মোঃ মোকাররম হোসাইন, কালাই জয়পুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাইয়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি ২০২৩-২০২৪ মৌসুমে এ বছর গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। শুধু তাই নয় দামেও খুশি এ উপজেলার কৃষক। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় সহ ১০৫ হেক্টর জমিতে গমের চাষাবাদ করা হয়েছে।
কৃষকরা জানান এক বিঘা জমিতে গম চাষে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি একরে ৩৫ থেকে ৪৫ মণ গম উৎপাদন হয়। গত বছরের মতো এ বছর গমের দাম মণ প্রতি দুই হাজার টাকা হলে বিঘা প্রতি লাভ হবে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা।
কালাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায়১০৫ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে। বারি ৩০, ৩১, ৩৩, ২৫ ও ২৬ জাতের গম চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া আর সঠিক যত্নে এবার গমের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলার গ্রামীণ মাঠগুলোতে আলু রোপণের পাশাপাশি গত বছরের চাইতে এবার অনেক বেশি গম চাষ হয়েছে।
পুনট ইউনিয়নের মান্দাই গ্রামের মিরাজুল ইসলাম বলেন,গমের ফলন ও দাম ভাল পাই বলেই আমি আলুর পরিবর্তে গত কয়েক বছর ধরে প্রায় এক একর জমিতে গম চাষ করি। গম চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৮ হাজার টাকা। এবার আমার ১ একর জমিতে ফলন হয়েছে ৩৫ মন। ইতিমধ্যে মণ প্রতি দুই হাজার টাকা দরে বিক্রি করি। এতে আমি মোটামুটি লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছি।
উদয়পুর ইউনিয়নের নিমেরপাড়া গ্রামের কৃষক রাফি জানান, এবার এক জমিতে গম আবাদ করছি। গত বছরের মতো এবারও ভালো ফলন আশা করছি। কিন্তু গমের চাষাবাদে খরচ কম ও পরিশ্রম কম। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে ও গমের দাম ভালো হলে এ ফসল চাষ করে লাভবান হওয়া যায়।
জিন্দাপুর ইউনিয়নের বেলগাড়ীয়া গ্রামের আরেক কৃষক নিজামুদ্দিন বলেন, এবার গমের ফলন ও দামে খুশি। অন্যান্য ফসল আবাদ করতে শ্রমিক, কীটনাশক, সার ও বীজে যে পরিমাণ খরচা ও ঝামেলা হয় সে তুলনায় গম চাষে খরচা ও ঝামেলা নেই বললেই চলে ।
কালাই পৌরসভার আওড়াঁ গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন,খরচা অনেক কম হয় বলে প্রতিবছের মত এবারও এক একর জমিতে গমের চাষ করেছি, ফলন খুব ভালো হয়েছে। নিজে পরিবার নিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি বাজারেও বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়।
কালাই উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন,এ বছরে ৭৫০ জন কৃষককে গম চাষের জন্য প্রণোদনা দেওয়া হয়। এতে ঐ কৃষকদের ২০ কেজি করে গমের বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।গম আবাদে আলু চাষের তুলনায় খরচ অনেক কম হওয়ায় চাষীরা এ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আগামীতে গম চাষ বৃদ্ধির লক্ষে প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।