শামীম আখতার (নিজস্ব প্রতিবেদক) মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ বলেছেন, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্য বাংলা সাহিত্যকে একটি উৎকৃষ্ট পর্যায় দেখতে পেয়েছি। তিনি সাহিত্যে প্রথম হিসেবে অনেক কিছুই রচনা করেছেন। তাঁর জন্য সাগরদাঁড়ি, কেশবপুর তথা যশোরবাসী ধন্য, এমনকি বাংলাদেশও ধন্য। গত বৃহস্পতিবার রাতে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলার সমাপনী দিনে মধুমঞ্চে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি সাগরদাঁড়িতে শৈশব কাটিয়েছেন। আমি কবির জন্মস্থানে এসে সমৃদ্ধ হয়েছি এবং হাজার হাজার মানুষের প্রাণের আবেগ দেখতে পেয়েছি।
অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া, যশোর জেলার পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ, যশোর সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাডভোকেট গাজী এনামুল হক, যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান, যশোরের নওয়াপাড়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক কাজী শওকত শাহী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সেন্টাল প্রতিনিধি নুসরাত তাবাসসুম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলার আহবায়ক রাশেদ খান, যুগ্ন আহবায়ক বি এম আকাশ, যুগ্ন সদস্য সচিব সাঈদ সান ও কেশবপুরের প্রতিনিধি সম্রাট হোসেন।
আলোচনা সভা শেষে মধুমঞ্চে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গত ২৪ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা শুরু হয়। গত ৩০ জানুয়ারি মধুমেলার সমাপনী দিনেও কপোতাক্ষ নদ পাড়সহ গমেলার মাঠে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। এবছর মধুমেলা ঘিরে এলাকাবাসী ও মধুপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করেছে।
উল্লেখ্য, বাংলা সাহিত্যের ক্ষনজন্মা মহাপুরুষ, অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক, আধুনিক বাংলা কাব্যের রূপকার মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ঐতিহ্যবাহী যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। জমিদার পিতা রাজনারায়ন দত্ত এবং মাতা জাহ্নবী দেবী। মাইকেল মধুসূদন দত্ত ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ জুন কলকাতার আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে কপর্দকহীন (অর্থাভাবে) অবস্থায় মাত্র ৪৯ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।