খন্দকার নজরুল ইসলাম মিলন মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরা সদর উপজেলার পৌরসভার শিমুলিয়া এলাকায় আপন দুই ভাইয়ের জমি জোরপূর্বক দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার ১০ জুলাই শিমুলিয়া গ্রামের মৃত মোকছেদ বিশ্বাসের ছেলে আতিয়ার রহমান বিশ্বাস ও ওলিয়ার রহমান বিশ্বাস এই জমির মালিক।
ওলিয়ার রহমান বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘ ৫২ বছর ধরে শিমুলিয়া মৌজার ১৩৯ নং খতিয়ানের ২৩৮ দাগের ৩১ শতক এবং ৭৩৩ দাগের ৪১ শতক এই মাঠের ধানী জমিটা আমি ভোগ দখলে আছি। ভিটাসাইর গ্রামের মৃত ফুলমিয়ার পুত্র আবুল কালাম আজাদ সহ তার ভাইরা একটা দলিল নিয়ে মাগুরা জজ কোর্টে দেওয়ানী মামলা দায়ের করে। এরপর জমিটার মামলা চলার সময় জজ সাহেব সন্দেহমূলক সূত্রের কারণে দলিল আটকিয়ে দেয়। এখন উক্ত জমিতে জোর করে অবৈধভাবে সাইনবোর্ড টানিয়েছে ও টিনের ছ্যাপড়া দিয়ে ঘর তুলে জায়গা দখল করেছে যেটা সম্পূর্ণ অরাজকতা ও জুলুমের শামিল। এই জমির হাল পরচা, ফাইনাল পরচা, দলিল ও রেকর্ড সব আমার নামে। ফুল মিয়ার ছেলে আবুল কালাম আজাদ খারিজের বিষয়ে রেকর্ড সূত্রে মামলা করে ছিলো কিন্তু কিছু দিন পর সেই মামলা খারিজ হয়ে যায়।
শিমুলীয়া গ্রামের ওলিয়ার আলী ও ছালমা বেগম বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে দেখছি এই জমি ওলিয়ার রহমান এর একসময় আমিও এই জমিতে চাষাবাদ করতাম।
ওলিয়ার রহমানের কন্যা কাকলী খাতুনের শাশুড়ী শাহানাজ পারভীন (৪৫) জানান, ভিটেসাইর গ্রামের আবুল কালাম আজাদ, চঞ্চল সহ আরও ৪-৫ জন লোকজন এসে নির্মানাধীন বাড়িতে গেটে তালা মেরে দেয়।
মাগুরা সদর থানা জিডি নং- ১৫৬২ সূত্রে জানা যায় গত ২৪ জুন ২.৩০ টার সময় ভিটাসাইর গ্রামের মৃত ফুল মিয়া মৃধার পুত্র নবাব আলী মৃধা (৪০), আবুল কালাম আজাদ (৩২), তৈয়ব আলী মৃধা (৪২) ও উবাইদুর রহমান মৃধা (৪৬) শিমুলিয়া গ্রামের ৩৭ নং খতিয়ানের ৪৪২/৪৮৭ নং দাগের ৪৫ শতক জমির উপর বাড়ি নির্মাণ চলাকালীন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। বাড়ি নির্মাধীন সময়ে বাড়ীর গেটে তালা মেরে নির্মাণ শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে বের করে দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। এরপর খবর শুনে মাগুরা সদর থানার পুলিশ সদস্যরা এসে তালা ভেঙ্গে দেয়।
আতিয়ার রহমান বিশ্বাস জানান, আমার মেয়ে সোনিয়া খাতুনের বাড়ির সামনে হঠাৎ করে আবুল কালাম আজাদ এসে বলে এখানে আমি জমি পায় বলে রেকর্ড সংক্রান্ত মামলা করেছে। তারপর তারা কাকলীর বাড়ির গেইট এ জোর করে তালা মেরে দিয়েছিলো।
আতিয়ার রহমান বিশ্বাস জানান, ওলিয়ার রহমান বিশ্বাসের নামে ৩১ শতক জমি ক্রয় করা হয় মৃত আপ্তাবউদ্দিন মৃধা এর কাছে থেকে এবং আমার ও ওলিয়ার রহমান বিশ্বাস দুই জনের নামের ৪৫ শতক জমি ক্রয় করা হয় মৃত ফুল মিয়া মৃধার কাছে থেকে। আর কোর্টে আপাতত কোন মামলা নেই, মামলা গুলো সব খারিজ হয়ে গেছে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, এস এ বরাবর আমরা এইসব জমির মালিক। এই জমি আমার দাদা আপ্তাবউদ্দিন মৃধা তার ছেলে ফুল মিয়া মৃধাকে দেয় সেই সূত্র ধরে এখন আমরা ওয়ারিশ হিসেবে দখল সূত্র চাচ্ছি এবং রেকর্ডের মামলা করেছি। যারা এখন জমি ভোগ দখল করেছে তারা মুলত জমি ক্রয় করেছে অন্য লোকের কাছে থেকে আমার বাবার কাছে থেকে নয়। যদি আমার বাবার কাছে থেকে জমি ক্রয় করে থাকে তবে সেরকম কোন কাগজপত্র দেখাতে পারলে, তাহলে ঐ জমির সীমানায় কখনও যাবো না। মামলায় যে রায় হয় সেটাই মাথা পেতে মেনে নিবো। মাঠের জমিতে ও বসতবাড়ির সামনে সাইনবোর্ড স্থাপন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের জমি সেজন্য চিহ্ন প্রতীক হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে। আজাদ বলেন, আইনের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল মহামান্য আদালত যেটা ফয়সালা করবে আমি সেটাই মেনে নিবো।