারখানায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। শনিবার (১৯ আগস্ট) উপজেলার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের হারোপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের বাড়ির একটি ঘরে স্থাপিত কারখানায় নকল ঘি তৈরি হচ্ছে মর্মে খবর পায় স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা। পরে রাত ৮ টার দিকে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা কারখানায় গিয়ে কয়েক মণ ঘি, ডালডা, সয়াবিন, কেমিক্যাল ও ভেজাল দুধ তৈরির সরমজাম দেখেন। তারা ঐসব দ্রব্য নকল বলে সন্দেহ করেন এবং তা পরীক্ষার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।
পরে ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলহাজ্ব মো. রাশিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এর আগেই কারখানার মালিক পার্টনার ওয়ালিদ ও কর্মচারিরা পালিয়ে যায়। ওসি প্রস্তুতকৃত ঘি ও দুধ তৈরির কেমিক্যাল ও মালামাল সন্দেহে কিছু দ্রব্য বাড়ির মালিক আব্দুল খালেক এর জিম্মায় রেখে আসেন।

কারখানার উপস্থিত কর্মচারিরা জানায়, এই কারখানার মালিক মো. নাইম হোসেন (সোহাগ) ভাঙ্গুড়া পৌর সভার পাটুলিপাড়া সরকার পাড়া মহল্লার মো. রোজ এর ছেলে ও ওয়ালিদ হোসেন ময়মনসিং জেলার বাসিন্দা।

এ বিষয়ে নাইম হোসেন সোহাগ এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি  জানান, তার পিতা খুবই অসুস্থ্য, ক্রিটিক্যাল অবস্থায় রয়েছেন। তাকে নিয়ে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে রয়েছেন। তার কারখানায় নকল ঘি তৈরির ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমতি ও  ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে তিনি ব্যবসা করছেন। উপজেলা স্যানিটারী ইনস্পেক্টর নুর মোহাম্মদ কয়েকদিন আগেও কারখানা পরিদর্শন করে গেছেন। তিনি বাটার তৈরিতে স্বল্প পরিমানে ডালডা ব্যবহারের কথা স্বীকার করেন। কারণ ডালডা ছাড়া বাটার সাদা হয়না বলে তিনি জানান। আবার কোনো কোম্পানির অর্ডারে তারা ক্রিম ওয়েলের সাথে বাটার ওয়েল ব্যবহার করে থাকেন বলেও জানান।

তিনি নকল ঘি তৈরি করছেন এবং এজন্য প্রশাসনকে মাসওহারা দিচ্ছেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,প্রশ্নই আসেনা। বরং তার ব্যবসা সম্পূর্ণ বৈধ বলে তিনি দাবি করেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভুমি)তাসমীয়া আকতার রোজী বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। কারখানার মালিককে না পাওয়ায় ঘরটি তালাবদ্ধ করা হয় এবং ব্যবসার বৈধ কাগজপত্রসহ কারখানার মালিককে অবিলম্বে ইউএনও’র কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। তখন অবশ্য কারখানায় কোনো অবৈধ মালামাল পাওয়া যায়নি। তবু কারখানায় অবৈধ দ্রব্য সামগ্রী বা ক্ষতিকর কেমিক্যানের সন্ধ্যান মিললে তা পরীক্ষার জন্য স্যানিটারী ইনস্পেক্টরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্যানিটারী ইনস্পেক্টর নুর মোহাম্মদ বলেন, প্রতিষ্ঠানের মালিক এলে কারখানা খোলা হবে এবং তখন সেখানে ব্যবহৃত ক্ষতিকর উপকরণ পেলে নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। রিপোর্টে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন দ্রব্য মিললে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, জনৈক সাংবাদিক শনিবার রাতে ফোনে বিষয়টি তাকে জানান। দিনব্যাপি পরিশ্রমে খুবই ক্লান্ত থাকায় সকালে এসিল্যান্ডকে পাঠানোর কথা তিনি জানিয়েছিলেন। এছাড়া এসিল্যান্ডের ছোট বাচ্চা ! এজন্য গভীর রাতের পরিবর্তে সকালে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য তিনি তাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন বলেও জানান।।

Leave a Reply

Your email address will not be published.