কেশবপুরে একইদিনে দুই নারীকে সাপে কামড়: ১ জনের মৃত্যু

শামীম আখতার (খুলনা) ঃ যশোরের কেশবপুরে একইদিনে দুই নারীকে বিষধর সাপে কামড় দিয়েছে। এর মধ্যে পারুল বেগম (৩৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার (৭ মে) রাতে উপজেলার সাবদিয়া এবং প্রতাপপুর গ্রামে পৃথক সাপে কামড় দিয়েছে। সাপে কামড়ানোর উভয় রোগীকে চিকিৎসার জন্য পরিবারের লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তবে, হাসপাতালে সাপে কামড়ানো রোগীদের জন্য উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। খুলনা বিভাগীয় শহরের হাসপাতালে পৌঁছাতে অনেকটা সময় অতিবাহিত হওয়ায় প্রতিমধ্যে ডুমুরিয়ায় পৌঁছালে ওই রোগীর মৃত্যু ঘটে। 

 

পরিবার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুর পৌরসভার সাবদিয়া গ্রামের শওকত শেখের স্ত্রী পারুল বেগম (৩৫) ৭ মে সন্ধ্যার পরপরই কেশবপুর বাজার থেকে বিলের মধ্যে দিয়ে পায়ে হেটে বাড়ি ফিরছিলেন। ওই সময় তার পায়ে বিষধর সাপ কামড় দেয়। পরিবারের লোকজন জানতে পেরে দ্রুত কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন অ্যাম্বুলেন্সযোগে খুলনায় নেওয়ার প্রতিমধ্যে ডুমুরিয়ায় পৌঁছালে তিনি মারা যান। বুধবার সকালে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলে তার স্বামী শওকত আলী এ প্রতিনিধিকে জানান। 

অপরদিকে একই দিন সন্ধ্যা রাতে উপজেলার প্রতাপপুর গ্রামের দুলাল দাসের স্ত্রী প্রমীলা দাস (৬০) মেঠোপথ দিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। ওইসময় তার পায়ে সাপে কামড় দেয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন দ্রুত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখান থেকেই চিকিৎসার পর পরিবারের লোকজন ওই রাতেই তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। তিনি বর্তমানে সুস্থ আছেন বলে জানান প্রমীলা দাসের ছেলে শুভ দাস।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আলমগীর বলেন, সাপে কামড়ানো দুই নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। মে থেকে সেপ্টেম্বর মাসে গ্রামাঞ্চলে বিষধর সাপের উপদ্রব বেড়ে যায়। এই মাসগুলোতে সাপে কামড়ানোর ঘটনা ঘটে অনেকটা বেশি। সাপে কামড়ালে মানুষের শরীরে তিনটিভাবে প্রভাব ফেলে। যেমন হেমোটক্সিন রক্তকে দূষিত করে, মায়োটক্সিন মাংসপেশিকে অকার্যকর করে দেয় এবং নিউরোটক্সিন যাহা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।

সেজন্য বিষধর সাপ কামড়ালে রোগীর শরীরে সময়মতো অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করতে হয়। তবে, সব সাপ বিষধর না। বিষধর সাপে কামড়ানো রোগীদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিক্ষা-নিরিক্ষার মাধ্যমে শতভাগ নিশ্চিত করে রোগীর শরীরে অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করতে হয়। সাপে কামড়ানো রোগীদের জন্য হাসপাতালে উন্নত মানের পরিক্ষা-নিরিক্ষার যন্ত্রপাতি না থাকায় আমাদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.