সিরাজুল ইসলাম আপন, পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার ভাঙ্গুড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য শালিসে অবৈধভাবে পাঁচ লক্ষ্য টাকা জরিমানা করেছে ২ অসহায় দিন মজুরকে এবং জরিমানার টাকা না দিলে গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিয়েছে সালিশ কারোক প্রধানরা। এমন দুঃখজনক ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের ঝবঝবিয়া গ্রামে। গত বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সকাল ১০ ঘটিকায় অষ্টমনিষা ইউনিয়নের বিএনপি’র সভাপতি ইয়াসিন সরকারের সভাপতিত্বে ঝবঝবিয়া গ্রামের ঈদগাহ মাঠে সালিশ করা হয়।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঝবঝবিয়া গ্রামের হযরত মোল্লার ছেলে মো. রিপন মোল্লার মুরগির খামারে নুরুজ্জামান নামের এক কর্মচারী ছিল। সে প্রায় এক মাস পূর্বে এক বস্তা মুরগির ফিট ওই গ্রামের জাকির নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে। জাকির বিষয়টি বুঝতে পেরে খামার মালিক রিপন মোল্লাকে বলে ফেরত দেয়। এ সময় খাবার মালিক রিপন মোল্লা সুজুক বুঝে তার কর্মচারী নুরুজ্জামানসহ জাকিরের বিরুদ্ধে গ্রামে সালিশ দেয়। তখন ঐ গ্রামের কিছু বিএনপি’র নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ২ অসহায় দিন মজুরকে অবৈধভাবে পাঁচ লক্ষ্য টাকা জরিমানা করেছে এবং জরিমানার টাকা না দিলে গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিয়েছে।
আরোও জানা যায়, সালিশে বাদি রিপন মোল্লা প্রভাবশালী ও অর্থবিত্ত হওয়ায় সালিশে আলেপ আলী, আব্দুস সালাম, আজিজুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, হাবিবুর রহমান, মন্টু সরদার, আব্দুর রহিম, আফজাল হোসেন, আব্দুল বারি, সাবেক মেম্বার আলমসহ অনেকেই সংঘবদ্ধভাবে ওই বিবাদী নুরুজ্জামান ও জাকির হোসেনকে লাঠিপেটা সহ মারধরের ও গ্রাম ছাড়ার ভয়-ভীতি দেখিয়ে ঐ সালিশে নুরুজ্জামান কে ৩ লক্ষ্য দশ হাজার টাকা ও জাকির কে এক লক্ষ্য ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরে সাদা কাগজে দুজনের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয় এবং ওই সালিশে নুরুজ্জামানের কাছ থেকে নগদ এক লক্ষ্য টাকা এবং জাকির হোসেনের কাছ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা আদায় করেন। এ সময় জরিমানার বাকি টাকা সাত দিনের মধ্যে না দিলে গ্রাম ছাড়া করবে বলে জানায় সালিশ কারকরা।
এ দিকে সালিশে নগদ আদায় কৃত এক লক্ষ্য ৪০ হাজার টাকা এখনো পায়নি বিবাদী রিপন মোল্লা।
অসহায় দিন মুজুর নরুজ্জামান হোসেন ও জাকির মিয়া তাদের উপর অন্যায় ভাবে বিচারের রায় চাপিয়ে দেওয়ায় ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা ইনচার্জ ও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে সালিশের সভাপতি ইয়াসিন আলী সরকার বলেন, নরুজ্জামান মুরগির খাদ্য ১ বস্তা বিক্রি করেছে তার প্রমাণ মিলেছে কিন্তু জাকিরের অপরাধ প্রমান হয় নাই। পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে জরিমানা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক প্রধান বলেন সালিশে যে রায় করা হয়ে ছে তা সম্পুর্ণ অন্যায় ভাবে করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান বাকি বিল্লাহ বলেন, এক বস্তা চুরির দায়ে এত টাকা জরিমানা সম্পুর্ণ অন্যায় ভাবে করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, গ্রাম্য শালিসে এত টাকা জরিমানা করার ক্ষমতা কারো নেই। সুতরাং বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।