সীতাকুণ্ডে সীমা অক্সিজেন কারখানার মালিক-কর্মকর্তাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুলস্হ সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্ট কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে ঘটনার নিহত কাদেরের পরিবার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

দায়িত্বে অবহেলা ও বিস্ফোরণ পরবর্তীতে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়। এতে কারখানার মালিক-কর্মকর্তাসহ ১৬ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে কারখানাটিতে গত শনিবার বিকালে বিস্ফোরণে নিহত শ্রমিক আবদুল কাদেরের স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেছেন। সোমবার দিবাগত রাত ১২ টার পর থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।
বিষয়টির প্রতিনিধি কে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ।
মামলায় অভিযুক্ত আসামীরা হলেন,সীমা অক্সিজেন কারখানার এমডি মো.মামুন উদ্দিন (৫৫) ,পরিচালক পারভেজ হোসেন সান্টু (৪৮),আশরাফ উদ্দিন বাপ্পি (৪২),কারখানার প্লান্ট ব্যবস্থাপক আব্দুল আলীম (৪৫),প্লান্ট অপারেটর ইনচার্জ
সামসুজ্জামান শিকদার (৬২),প্লান্ট অপারেটর খুরশিদ আলম (৫০),সেলিম জাহান (৫৮),নির্বাহী পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন,প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া,সামিউল,শান্তনু রায়,সুপার ভাইজার ইদ্রিস আলী,সানা উল্লাহ,সিরাজ উদ-দৌলা,রাকিবুল, রাজীব। এছাড়াও মামলায় এদের সুনির্দিষ্ট নাম উল্লেখসহ সহ সীমা অক্সিজেন প্লান্টের দায়িত্বে অবহেলাকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ প্রতিনিধি কে বলেন,বিস্ফোরণের বিধ্বস্ত ওই কারখানার প্লান্টে অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখার অনুমোদন ছিলো। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ সেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডারের পাশাপাশি ব্যাপক পরিমাণে মজুদ করে রেখেছিল অননুমোদিত কার্বন ডাই অক্সাইড ও নাইট্রোজেন সিলিন্ডার। অনিয়মের এখানেই শেষ নয়,কারখানাটিতে ছিল না অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কারখানা চালুর পর কখনো হয়নি অগ্নিনির্বাপণ মহড়া। পাশাপাশি কারখানাটির লাইসেন্স আছে কিনা তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে।
ওসি আরও জানান,কারখানায় প্রাথমিক তদন্ত কাজ চলাকালীন তারা গাফিলতি ও দায়িত্বে অবহেলার সত্যতা পেয়েছেন। মামলায় অভিযুক্ত তিন মালিকসহ সংশ্লিষ্টরা প্রতিষ্ঠানে যথাযথ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বিপদজনকভাবে গ্যাস উৎপাদন, ভর্তিসহ সরবরাহ এবং নিয়মিত পরীক্ষা পূর্বক রক্ষনাবেক্ষন ব্যবস্থা না রাখায় এ দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে বিষ্ফোরণে সাতজনের প্রাণহানিসহ ৩০ জন মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নিহত কারখানা শ্রমিক আবদুল কাদেরের স্ত্রী রকেয়া বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ মামলাটি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।
সীতাকুণ্ড নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহদাৎ হোসেন প্রতিনিধি কে বলেন, সীতাকুণ্ড সকল কারখানার মালিকদের কে জেলা প্রশাসক মহোদয় ডেকে সতর্ক করেছেন,কারখানাগুলোতে অগ্নি নিবারণের ব্যবস্হা না থাকলে লাইসেন্স বাতিল ও জড়িমানা করা হবে,যান্ত্রিক ক্রুটি যাহাতে না থাকে সেই বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.