ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতা, কেন মনে এত সংকীর্ণতা?

***** পরী ফিরোজা  *****

কোন ধর্মে আছে,সাম্প্রদায়িকতা?
এর অর্থ সংকীর্ণতা ,
ধর্ম এনেছে সাম্যের সমতা।
আনেনি কখনো সাম্প্রদায়কতা।

সাম্প্রদায়িকতার ফলে পরস্পরে হিংসা জন্মে,
ফলশ্রুতিতে খুন,খারাবি আসে চলমান কর্মে।
এই ব্যমো যখন কোন জাতিতে দেখা যায়,
সংখ্যা গরিষ্ঠরা, সংখ্যা লঘুদের উপর চড়াও হয়।

সাম্প্রদায়িকতা কোনো ধর্মের, শিক্ষা হতে পারে না,
তার কিছু কিছু করিতেছি আমি বর্ণনা।

অর্থঃ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যারা মানুষের উপর অত্যাচার করে, পৃথিবীতে অহেতুক বিদ্রোহ করে বেড়ায়।
*সুরা-শূরা*–আয়াত -৪২

অর্থ ঃ অবশ্যই অত্যাচারীদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে।
* সুরা-ইব্রাহিম* আয়াত ২২

অর্থ ঃ আল্লাহ অত্যাচারীদের পছন্দ করেন না।
*সুরা-আল-ইমরান* ১৪০

কোরআনের বর্ণনায় গেলো বোঝা,
আল্লাহ ইহাকে নিন্দা করেন সোজা সোজা।
এখানে মানুষ বলতে, সমগ্র মানব জাতিকে বুঝানো হয়েছে, না, কোনো জাতি বাদ রয়ে গেছে ।

বাবরী মসজিদ ধ্বংস করা ,
তার স্হলে মন্দির তৈরী করা,
এগুলো সাম্প্রদায়িকতার হিসাবে গড়া ।
সারা বিশ্বে, মুসলমান নির্যাতিত,
তারা আজ পতিত, পতিত।

আল্লাহ পাক বলেনঃ–
আমি এক পুরুষ ও এক নারী হতে মানব জাতী সৃষ্টি করেছি,
পরে তাদের জাতি, গোত্রে বিভক্ত করেছি।

অর্থ ঃ পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে যাহাতে তোমরা একে অপরের সহিত পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদা সম্পন্ন যে সবচেয়ে বেশি সদাচারী। আল্লাহ সব কিছু জানেন,সমস্ত খবর রাখেন।
*সুরা-হুজুরাত* আয়াত ১৩।

তারপরেও যদি মানুষ, না বোঝে?
আল্লাহ পাকের, আর কি করার আছে?
এতো সুন্দর বিশ্লেষণ,
কেন করেনা মানুষ অনুধাবন।
মানুষ করতো যদি অনুসন্ধান ?
এখানেই আছে বুঝি, সব সমস্যার সমাধান।

অর্থ ঃ আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছি ধর্মগত আচার ও অনুষ্ঠানাদি যা উহারা অনুসরণ করে।
সুতরাং উহারা যেন এই ব্যপারে তোমার সহিত বিতর্ক না করে। তুমি তাদেরকে তোমার প্রতিপালকের দিকে আহবান কর, তুমি তো সরল পথেই প্রতিষ্ঠিত।
*সুরা-হাজ্জ্ব* আয়াত –৬৭

উপরের আয়াত গুলো থেকে কি বুঝা গেলো?
সকল সম্প্রদায়ের প্রতি, আল্লাহ পাকের পূর্ণ সমর্থন ছিলো।

কোনো ধর্মের সাথে বিতর্কের প্রয়োজন নাই,
তবু কেন মানুষ, এতো বিতর্কে জড়িয়ে যায়।

গীতার বাণী ঃ
যে আমাকে যেভাবে উপাসনা করে, আমি তাকে সেভাবে তুষ্ট করি। মনুষ্যগন যে পথই অনুসরণ করুক না কেন, সকল পথেই আমাতে পৌছুতে পারে।
* জ্ঞানযোগ* শ্লোক ১১

গ্রন্হে গ্রন্হে কোনো বিভেদ নাই,
কত সুন্দর মিল, দেখতে পাই।
সব কিছু ভুলে, কেন আমরা ভেদ বিভেদে চলে যাই ?
প্রেমিক রুমীর ভাষায় বলি?
প্রত্যেক নবী, রাসুল, অলী,
বিভিন্ন পথে গেছে চলি।

সকলের উদ্দেশ্য এক,
হোক পথ শতেক ?

প্রার্থনা করা জরুরি,
কিভাবে করবা, তা ফিকিরি।
মওলানা রুমি, স্বর্ণকারের হাতুারীর শব্দে,
খোদার জিকির, শুনেছিলো সেই অব্দে।
নাচিতেছিলো বে-মেছালে,
তাকে খোদার ইশক্ বলবেনা কোন খেয়ালে?

বৌদ্ধ ধর্মের *অহিংসা* হচ্ছে মূলনীতি,
ত্রিপিটক-এ আটটি সৎ পথের কথা আছে স্হিতি।

১/ সৎ দর্শন
২/ সৎ আকাংঙ্খা
৩/ সৎ কথন
৪/ সৎ আচরণ
৫/ সৎ জীবন যাপন
৬/ সৎ প্রচেষ্টা
৭/ সৎ মনযোগ
৮/ সৎ ধ্যান।

এই আটটি উপদেশ কেউ যদি মানে?
সে অতি মানব হবে, ধ্যানে আর জ্ঞানে।

খ্রীষ্টধর্মে প্রেমকে বড় করে হয়েছে দেখানো,
সর্ব কিছুতেই প্রেম, বিদ্যমান থাকে যেন ।
বাইবেলে বলা হয়েছে *ঈশ্বরই প্রেম*,
কোনো প্রকারে হয় না যেন ভ্রম ।

খ্রীষ্টানেরা মনে করে, সকলের মধ্যেই খ্রীষ্ট বিরাজ করেন,
ক্ষুদ্রতমের মধ্যে ও তিনি আছেন।

বাইবেলের মথি পুস্তকের ২৫ অধ্যায়, ৩৫—– ৪৫ আছে,
হে মানব কেন যাও তবে বিভেদের মাঝে ?

বলো, কোন গ্রন্হে, কোন মহামানব, মন্দ শেখায় ?
আমার এ পোড়া চোখে, কেন না দেখায়?
মন্দ শেখাতে আসেনি ওরা এ ধরায়।
স্রষ্টার নির্দেশে এসেছে, মানবের শুভকামনায়।
কি করে তারা বলো, মন্দ শেখায় ?

বিভেদ করি, আমরা সকলে,
শেষে পুড়ি, নরক অনলে।

এ লেখাটা ধর্ম আর সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে লেখা,
যদি হয় মানুষের, সুন্দর চোখে দেখা।
আসলেই কিছু হবে শেখা।
এইজন্যই আমার এ লেখা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.