বরগুনায় হিন্দু মেয়ে মুসলমান ছেলের সাথে বিয়ে করায় অন্যকে ফাঁসাতে বাবার মিথ্যা মামলা

সাইফুল্লাহ নাসির, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
হিন্দু মেয়ে মুসলমান ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়ে ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ে করাকে কেন্দ্র করে রাজনীতির দুজন একই পদ প্রত্যাশি হওয়ায় এক গ্রুপ প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মেয়ের বাবার মিথ্যা অপহরন মামলা দায়ের।
ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের কুমড়াখালী গ্রামে। স্বদেশ কুমার রায় সুব্রতর মেয়ে দিপা রায় একই গ্রামের বাসিন্দা আ: করিম মাওলানার ছেলে আবু সালেহ এর সাথে পালিয়ে গিয়ে বিগত ২১জুন নোটারী করে দিপা রায় হিন্দু ধর্ম থেকে মুসলমান হয়ে আয়েশা আক্তার নাম রেখে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেনমোহরে বিবাহে বন্ধনে আবদ্ধ হন।
২১ জুন সকালে দিপা রায়ের বাবা স্বদেশ কুমার রায় সুব্রত বেতাগী থানায় আবু সালেহ সহ ৫ জনের নামে অভিযোগ দিলে বেতাগী থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) পুলিশ পরিদর্শক ও অন্যান্য পুলিশ সদস্য নিয়ে কুমড়াখালীর বাজারে ঘটনার পরিদর্শনে আসেন এবং যাদের নামে অভিযোগ দিয়েছে তাদের সাথে কথা বলেন ওসিসহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্যরা। মুহূর্তের মধ্যেই ওসিসহ একাধিক পুলিশ সদস্যর সামনে মেয়ের বাবা স্বদেশ কুমার রায় সুব্রত তার বাহিনীর লোকজন নিয়ে প্রভাষক মিজানুর রহমানের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাকে ধরে ব্যাপক মারধর করেন।
এ ব্যাপারে মিজানুর রহমান বলেন,আমি দীর্ঘ ৩০ বছর কাজিরাবাদ ইউনিয়ন বিএনপি’র রাজনীতিতে সক্রিয়। ইউনিয়ন যবুদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পরপর ৪ বার ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছি।
তিনি আরও বলেন,আমি সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন কমিটির সভাপতি আব্দুল বারেক মোল্লা আওয়ামীলের চাপে পরে আওয়ামিলীগ যোগ দিয়ে নিজেকে হয়রানিমুক্ত করেছেন। কিন্তু আমি তখনও চাপের মুখে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে দলীয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে গিয়ে শারীরিক, সামাজিক, মানুষিক নানা লাঞ্চনা ও অপমান সহ্য করে কাজিরাবাদ ইউনিয়নে বিএনপিকে এখনো টিকিয়ে রেখেছি এবং বর্তমানে আমি কাজিরাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির পদ প্রত্যাশী। আর স্বদেশ কুমার রায় সুব্রতও ঐ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পদ প্রত্যাশিত। এই ঘটনার ২ দিন আগে বিএনপির একটি কর্মীসভায় দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে চাঁদাবাজ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সতর্কতামূলক বক্তৃতা সহ তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মীদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বিভিন্ন কথাবার্তা বলেন। তার কিছু কিছু কথা সুব্রত বাবুর রাজনৈতিক কর্মের সাথে মিলে যাওয়ার কারণে মেয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কাজে লাগিয়ে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে এই অতর্কিত হামলা চালিয়ে উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন এই স্বদেশ কুমার রায় সুব্রত।
প্রবাষক মিজানুর রহমানেরকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে  মারধর করায় এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে মিজানুর রহমান এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় স্বদেশ কুমার রায় সুব্রতেট সাথে ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানায়, স্বদেশ কুমার রায় সুব্রত একটি অভিযোগ করেন সেজন্য আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে যাই। ওই মুহূর্তে বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমরা একটি দোকানে বসে থাকি। কিছু সময়ের মধ্যেই লোকজনের হৈ হুল্লোর শুনে সাথে থাকা তদন্ত অসিকে পাঠিয়ে শুনি মিজানুর রহমানকে মারধর করেছে। দুই পক্ষকে শান্ত করে আমরা চলে আসি পরে বিকেলে সুব্রত ৫ জনকে আসামী করে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। তাছাড়া মিজানুর রহমান যদি কোন অভিযোগ করেন আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *