বিভিন্ন অপকর্মের বিচারের দাবিতে ছাত্রলীগের সংবাদ সম্মেলন

পলাশ সাহা, (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি : নেত্রকোণার দুর্গাপুরে কিশোর গ্যাং এর হোতা,অর্থপাচারকারী,মাদক ব্যবসায়ী, চাঁদাবাজ,খুনি সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ।
শনিবার দুপুরে দুর্গাপুর সাংবাদিক সমিতি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ইবনে মাসুদ।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন,দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রলীগ লক্ষ্য করছে যে, দুর্গাপুর উপজেলার বেশক’টি কুচক্রী মহলের যোগসাজসে ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কিশোর গ্যাং এর মূলহোতা,মাদক সম্রাট,অর্থপাচারকারী (মানি লন্ডারিং),মাদক ব্যবসায়ী,চাঁদাবাজ,খুনী,সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে এবং বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত সাদ্দাম আকঞ্জি,সাইফুল ইসলাম, বিরিশিরি এলাকার শাহাদাত ,জামাল মিয়া, গাঁওকান্দিয়া ইউপিনের শাহিন মিয়া, স্বরণিকা এলাকার মেহেদী হাসান সাহস,নবী,আল আমিন,রনি বাউল,গাভাউতা এলাকার রাজন,শুটার শামীম,জুয়েল,ইলিয়াস তালুকদার সৌরভ ,শামীম,অমি,অনিক,সাগর মিয়া,রাজা,জুয়েল মিয়া,দূর্জয়,প্রিন্স মাদক ব্যবসার রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। ছাত্র থেকে যুব সমাজ এখন হাত বাড়ালেই মাদক পাচ্ছে ওইসব ব্যক্তিদের যোগসাজসে। উপজেলা সহ পৌর সদরের এখন উঠতি বয়সি ছাত্র সমাজ মাদকের ছোবলে নিজের জীবন ধ্বংস করে ফেলছে এমনকি পরিবারটিকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলছে। গত ৯মার্চ দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রলীগ কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে শীর্ষক করণীয় সম্পর্কে একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। সেখানে নেত্রকোনা-১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ রুহী উপস্থিত ছিলেন। তিনি মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করার জন্য ছাত্রলীগ,যুবলীগ, আওয়ামীলীগ সহ সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।
ওই কর্মসূচীর পর থেকে মাদকের বিরুদ্ধে বেশকিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তবে যারা মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি,সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে অতপ্রোতভাবে জড়িত তাঁরা এখনো ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছেন। উপরে উল্লেখিত ব্যক্তিদ্বয় এখনো বহাল তবিয়তে মাদক ব্যবসা করে শূন্য থেকে কোটিপতি বনে গেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সময়ের দাবী। মাদকের ছোবলে আমাদের পীঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। যুব সমাজকে রক্ষা করতে হলে এখনি শক্ত হাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। না হলে মাদক মুক্ত সমাজের ওই দায়ভার কে নেবে?
তারা আরো বলেন,সাদ্দাম আকঞ্জি বিগত সময়ে রাজনৈতিক পদ পদবী ব্যবহার করে তৃণমূল নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে কেন্দ্রিয় নেতা তার হাতে অপদস্ত হয়েছে। এমনকি সোমেশ্বরী নদী থেকে বালুর ডাইভারশন জোরপূর্বকভাবে দখল নিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সীমান্ত চোরাচালান থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসার রমারমা বাণিজ্য ও একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন। নামে-বেনামে চাঁদাবাজি ছিল নিত্য নৈমিত্য বাণিজ্য। বিভিন্ন সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী নাজেহাল হয়েছেন হরমেশাই। কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। মুখ খুললেই লাটিয়াল বাহীনি আক্রমণ শুরু করতো,মারধর করা ছিল একরম নেশার মতো। গত ৫ বছরে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি। অর্থ পাচার করে দুবাই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেছেন তিনি। হত্যা মামলা,অস্ত্র মামলা,দ্রুত বিচার আইনে মামলা রয়েছে অসংখ্য। নৌপথে চাঁদাবাজি ছিল ওপেন সিক্রেট। অটো স্টেশন, বাস স্টেশন, বালু মহাল সহ ৬১ ধরণের সীমান্ত চোরাচালানীর নিয়মিত লাইন দিয়ে চলতো তার ব্যবসা। মাদক কারবারী ও সেবনে তার উঠাবসা রয়েছে নিত্যদিনের ব্যাপার। মাদকের আসর বসতো বাড়ীর ছাদে। সেখানে তার সহপাঠীরা আড্ডা দিতো রাতভর। সন্ধ্যা হলেই বিভিন্ন চাঁদাবাজির পয়েন্টের হিসাব আসতো। প্রতিটি পয়েন্টে নিজস্ব বাহিনী সেট করা থাকতো।
লিখিত বক্তব্যে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ বলেন,সাদ্দাম আকঞ্জির একনিষ্ঠ কর্মী সাইফুল ইসলাম সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মাদক সেবনের বেশ ক’টি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই ছবিটি যুব সমাজের মাঝে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। পারিবারিকভাবে খুবই অসচ্ছল ছিল সাইফল ইসলাম। বিগত ৫ বছরে বাড়ীতে তিনতলা ফাউন্ডেশনের আলিশান বাসা তৈরী করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এলাকার মানুষের প্রশ্ন কী এমন ব্যবসা তার রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন। বেশ কয়েকদিন পূর্বে তিনি চুরি মামলায় জেল কেটেছেন। মাদক ব্যবসার একটি সিন্ডিকেট পুরো উপজেলায় রাজত্ব কায়েম করে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন। সাদ্দাম আকঞ্জির প্রধান সহযোগি হিসেবে পরিচিতি রয়েছে তার। এজন্যই কোটি কোটি টাকার মালিক তিনি এমন ধারণা অসংখ্য জনসাধারণের।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয় সাদ্দাম আকঞ্জির অন্যতম সহযোগী দুর্গাপুর ইউনিয়নের সৈয়দ মোড় এলাকার নবী হোসেন ও আগাড় এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে শামীমের মদ্য পানের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। মদ্যপানে যেমন অভ্যস্থ,তেমনি মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ছিলো তাদের হাতে। বেশকিছু দিন আগেই  নবী হোসেন তিনি ভাতের হোটেলে  ও ইট ভাটায় কাজ করতেন বলে জানা গেছে। এখন তিনি কোটিপতি। এই কোটিপতির রহস্য কী জানতে চান এলাকাবাসী। চোরাকারবারী ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতো শামীম মিয়া। তার নামে মাদক মামলা সহ বেশক’টি মামলা রয়েছে। তাদের আইনের আওতায় আনতে দাবী জানান তাদের স্বজনরাও। অসংখ্য ভুক্তভোগী ওইসব ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানান।
এই সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ইবনে মাসুদ, রাকিব রনি, মঈন ইবনে সাঈদ সৌরভ,শামসুল হক সানি সহ অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.