শৈহ্লাচিং মার্মা রুমা প্রতিনিধি ( বান্দরবান)ঃ নিষেধাক্কা ৩৩ মাসের মাথায় বান্দরবানের রুমায় সীমিত পরিসরে পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণের জন্য খোলা হচ্ছে।
আসন্ন এই ঈদের ছুটির মাঝখানে পর্যটকের ভ্রমণ চালু করা হবে।
তখন পর্যটকেরা রুমার পর্যটন স্পটগুলো ঘুরতে পারবে। তবে রুমা উপজেলায় দর্শনীয় স্থান সকল পর্যটন স্পট গুলো নয়।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১০টায় পর্যটন বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ৩৬বীর রুমা জোনের উপ অধিনায়ক মেজর মেহেদী সরকার এ কথা জানিয়েছেন।
রুমা সেনা জোন সদরে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় রুমা সাঙ্গু সরকারি কলেজের প্রভাষক সুইপ্রুচিং মারমা, রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিরা বম, রুমা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অংসিনু মার্মা, রুমা অগ্রবংশ অনাথালয়ের পরিচালক উঃ নাইন্দিয়া ভিক্ষু, বম সোসিয়াল কাউন্সিল অব বাংলাদেশ (বিএসসি-বি) সাবেক সভাপতি লালদুহসাং বম, রুমা বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ খলিলুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি, রুমা থানা (ওসি)র প্রতিনিধি, সাংবাদিক, টুরিস্ট গাইড এর প্রতিনিধি, জিপ গাড়ি মালিক সমিতির প্রতিনিধি, মোটরসাইকেল সমিতির প্রতিনিধি ও বিভিন্ন রিসোর্টের প্রতিনিধি ও পাড়া প্রধান কারবারি সহ স্থানীয় বাসিন্দারা এই মতবিনিময় সভায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
মতবিনিময় সভায় রুমা জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী সরকার বলেছেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর স্থানীয়দের দাবির প্রতি বিবেচনা রেখে পর্যটন স্পটগুলো মধ্য থেকে সীমিত পরিসরে পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খোলা নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আসন্ন এই ঈদের মাঝখানের সময় থেকে পর্যটকেরা যাতে ঘুরে বেড়াতে পারে, সেই বিষয়টি চিন্তাভাবনা করা হয়েছে।
তবে রুমা উপজেলায় সব পর্যটন স্পটে এখন ঘুরে বেড়ানোর কোন সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পর্যটকেরা রুমা উপজেলায় দর্শনীয় পর্যটন স্পট বগালেক পর্যন্ত যেতে পারবেন। কেউ চাইলে বগালেকের রিসোর্টে গুলোতে রাত্রি যাপনও করতে পারেন।
তাছাড়া রুমা সদরে অবস্থিত এবং তিন পার্বত্য জেলার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম হিসেবে পরিচিত – মুনলাই পাড়ার বেস্ট ক্যাম্প ও পাড়ার রিসোর্ট গুলোতে রাত্রি যাপন করতে পারবেন- বাইরে থেকে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা।
রুমা জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী সরকার আরো বলেন, এলাকায় স্থানীয়দেরকে শান্তি শৃঙ্খলার দায়িত্ব নিতে হবে । পর্যটকের আগমণে, সেসব এলাকায় ২০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, না ঘটলে উপজেলায় সব পর্যটন স্পটগুলো পর্যায়ক্রমে খুলে দেয়া হবে। তাই পর্যটকের নিরাপত্তার ব্যাপারে বিশেষ করে গাড়ি ড্রাইভার, মোটরবাইক ড্রাইভার ও গাইডের সতর্ক থাকতে হবে উল্লেখ করে মেজর মেহেদী সরকার বলেন, বাইরে থেকে আসা পর্যটকেরা প্রবেশ পথে তাদের নিরাপত্তার জন্য একবার মাত্র রুমা জোনের চেকপোস্টে নাম ও কাগজপত্র নিবন্ধন করে নিতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জঙ্গি ও কেএনএফ এর বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযানকালে ২০২২ সালে ১৭অক্টোবর রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় পর্যটন স্থানগুলোতে সকল পর্যটকের ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন।
তখন থেকে অনিও দুই উপজেলার পর্যটক এর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও রুমা উপজেলায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়নি।
দীর্ঘ ৩৩ মাসের পর সীমিত পরিসরে হলেও পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকের ভ্রমণ চালু করার উদ্যোগ নিলেন সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসন, এ কথা উল্লেখ করে পর্যটকের পথপ্রদর্শক মোঃ আলমগীর বলেন, সীমিত পরিসরে হলেও রুমা উপজেলায় পর্যটকের শুভাগমন এর ব্যাবস্থা চালু করায় সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।