সিংড়ায় সেবা মেডিকেল কমপ্লেক্স এর পরিচালকের অপকর্মের শেষ নেই (পর্ব-০২)

অনুসন্ধানী প্রতিবেদক: নটোরের সিংড়া সদরে অবস্থিত সেবা মেডিকেল কমপ্লেক্স নামের একটি ক্লিনিকের পরিচালকের অপকর্মের যেন শেষ নেই। সম্প্রতি অনুসন্ধানে ক্লিনিক পরিচালক হারুন অর রশিদের সুন্দর চেহারার আড়ালে লুকিয়ে থাকা কুৎসিত চেহারা ভেষে উঠেছে। বেরিয়ে এসেছে থলের বিড়াল।

জানা যায়, ওই ক্লিনিকে পুরুষের চেয়ে নারী কর্মচারীর সংখ্যায় বেশি। গত ২ বছর আগে সেবা মেডিকেল কমপ্লেক্সে মাত্র ৪ হাজার টাকা বেতনে রিসিপশনিষ্ট পদে চকরি শুরু করেন উপজেলার কতুয়াবাড়ী গ্রামের আব্দুর রহিমের মেয়ে রুমা খাতুন (৩০)। দুই বছরে ওই প্রতিষ্ঠানের অন্য কর্মচারীর বেতন না বাড়ানো হলেও অজানা কারনে তার বেতন বেড়ে হয়েছে দ্বীগুন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ক্লিনিকের এক কর্মচারী জানান, রুমা রিসিপশনিষ্ট পদে যেগদান করলেও তিনি রিসিপশনিষ্ট কাম ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিদিনের ডিউটি শেষে পরিচালক হারুন অর রশিদ এর কক্ষে হিসাব দিতে গেলে পরিচালক কক্ষের দরজা বন্ধ করে তাকে জোরপূর্বক রোগীর বেডে শুয়ায়ে সম্ভ্রম হানি করে এবং বেতন বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দেয়। কাঁদতে কাঁদতে অফিস থেকে বের রিসিপশনে এসে রুমা তার সহকর্মীদের কাছে বিষয়টি জানায়।

স্থানীয়রা জানান, গত ডিসেম্বর মাসে ওই ক্লিনিকে কর্মরত (ছদ্দো নাম) সোনিয়া খাতুন নামের এক সুন্দরী তরুণী রহস্যজনক কারণে তার নিজ বাড়িতে রশিতে ঝুলে আত্নহত্যা করে।

সম্প্রতি ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক ব্যাক্তির দেওয়া তথ্য সুত্রে জানা যায়, সেবা ক্লিনিকে চাকরিতে প্রথমে ৪ হাজার টাকা বেতন ধরা হয়। চাকরিতে যোগদানের পর পরই শুরু হয় হারুনের লালসা পুরনের অভিযান। প্রথম দিকে দিতে থাকে কুপ্রস্তাব। রাজি না হলে থাকে না চাকরি। কেউ কেউ আবার পেটের দায়ে চাকরি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তার প্রস্তাবে রাজিও হয়। হারুনের কাছে নারীদের অমূল্য সম্পদ (সতিত্ব) বলি দিলেই বাড়ে বেতন। নারী কর্মচারীর অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে হারুন মেতে উঠে অবৈধ রঙ্গলীলায়। গত ১ মাস আগে এই প্রতিষ্ঠানে সদ্য যোগদানকৃত ২ জন সুন্দরী অবিবাহিত ডিপ্লোমা নার্স মাত্র ১৫ দিন চাকরি করার পর হারুনের অত্যাচারে টিকতে না পেরে বাধ্য হয় চাকরি ছাড়তে।

যোগদানের মাত্র ৪৫ দিন পরে ওই প্রতিষ্ঠান পরিচালকের কুকীর্তি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর ক্লিনিকের অভ্যন্তরীন তথ্য পাচারকারী সন্দেহে সুবর্ণ নামের এক নারী কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এছাড়াও সেবা মেডিকেল কমপ্লেক্সে নির্ভর যোগ্য ডাক্তার না থাকায় রোগী দেখে প্রেসক্রিপশন সহ অপারেশনও করেন পরিবচালক নিজে। ভুল চিকিৎসা বা অপচিকিৎসায় রুগীর মৃত্যুর পর গোপনে রাতের আধারে স্বজনদের সাথে অর্থদন্ড দিয়ে সমাধান করেন অত্যন্ত ধুরন্ধর ওই পরিচালক হারুন।

মুঠোফোনে জানতে চাইলে সেবা মেডিকেল কমপ্লেক্স এর পরিচালক হারুন অর রশিদ অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

এলাকাবাসীদের প্রশ্ন ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, ক্লিনিকের রেজিষ্ট্রেশনের মেয়াদ উত্তির্ন, পরিচালকের অপকর্মে নারী কর্মচারীর মৃত্যু, অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে নারী কর্মচারীদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক সহ হাজারো মানুষের অসংখ্য অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কি ভাবে চলতে পারে ওই ক্লিনিক?

রোগী পেতে সুন্দরী নারী কর্মচারীদের লেলিয়ে দেয়া হয়, রোগী আনতে মিষ্টি কথা বলতে গিয়ে হতে হয় ভোগের শিকার – এ সকল বিষয়ে লোমহর্ষক তথ্যে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আগামী পর্বে (পর্ব-০৩), সাথে-ই থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.