সংঘর্ষে একজন পুলিশ সদস্য ও বিএনপি’র একজন নিহত হন

কালের সংবাদ ডেস্কঃ গণতন্ত্রমঞ্চসহ বিএনপি’র সমমনা দলগুলোও রোববার হরতাল আহ্বান করেছে।

সংঘর্ষ চলাকালে মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি।

সমাবেশে বাধা ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী।

সংঘর্ষে দৈনিক বাংলা মোড়ে আরিফুল রহমান নামে একজন পুলিশ সদস্য নিহত হন।

রাজধানীর নয়াপল্টনে সংঘর্ষ চলাকালে শামীম মোল্লা নামের একজন যুবদল নেতা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিএনপি। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন বলেন। নিহত শামীম মোল্লা মুগদা থানা যুবদলের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের এক নম্বর ইউনিটের সভাপতি। তার বাবার নাম ইউসুফ মোল্লা। সংঘর্ষে আহত হলে তাকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে সন্ধ্যার দিকে শামীম মোল্লা মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদ।

প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে নয়াপল্টন, কাকরাইল, বিজয়নগর, আরামবাগ, দৈনিক বাংলাসহ আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশ ও বিএনপি’র নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে দলটির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।

সকাল থেকেই নয়াপল্টন এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকলেও কাউকে বাধা দেয়নি। বিএনপি নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করে উৎসবের আমেজে সমাবেশ করতে থাকেন। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ বদলে যায় পরিস্থিতি। কাকরাইল মসজিদের সামনে পিকআপে করে শান্তি সমাবেশে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে অ্যাকশনে যায় পুলিশ।

নেতাকর্মীদের বড় অংশ বিভিন্ন গলি দিয়ে সমাবেশস্থল ত্যাগ করেন। তবে অনেকে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় জড়িয়ে যান। এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন পুলিশের দিকে। পুলিশও অ্যাকশন চালায়।

এসময় মঞ্চ একেবারে নেতাকর্মী শূন্য হয়ে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।

পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল আহত হন বলে বিএনপি’র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

ঘটনা যে ভাবে সুরু-কাকরাইল মসজিদের সামনের এলাকায় অনেক সময় ধরেই বিএনপি নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

একপর্যায়ে এ পথে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সামান্য সংঘর্ষ বাধে। দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন ঐ ঘটনা চলে যায় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। বেলা পৌনে ১টায় হঠাৎ ঘটনাস্থলে পুলিশের সাপোর্টিভ ফোর্স হিসেবে আরেক দল পুলিশ আসে। এ সময় বিএনপি’র নেতাকর্মীরা পুলিশের দিকে গাছের ডাল ও ইটের টুকরো ছোড়েন। হঠাৎ করেই মুহুর্মুহু সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে যেন পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। সঙ্গে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট, জল কামান দাগানো হয়। এ সময় বিএনপি’র নেতাকর্মীরা পিছু না হটে তারা ইট-পাটকেলসহ পুলিশকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। এরপরই বাড়তে থাকে সংঘর্ষ। চলতে থাকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ওই এলাকা। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতিরোধের মুখে প্রধান বিচারপতির বাসভবন হয়ে মন্ত্রীপাড়ার দিকে পিছু হটে পুলিশ। পুনরায় সাউন্ড গ্রেনেড, গুলি, জল কামান দিয়ে নেতাকর্মীদের পেছনের দিকে ধাওয়া করে। এ সময় প্রধান বিচারপতির বাসার দেয়াল ও ফটকের কাছে কিছু লোককে ঢিল ছুড়তে দেখা যায়। তাদের হাতে লাঠিসোটাও ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published.