বদলগাছীতে সাড়া ফেলেছে মুরগী পালন নতুন জাত ‘বাউ চিকেন’

এমদাদুল হক দুলু বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের উদ্ভাবিত নতুন জাতের মুরগী ‘বাউ চিকেন’ সাড়া ফেলেছে নওগাঁর বিভিন্ন এলাকায়। খেতে দেশি মুরগির মতোই স্বাদ হওয়ায় বাড়ছে বাউ চিকেনের চাহিদা। গড়ে উঠছে বাণিজ্যিক খামারও। নতুন জাতের এই মুরগী পালন করে বাজিমাত করেছেন নওগাঁর সদর ও বদলগাছি উপজেলার প্রান্তিক খামারী ফেরদৌসী, রিমা, রেনুকা, শামিমা, রোকেয়া বেগমের মত অনেকেই। তাদের সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন এলাকার আরও অনেকেই।

দেশি মুরগীর দাম খুবই চড়া। অনেকটা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কয়েক বছর আগে ‘বাউ চিকেন’ নামে নতুন একটি মুরগীর জাত উদ্ভাবন করেন। এই মুরগীর মাংসের স্বাদ অনেকটা দেশি মুরগীর মতোই। দেশীয় জলবায়ুর সাথে মানানসই বাউ চিকেন পালন করে সাড়া ফেলেছেন বদলগাছি উপজেলার কোমারপুর গ্রামের খামারি রেনুকা বেগম । চাহিদা বেশি থাকায় মুনাফাও হচ্ছে ভালো।

বাউ চিকেন খামারী রেনুকা বেগম বলেন, “৪৫ দিনে এই মুরগী ৯শ’ থেকে ১কেজি ২০০ গ্রাম ওজন হয়। লাভও বেশি, দেশি মুরগীর স্বাদ আর এই বাউ মুরগীরও স্বাদ একই রকম।” ব্রয়লার, সোনালী কিংবা পাকিস্তানী জাতের চেয়ে এই মুরগীতে রোগবালাই কম। ওষুধ তেমন একটা লাগে না, রোগবালাই দেশি মুরগীর মতনই। এই জাতের মুরগী পুষে আমরা লাভবান হয়েছি। এই এলাকার আরও প্রায় ১৫ খামারীরা ইতিমধ্যে বাউ চিকেনের খামার গড়ে তুলেছেন।

সরকারের পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বাউ চিকেন পালনে খামারীদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী। পাশাপাশি পরামর্শ দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগও। দেশি মুরগীর চেয়ে বাউ চিকেনের দাম কিছুটা কম। নতুন জাতের এ মুরগি জেলার মাংসের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে পারে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

মৌসুমীর প্রণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: নুর হোসেন বলেন, ‘ব্রাউ ব্রো বা বাউ মুরগি পালন করে আমার উপজেলায় অনেকই লাভের মুখ দেখেছে। ব্রয়লার মুরগি অনেকের কাছেই অপছন্দের, সেখানে বাউ মুরগি তাদের কাছে খুবই পছন্দের মুরগি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। খেতেও দেশি মুরগির মতো স্বাদ। আমি নিজেও অনেকগুলো খামার পরিদর্শন করেছি। এ মুরগিতে রোগ-বালাই খুবই কম হয়ে থাকে। উন্নত এ মুরগির জাতকে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাবো।’

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু তালেব বলেন, বাউ ব্রো জাতের মুরগী খেতে সুস্বাদু, মৃত্যুহার কম, উৎপাদন বেশি হওয়ারর কারণেই খামারি ও ভোক্তা পর্যায়ে এর চাহিদাও অনেক। এক কেজি খাবার খেলে এই মুরগী এক কেজি বৃদ্ধি পায়। এই মুরগি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সবখানে ছড়িয়ে দিতে সবাইকে কাজ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে স্থানীয় এনজিও মৌসুমী প্রশিক্ষণের পাশাপাশি পরামর্শ প্রদান করছে। তাই তাদের মতো অন্য এনজিওদেরও এগিয়ে আসার আহŸান রইলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published.