মোঃ মোকাররম হোসাইন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ ১\৬\২৩ জয়পুরহাট-বগুড়া সড়কের অসমাপ্ত উন্নয়ন কাজের অগ্রগতি নেই। কাজ অসমাপ্ত রাখায় সড়কটির হিচমি থেকে কোমরগ্রাম পর্যন্ত ইট বিছানো এক কিলোমিটার অংশের ইট জায়গায় জায়গায় ভেঙ্গে সড়কে ছোট বড় গর্ত হয়েছে। এতে তিন বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারি হাজার হাজার মানুষ। চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটলেও বর্ষার আগেই কাজ শুরুর আশা সড়ক বিভাগের।
জেলা সড়ক ও জনপথ সূত্রে তথ্যমতে, ২০১৮ সালের ২৭ জুন জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের মাটির ঘর থেকে জয়পুরহাট শহরের রেলগেট পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার অংশ ১৮ ফুট থেকে ২৪ ফুট প্রশস্ত করার কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নাভানা কনস্ট্রাকশন। এ কাজে বরাদ্দ হয় ৪৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
কিন্তু, প্রতিষ্ঠানটি সড়কের মাটির ঘর থেকে বানিয়াপাড়া পর্যন্ত মাত্র তিন কিলোমিটার অংশ প্রশস্ত ও আংশিক কার্পেটিং করে। একই সঙ্গে সড়কটির কোমরগ্রাম থেকে হিচমি পর্যন্ত এক কিলোমিটার অংশের পুরনো কার্পেটিং তুলে কাজ ফেলে রেখে চলে যায় নাভানা। এ অবস্থায় ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রয়ারি সাড়ে তিন কোটি টাকা জরিমানা করে সড়ক বিভাগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে। পরে আবার দরপত্রের মাধ্যমে জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণে যৌথভাবে অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব পায় রিলায়েবল বিল্ডার্স ও হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে মোট বরাদ্দ হয় ৫১ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, কাজটি দ্রত সম্পন্ন করতে ২০২২ সালের ২০ জুলাই কার্যাদেশও দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী চলতি জুন মাসে কাজটি শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু শেষ করা তো দূরের কথা, কাজ এখনো শুরুই হয়নি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অসমাপ্ত সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়কটির কোমরগ্রাম থেকে হিচমি পর্যন্ত এক কিলোমিটার অংশে জনস্বার্থে চলাচলের জন্য ইট বিছিয়ে দিয়েছে সড়ক বিভাগ। এরপরও অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় সড়কটিতে প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে যানবাহন। দুর্ঘটনাও ঘটছে। এলাকার কৃষিজীবীরা তাঁদের কৃষিপণ্য পরিবহন করতে পারছেন না। যানবাহনের অভাবে সময়মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও পৌঁছতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। ফলে সাধারণ মানুষকে পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এ আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার পাশাপাশি নওগাঁর ধামইরহাট এবং দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ পথের বাস-ট্রাকসহ নানা যানবাহন চলাচল করে। হিলি স্থলবন্দর থেকে পণ্যবাহী ট্রাক দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। সড়ক বেহাল হওয়ার কারণে চালকরা যানবাহন চালাতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন। এই টুকু রাস্তা পার হতে মনে হয় ভেতরের অঙ্গ গুলো খুলে যাচ্ছে। চার বছরের বেশি সময় ধরে এ দুর্ভোগ চললেও কারো মাথা ব্যথা নেই।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সাজ্জাদ কাদির খান বলেন,জয়পুরহাট শহরের আড়াই কিলোমিটার অংশে ড্রেন নির্মাণের কাজ চলমান থাকায় সময়মত কাজটি শুরু করা যায় নি। তবে খুব দ্রত সময়ের মধ্যে কাজটি শুরু করার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আশা করছি বর্ষা শুরুর আগেই সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সৌম্য তালুকদার বলেন, বগুড়া-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের অসমাপ্ত কাজ আগামী বর্ষার আগেই শুরু করা হবে। কাজটি শেষ করার নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলেও সময় বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যেই কাজটি সম্পন্ন হবে।