নওগাঁর জবই বিলে নৌকা বাইচে আনন্দে মেতে উঠলো হাজারো দর্শক

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোর্টারঃ নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী জবই বিলে নৌকাবাইচ প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত। বিলের দু’ পাড়ে প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ দেখার জন্য।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জবই বিলে নৌকা বাইচ প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়।
নৌকা বাইচে অংশ গ্রহণ কারীদের থেমে থেমে হর্ষধ্বনিতে মুখরিত বিল পারের চারপাশ। বইঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ আর মাঝি-মাল্লাদের কণ্ঠে কোরাস শোনা যায় ‘হেইও রে, হেইও’। একেকটি নৌকা ছুটে চললে হর্ষধ্বনি দিয়ে দল গুলোকে উৎসাহিত করতে থাকেন হাজারো দর্শক। এ সময় পুরো এলাকা জুড়ে হাজারো মানুষ আনন্দ মুখর হয়ে ওঠে।
স্থানীয় সাপাহার উপজেলা প্রশাসন এর আয়োজনে নৌকা বাইচের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি। এতে অংশ নেয় নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ আশেপাশের ছোট-বড় মিলে প্রায় ৮টি নৌকা।
নৌকা বাইচ উপভোগ করতে দুপুরের পর থেকেই তীব্র রোদ ও গরম উপেক্ষা করে জবই বিলের উৎসুক মানুষ জড়ো হতে শুরু করেন। বিকেল সাড়ে ৩টায় জবই বিলের মাহিল প্রান্ত থেকে নৌকা বাইচ শুরু হয়ে মাছ চত্বর এলাকায় শেষ হয়। নৌকা বাইচের দূরত্ব ছিল প্রায় ১ কিলোমিটার। এ সময় বিলের মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তার দুই পাশে মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। তাদের আনন্দ-উল্লাসে মুখরিত বিলের চারিপাশ।
এই নৌকা বাইচ দেখতে দুপুরের আগে থেকে ছেলে থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত বিলের দু’ পার্শে ভীড় জমান।
দেখতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে নৌকা বাইচ উৎসবের কথা জানতে পেরেছি। সকাল ১১টায় রওনা হয়ে এখানে এসেছি। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই নৌকা বাইচ এখন বিলুপ্তির পথে। দর্শনার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন, আমার জীবনে প্রথম নৌকা বাইচ দেখতে এসেছি। এখানে এসে নৌকা বাইচ দেখে দারুণ আনন্দ পেয়েছি। প্রতি বছর এমন আয়োজন করার জন্য কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।
সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, জবই বিল কেন্দ্রীক পর্যটন বিকাশে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিনিয়ত বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এরই একটি অংশ জবই বিলে নৌকা বাইচ। এই প্রতিযোগীতা আয়োজন করায় আবহমান বাংলার চিরায়ত চিত্র ধরে রাখার পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে জবই বিল আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। এতে স্থানীয়দের জীবন জীবিকার পরিবর্তন আসবে।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি বলেন, আবহমান গ্রাম-বাংলার সংস্কৃতি ধরে রাখতে ও জবই বিলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যর অংশ এই নৌকা বাইচ। নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের মাঝে যেন প্রাণ ফিরে এসেছে। আগামীতেও আরো বড় পরিসরে এই ধরনের আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.