কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নে সুদ কারবারির জালচক্রে নীরিহ মানুষ প্রতারণার ফাঁদে

খন্দকার নজরুল ইসলাম মিলন, মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরা সদর উপজেলার কুচিয়ামোড়া ইউনিয়নের হরিশপুর গ্রামের শাহাজান মোল্লা, পিং- মৃত জুলমত মোল্যা, সাং- হরিশপুর এখন নিঃস্ব হয়ে দিন যাপন করছে। ঘটনার আসল সূত্রপাত হলো শাহাজান মোল্লা (৫৫) বলেন, গত কয়েক বছর পূর্বে এপ্রিল-মে মাসে সালমা খাতুন (৪০), স্বামী- মোঃ মুরাদ আলী, গ্রাম- আমুড়িয়া (চরপাড়া) এর কাছে থেকে ১ লাখ টাকা নেওয়া হয়। এই ১ লাখ টাকা ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুরের রুহুল আমিন (৩৫) পেয়ারা ব্যবসায়ীকে দেয়। সালমা খাতুনকে এই সুদে টাকার ফিরিয়ে দেওয়ার শর্ত হয় যে, প্রতি সপ্তাহে ২ হাজার টাকা দিতে হবে কিন্তু পরবর্তীতে ৭ মাস ধরে প্রতি সপ্তাহে ১৫০০ টাকা করে দেওয়া হয় যে টাকার পরিমাণ প্রায় ৪২ হাজার টাকা। এরপর ২০২২ সালে মঙ্গলবার দিন পেয়ারা ব্যবসায়ী রুহুল আমিন সেই ১ লাখ টাকা ফিরিয়ে দিলে আমি তৎক্ষনাৎ সালমা খাতুনকে টাকা ফেরত দিলে সে আরও ২০ হাজার টাকা পাবে বলে দাবি করে।

শাহাজান মোল্লা আরও বলেন, গত রবিবার ১৩ নভেম্বর ২০২২ সালে আমি আমুড়িয়া বাজারে বাজার করার উদ্দেশ্য যাচ্ছিলাম। সালমার বাড়ির সামনে থেকে সালমার পুত্র সৌরভ এবং আরও কয়েকজন লোকজন মিলে আমাকে শারীরিক জখম করে জোরপূর্বক ভাবে শিকল দিয়ে বেধে আইয়ুবের সামনে সাদা স্ট্যাম্প কাগজে ল্যাম্পের কালি দিয়ে টিপসহি করিয়ে নেয়। সালমা খাতুন কুল্লিয়া বাজার থেকে আমার কাছে থেকে ২৫ কেজি মাংস নেয় এবং সেই মাংসর টাকাও সে দেয়নি। এই স্ট্যাম্প নিয়ে পরবর্তীতে কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে শালিস হয় ও এই শালিসের পর সালমা খাতুন মাগুরা জেলা গোয়েন্দা অফিস (ডিবি) তে অভিযোগ দায়ের করেছে আমার বিরুদ্ধে।

আলামিন জানান, সালমার ছেলে সৌরভ ও নছিমন স্বপন চালক আমার বাড়ির উপর এসে জীবননাশের হুমকি প্রদর্শন করে।

সালমা খাতুন বলেন, শাহজান মোল্লার সাথে আমি ধর্ম বোন আত্মীয় সম্পর্ক গড়ে তুলে ছিলাম। ২০২০ সালে আমার কাছে থেকে শাহাজান মোল্লা মৌখিক ভাবে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ছিলো। শাহাজান মোল্লা সেই টাকা দেয়নি বলে আমি ২ বছর পর ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে হাড়ির কালি দিয়ে জোর করে সাদা স্ট্যাম্প কাগজে টিপসহি করিয়ে নেয় যাহার স্ট্যাম্প নম্বর ৮৬৪৯৬৪৫। সালমা খাতুনের পুত্র সৌরভ জানায়, কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান টিপু ৪ টা কিস্তির মাধ্যমে ২৫ হাজার টাকা করে ১ লাখ টাকা দিয়ে দিতে বোর্ড অফিসে শালিস হয়ে ছিলো। এরপর ডিবি অফিসে অভিযোগ দেওয়া হয়।
সালমা খাতুন আরও বলেন, ২০২০ সালে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা শাহাজানের গরু বিক্রি করে দেওয়ার কথা ছিলো।

কুচিয়ামোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম টিপু বুধবার ২ আগস্ট রাত ৯ টার সময় বলেন, শাহাজান মোল্লার কাছে ছালমা খাতুন টাকা পাবে। আমার ইউনিয়ন পরিষদে উভয় পক্ষের গণ্যমান্য ব্যক্তিগণের সম্মুখে গত ৪-৫ মাস পূর্বে শালিস হয়। এই শালিসে সিদ্ধান্ত হয় শাহাজান মোল্লা ছালমা খাতুনকে ১ লাখ টাকা প্রদান করিবে ৪ টি কিস্তির মাধ্যমে। শাহাজান মোল্লা ১ কিস্তির ২৫ হাজার টাকা দিয়েছে যে টাকা গুলো আমুড়িয়া চরপাড়া এলাকার রফিক নামে এক ব্যক্তির কাছে গচ্ছিত আছে। তার কাছে সালমা খাতুন এর এই টাকা সুদে কারবারি লেনদেন হয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, শাহাজান ও সালমার মধ্যে কোন সুদে কারবারি হয়েছে কিনা এটা আমার জানা নাই। সুদে কারবারি লেনদেন হলে আমি কখনও এই শালিস দরবার আমার ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে করতাম না। আর শাহাজান মোল্লা পূর্বে স্ট্যাম্প ছাড়া ছালমার কাছে ১ লাখ টাকা লেনদেন করা হয়ে ছিলো এটা ইউনিয়ন পরিষদের শালিসের সময় জানায়নি, তিনি বলেন অবশ্যই পূর্বের এই লেনদেনের ঘটনা আমাকে বললে আমি উপযুক্ত সঠিক বিচার করতাম।

তবে এই ১ লাখ টাকার বিষয়ে শাহাজান মোল্লা মোবাইল ফোনে জানান, আমি চেয়ারম্যান মহোদয়কে বিস্তারিত ঘটনা সব খুলে বলে ছিলাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published.