সিরাজুল ইসলাম আপন, চাটমোহর-ভাঙ্গুরা(পাবনা): ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এবার পাবনার চাটমোহর উপজেলায় ফলাফলে দেখা গেছে ব্যাপক বৈষম্য ও মানের ঘাটতি। উপজেলার দুইটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষার্থীও পাস করতে পারেনি, যা অভিভাবক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে গভীর হতাশার জন্ম দিয়েছে। চাটমোহর উপজেলার সাধারণ, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা (বিএম) ও আলিম এই তিনটি শাখায় মোট ২,১৫৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।
ফলাফলে দেখা গেছে, সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে বিএম শাখা, যেখানে পাসের হার মাত্র ১৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। উপজেলার সাধারণ শিক্ষা শাখার ৯টি কলেজে মোট ১,২৫৮ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ৫০১ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। পাসের হার ৩৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা (বিএম) শাখায় ৯টি কলেজে পরীক্ষার্থী ছিল ৭৪৮ জন। এর মধ্যে পাস করেছে মাত্র ১৫৩ জন। ফেল করেছে ৫৯৫ জন। পাসের হার মাত্র ১৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।
অন্যদিকে, আলিম শাখায় ৫টি মাদ্রাসা থেকে অংশ নেয় ১৪৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১০৬ জন পাস করেছে, পাসের হার ৭২ দশমিক ১০ শতাংশ যা তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো।
তবে উপজেলার চাটমোহর সরকারি কলেজের বিএম শাখা এবং চলনবিল আদর্শ কলেজে এ বছর কোনো শিক্ষার্থীই পাস করেনি। পুরোপুরি ব্যর্থ হওয়া এই দুটি প্রতিষ্ঠানের অবস্থা স্থানীয়ভাবে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে।
ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে অনেক দুর্বল হওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে। তারা মনে করছেন, শুধু শিক্ষার্থী নয়, প্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতা ও মনিটরিং ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী না হলে ভবিষ্যতেও উন্নতি আশা করা কঠিন। তারা আরো বলছেন, পাঠদানের গুণগত মান বাড়ানো, শিক্ষকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার্থীদের নিয়মিত অনুপ্রেরণা দেওয়া ছাড়া এই অবস্থার উত্তরণ সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শফিউল ইসলাম বলেন, “ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কিছু প্রতিষ্ঠানে পাঠদানে ঘাটতি রয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনীহাও লক্ষ্য করা গেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ওপর বিশেষ নজরদারি চালানো হবে। পরবর্তী বছরের জন্য একটি বিশেষ কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে, যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”