কুড়িগ্রামে নদ নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যহত দূর্ভোগে পানিবন্দি মানুষজন

এ আর রাকিবুল হাসান, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামে গত কয়েকদিন ধরে ভারী বর্ষন ও উজানের ঢলে জেলার সবকটি নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।এতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে চর ও নিম্নাঞ্চলগুলো।নতুন নতুন চর প্লাবিত হয়ে পানি বন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। বিশুদ্ধ পানি সংকটে পড়েছেন শতাধিক পরিবার।এছাড়া চারণভূমি তলিয়ে গো খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।যাতায়াতের রাস্তাঘাট তলিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে এসব অঞ্চলের মানুষজন।বর্তমানে নৌকা আর কলা গাছের ভেলা একমাত্র ভরসা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদীর পনি অব্যাহত রয়েছে। তবে এসব নদ-নদীর পানি ধীর গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় এখনও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার উলিপুর ও সদর উপজেলার মুসার চর, পুর্ববালাডোবার চর, ফকিরের চর, পোড়ার চরসহ কয়েকটি চরের ঘর-বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এসব চরে বসবাসকারী পরিবারগুলো পড়েছে চরম দুর্ভোগে। অনেকেই দিনের বেলা ঘর-বাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গায় অবস্থান করলেও কোন কোন পরিবারের দিন কাটছে নৌকায়। তবে এ পরিবারগুলো রাতের বেলা নিজ ঘরের উঁচু মাচানে অবস্থান করছেন। বন্যা কবলিত এলাকায় বিশদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবারের প্রয়োজনিয়তা দেখা দিয়েছে।

পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন চর প্লাবিত হচ্ছে,আর এই পানিবন্দি পরিবারগুলোর শুকনো খাবারের প্রয়োজনের কথা জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

মুসার চরের মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন,গত পরশু দিন থেকে পানি বাড়তেছে।গতকাল দুপুরে ঘর বাড়িতে পানি উঠছে।।আশপাশে কোন উঁচু জায়গা নেই,গরু ছাগল মাটির ডিবি করে উপরে রাখছি।আমাদের কষ্ট শুরু হলো।

ওই গ্রামের মোছাঃ আছিয়া বেগম বলেন,গতমাসে নদী ভেঙে এ চরে আসছি।জমি জমা নেই, নিচু জায়গায় বাড়ি করা ছাড়া উপায় ছিল না।বাচ্চাদের নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তা হয়।কখন না জানি কোন অঘটন হয়।পানি খুবই বাড়তেছে,এখন থাকা আর খাওয়ার কষ্ট খুব হবে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আগামী ২২ ও ২৩ জুন প্রধান নদ-নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।এসময় সাময়িক বন্যা হতে পারে তবে দীর্ঘমেয়াদী বন্যা হওয়ার আশংকা নেই।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ বলেন, বন্যা মোকাবেলার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় ৫৪১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১০ লাখ ২১ হাজার টাকা ও শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে।ইতিমধ্যে বিতরণের কাজ শুরু হয়েছে।এছাড়া যেখানে প্রয়োজন হবে- তাৎক্ষণিকভাবে বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.