মোঃ মোকাররম হোসাইন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি: পারিবারিক কলহের জেরে জয়পুরহাটের কালাইয়ে রনি আক্তার নামে এক নারীর একটি গাভীকে গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়ায়ে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠেছে প্রতিপক্ষ আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনা বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের শেখপুর গ্রামে ঘটেছে। ওই নারী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। গাভীর মালিক রনি আক্তার শেখপুর গ্রামের মুনছুর রহমানের স্ত্রী। আর অভিযুক্ত আব্দুল মান্নান একই গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতিবেশী আব্দুল মান্নানের সাথে গৃহবধূ রনি আক্তারের পারিবারিক দ্বন্দ্ব লেগে আছে। এ নিয়ে গ্রামে বেশ কয়েকবার বিচার-শালিসও হয়েছে। তারপরও আব্দুল মান্নান গায়ে পড়ে তাদেরকে গালিগালাজ করে আসছিল। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে আব্দুল মান্নান পাশর্বর্তী জামুড়া গ্রামের মৃত দছিম উদ্দিনের ছেলে বেলাল হোসেনকে সাথে নিয়ে গৃহবধূর বাড়িতে প্রবেশ করে গোয়াল ঘরে থাকা একটি গাভিকে গ্যাস ট্যাবলেট কলার পাতায় মুড়ে খাওয়ায়। এ সময় গৃহবধূ ও তার স্বামী বাড়ির ভিতরে তাদেরকে দেখতে পেয়ে চিৎকার করতে থাকলে ততক্ষণে তারা দুজন সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখতে পায় গাভিটি মাটিতে পড়ে আছে। পাশে গ্যাস ট্যাবলেটের কিছু অংশ ও কলার পাতা পড়ে আছে। গাভিটির মূল্য প্রায় ৭০ হাজার টাকা।
এ ঘটনায় গাভির মালিক রনি আক্তার বাদী হয়ে প্রতিপক্ষ আব্দুল মান্নান ও বেলাল হোসেনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। প্রতিপক্ষের এমন কর্মকান্ডে গৃহবধূর পরিবার আতঙ্কে জীবনযাবন করছেন।
গাভীর মালিক গৃহবধূ রনি আক্তার বলেন, পারিবারিক জের লেগেই আছে। গ্রামে কয়েকবার দরবারও হয়েছে। কাউকেই সে মানেনা। গত রাতে সে আরেকজনকে সাথে নিয়ে গোয়াল ঘরে প্রবেশ করে আমার একটি মাত্র গাভীকে গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়ায়ে হত্যা করেছে। রাতে আমরা ঘুম থেকে ওঠে দেখি ওরা দুইজন গোয়াল ঘর থেকে বের হচ্ছে। তাদের দেখে চিৎকার করতে থাকলে তখন তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। আমি থানায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। গাভী হত্যার বিচার চাই।
প্রতিবেশী বুলু মিয়া বলেন, রাতে চিৎকার শুনে ওই বাড়িতে এসে দেখি গাভিটি মাটিতে পড়ে আছে। আসলে আব্দুল মান্নান একজন খারাপ স্বভাবের লোক। ওর দ্বারা সবই সম্ভব। দ্বন্দ্ব থাকতেই পারে, কিন্তু গাভীকে মেরে ফেলার দরকার কি ছিল ? এমন কর্মকান্ডের বিচার হওয়া দরকার।
অভিযোগ অস্বীকার আব্দুল মান্নান বলেন, অযাচিত আমাকে দোষারুপ করা হচ্ছে। তাদের সাথে দ্বন্দ্ব আছে তা সবাই জানেন। কিন্তু গাভীকে মেরে ফেলালেই সব সমস্যা সমাধান হবে এটা কে বলেছে। তাও আবার রাতের বেলায়। নিজেরাই গাভীকে মেরে ফেলে আমাকে অভিযুক্ত করেছে।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, গাভী মেরে ফেলার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।