মো: আনিছুর রহমান প্রতিনিধি বেনাপোল : নির্মমতার মাত্রা যে কত নিষ্ঠুর হতে পারে তা শার্শার কন্যাদাহ গ্রামে একের পর এক একই পরিবারের ৬ জন হত্যাকান্ডের উদাহরন হয়ে থাকবে। শার্শার কন্যাদাহ গ্রাম এক ভয়াঙ্কর আতঙ্কীত জনপদ। কন্যাদাহ গ্রামের এ হত্যাকান্ডগুলো গোটা দেশবাসির মনে দাগ কেটেছে। যদি একটি হত্যাকান্ডের বিষয় ব্যবস্থা নেওয়া হতো তাহলে একের পর এক একটি পরিবারের ৬ জনকে হতে হতো না মির্মম নিষ্ঠুর ভাবে হত্যার শিকার। বিগত আওয়ামী সরকারের দু:শাসন অপশাসন এর সময় শার্শার আলোচিত গ্রাম কন্যাদাহর চিহিৃত সন্ত্রাসী সাবেক উলাশী ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান এর সন্ত্রাসী বাহিনী শার্শা-১ আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন এর ইন্ধনে আয়নাল একের পর এক হত্যা কান্ড ঘটায়। আইনাল তার বাহিনী দিয়ে এদের পিটিয়ে, চাকু দিয়ে খুচিয়ে, গরম রড শরীরে প্রবেশ করিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে।
আয়ানাল বাহিনীর হাতে খুন হয় একই গ্রামের আবছার আলীর ছেলে ১।কিতাব আলী, ২। মোজাম আলী,৩। তিনবার উলাশী ইউপি থেকে নির্বাচিত মেম্বার নুরুল ইসলাম গাইন, আফছার আলী গাইন এর পোতা ছেলে ৪।আব্দুল আজিজ গাইন, শাহজাহান গাইন এর ছেলে ৫। আরিফুর জামান ( আফছার গাইন এর পোতা ছেলে)ও সর্বোশেষ ২০২৪ সালে খুনের শিকার হয় ৬। আ: আজিজ এর ছেলে মুকুল গাইন।
ওই গ্রামের সাবেক মেম্বার রেজাউল ইসলাম জানান, আমরা বাংলাদেশ জাতিয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর সমর্থক হওয়ায় কুলাঙ্গার অত্যাচারী খুনি আয়নাল আওয়ামীলীগের ক্ষমতার দাপটে আমাদের পরিবারকে নিঃশেষ করার জন্য খুনের মিশনে নামে। তার কিলার বাহিনী দিয়ে প্রথমে জিওলিতলা মাঠের মধ্যে নির্মম ভাবে পিটিয়ে হত্যা করে কিতাব আলী গাইনকে। এরপর বছর না ঘুরতে কিতাব এর ভাই মোজাম গাইনকে বাড়ি থেকে বেনাপোল যাওয়ার পথে গয়ড়া দোতলা মসজিদের সামনে গুলি করে পিটিয়ে চাকু দিয়ে খুচিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করে। এরপর আরো একবছর পর আজিজকে কন্যাদাহ স্কুল মাঠে গাছের সাথে বেধে পিটিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে গাছে ঝুলিয়ে এবং গরম রড শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ঢুকিয়ে হত্যা করে। একই বছর আমার পিতা ৩ বার নির্বাচিত ইউপি সদস্য নুরুল ইসলমাকে হত্যা করে। আয়নাল উলাশী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার এর জন্য তার পিতাকে খুন করে। এরপর আরিফুর জামানকে ঢাকা থেকে গুম করে। আজ পর্যন্ত আরিফর এর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। সর্বোশেষ ২০২৪ সালে পাকা সড়কের উপর মুকুল গাইনকে হত্যা করে।
তিনি আরো বলেন আমরা থানায় বা কোর্টে মামলা পর্যন্ত করতে পারি নাই। বাড়িতে এসে বোমাবাজি করে হুমকি দিয়ে যায়, যে বাদি হবে তাকেও প্রানে মেরে ফেলা হবে। আমরা আয়নালের অত্যাচারে বিগত ১৭ টি বছর বাড়ি ছাড়া । প্রানের ভয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছি।
মোজাম এর স্ত্রী শাহানারা বেগম, আজিজ এর স্ত্রী ছায়রা খাতুন, আজিজ এর ভাই রনাজ গাইন কিতাব আলীর স্ত্রী রাজীয়া সহ তাদের ছেলে মেয়ে ও স্বজনরা বলেন, আয়নালের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য মশিয়ার, বাবু, বাগবির, উজ্জল, হাসান,রফি, নুরুদ্দিন, শরিফুল, তরিকুল হুসাইন শুধু আমাদের স্বামীদের খুন করে ক্ষান্ত হয়নি। এরা আমাদের বাড়ি ঘরের সোনা গহনা ধান চাউল, গরু ছাগল লুট পাট করে নিয়ে যায়। আর সর্বোশেষ মুকুলকে হত্যার পর শার্শা আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন তাদের সহযোগিতা করে আমাদের মামলা না করার জন্য হুমকি দেয়। আমরা এখন মামলা করব বলে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। আয়ানালের এসব বাহিনী দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাড়াটিয়া খুনি হিসাবে খুন খারাবি করে বলে তারা জানায়।
অত্যাচারী আয়নালের বাড়ি গিয়ে তাকে ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর কোন সদস্যকে পাওয়া যায়নি। বাড়ি থেকে মহিলারা বলেন গত ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এরপর আয়নাল সহ বাকিরাও বাড়ি থেকে পালাইয়াছে।
গ্রাম বাসি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আয়নাল একজন সন্ত্রাসী মানুষ। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য গড়ে তোলে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। অপরদিকে এই গ্রামের গাইন পরিবার ছিল দানশীল এবং অবস্থাসম্পন্ন পরিবার। আয়নাল একক আধিপত্য বিস্তারের জন্য একের পর এক খুন খারাপি জমি দখল বাওড় দখল করে আওয়ামীলীগের পাতানো নির্বাচনে ২ বার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় উলাশী ইউনিয়ন থেকে। এরপর সে এই গ্রামের দুর্বল মানুষের জমি দখল করে শত শত বিঘা জমিতে মাছের ঘের করে মাছ চাষ করে। বিনিময়ে জমির মালিককে কোন অর্থ প্রদান করেন না।