বাউফলে বঙ্গবন্ধু জন্মদিন উদযাপন কেন্দ্র করে  আ’লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, সাধারণ সম্পাদক সহ আহত ২৫

জাহিদ শিকদার,  বরিশাল ব্যুরো: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উদযাপন কেন্দ্র করে  পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা  আওয়ামীলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল  মোতালেব হাওলাদারসহ আহত  হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। এর মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় তিন জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মদিনে  বাউফল উপজেলা  আওয়ামীলীগ চার ভাগে বিভক্ত হয়ে কর্মসূচী ঘোষণা করে। এতে এক পক্ষে নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান সাংসদ আসম ফিরোজ(এমপি), অপর পক্ষে রয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল,অপর আরও একটি পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওয়লাদার।

এছাড়াও হাসিব আলম তালুকদারের পক্ষ থেকেও কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। সকাল সারে ১১টার দিকে মিছিল নিয়ে মোতালেব হাওলাদার ও তার কর্মী-সমর্থকরা মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয় জনতা ভবনের দিকে রওয়ানা হলে উপজেলা পরিষদের সামনের গেটে পুলিশ মিছিলটিকে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে লাঠিচার্জ পরে রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। বাধা উপেক্ষা করে মোতালেব হাওলাদারসহ কয়েক নেতাকর্মী জনতা ভবনের দিকে রওয়ানা হলে গেটের অদুরেই আসম ফিরোজ সমর্থিত কর্মিসমর্থকরা মোতালেব হাওলাদারের উপর হামলা করে। এতে মোতালেবসহ আহত হন অন্তত ১৫জন। এসময় উত্তেজিত নেতাকর্মীদের ইটপাকেলে আহত হন পুলিশসহ অন্তত অপর আরও ১০জন।

এছাড়া শান্তিপূর্ণ ভাবে র‌্যালী ও সমাবেশ সম্পন্ন করেছেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল। শহর জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এবিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো সোয়েব মাহমুদ জানান, মোতালেব হাওলাদারের শরীরে বিভিন্ন অংশে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠির আঘাত রয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর। এছাড়াও রিপন নামের অপর এক কর্মির একাধিক রাবার বুলেটের আঘাত থাকায় তাদের দুজনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজকের অনুষ্ঠানের ব্যপারে দুপক্ষকে একসাথে বসানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু তারা রাজি হননি। আজকে একপক্ষকে লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করা হল অপর পক্ষকে কেন লালি চার্জ করলেন না এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন আমরা দু পক্ষকেই ছত্রভঙ্গ করতে চেষ্টা করেছি।

এবিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন বলেন, বাউফলে তিন গ্রুপের র‌্যালী ঘোষণা করা হলে সকলকে সময় বেধে দিয়ে স্ব-স্ব স্থান থেকে র‌্যালী বের করতে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান সমর্থীত নেতাকর্মীরা বাধা উপেক্ষা করে (আওয়ামীলীগের)  দলীয় কার্যালয় দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ২০/৩০ জন নেতাকর্মি দলীয় কার্যালয়ের দিকে রওয়ানা হলে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এঘটনায় ৬জন পুলিশ সদস্য অহত হন বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.