মোঃ মোকাররম হোসাইন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটে কালাই উপজেলায় বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে এক সময় সম্ভ্রান্ত কৃষকের উঠানে উঠানে শোভা পেত ধান রাখার গোলা ঘর ও কৃষি এবং কৃষকের ঐতিহ্যের প্রতীক ধানের গোলা সেটা প্রায় বিলুপ্তির পথে।
একটু জুতওয়ালা কৃষকও এখন আর গরু পালতে চান না। পুকুর থাকলে তা মাটি ভরাট করে নির্মাণ করা হচ্ছে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এখন শহর চলে গেছে গ্রামে। অধিকাংশগ্রামে গড়ে উঠেছে বাজার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। গোলাভর্তি ধান, গোয়ালভরা গরু,পুকুরভরা মাছ এই ছিল আবহমান বাংলার কাব্যিক অভিব্যক্তি। জনশ্রুতি রয়েছে, এক সময় সমাজের নেতৃত্ব নির্ভর করত এই ধানের গোলার ওপর হিসাব কষে। এসব এখন শুধুই কল্পকাহিনী।
এ বিষয়ে উপজেলার সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ আক্তারুজ্জামান বলেন, গোলায় অল্প জায়গায়
অনেক ধান রাখা যেত। তাতে ধান শুকিয়ে রেখে দিলে অনেক দিন ভালো থাকে। তবে সেই ঐতিহ্য হারিয়েও কারোর আফসোস করতে
দেখা যায় না। বরং ছেলে-বউ কিংবা মেয়ে-জামাই চাকুরি করে বলতেই বেশি সম্মানবোধ করেন গ্রামের সেই কৃষক।
কালাই উপজেলার প্রবীন কৃষক মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মন্ডল বলেন,আমি দেখেছি ও বাপ-দাদাদের কাছে শুনেছি,বর্ষার সময়ে কৃষকরা ধান মাড়াই করে গোলায় কিংবা বড় আকারের মাটির তৈরি পাত্রে রাখা হতো ধান। তা শুকনো মৌসুমে বের করে শুকিয়ে বাজারজাতসহ নিজেদের জন্য রাখা হতো। এখন আর এগুলো দেখা যায় না। কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায় বলেন,
সময়ের কাছে ঐতিহ্য হারিয়ে কৃষকের গোলার স্থান দখলে নিয়েছে আধুনিক গুদাম ঘর। তারপরও ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের সহজলভ্য মাধ্যম বাঁশের তৈরি ডোল বা ঘের কিছু না কিছু নজরে পড়ে।বর্তমান প্রজন্ম হয়তো জানবেই না কোন দিন ধান সংরক্ষণ করার জন্য ধানের গোলা নামে কোন জিনিস ছিল।