বরেন্দ্র অঞ্চলে নিষিদ্ধ ইউক্যালিপটাসের বাগান বৃদ্ধি পায় পরিবেশ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে পরিবেশবিদরা

মোহাম্মদ আককাস আলী প্রতিনিধি নওগাঁ মহাদেবপুর :  বরেন্দ্র অঞ্চলে নিষিদ্ধ ইউক্যালিপটাসের বাগান বৃদ্ধি পায় পরিবেশ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে পরিবেশবিদরা।
দ্রুত বৃদ্ধি ও কম পরিচর্যায় বড় হওয়ার কারণে কৃষক ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে এই গাছ চাষে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। নার্সারিগুলোতেও রয়েছে এ গাছের চারার ব্যাপক চাহিদা। প্রকারভেদে প্রতিটি চারা বিক্রি হয়ে থাকে ১০ থেকে ৫০ টাকায়।
ইতোমধ্যে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র সংরক্ষেণের স্বার্থে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছের চারা উৎপাদন, রোপণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত ১৫ মে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারী করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউক্যালিপটাসের চারা রোপণের ৪ থেকে ৫ বছরের মধ্যেই গাছ বড় হয়ে যায়। বাজারে চাহিদা থাকায় কাঠ হিসেবে বিক্রি করেও ভালো অর্থ আসে। এসব গাছ সাধারণত রাস্তার ধার, জমির আইল, নদীর পাড়সহ পতিত জমিতে ফলজ-বনজ গাছের বিকল্প হিসেবে রোপণ করা হচ্ছে।
পরিবেশবিদরা বলছেন, ইউক্যালিপটাস একধরনের একাকী বেড়ে ওঠা উদ্ভিদ, যা স্থানীয় প্রজাতির গাছ ও প্রাণীর সঙ্গে সহাবস্থান করতে পারে না। তাছাড়া এর শিকড় মাটির নিচের পানির স্তর দ্রুত নিঃশেষ করে ফেলে। পানির এই অতিরিক্ত ব্যবহার এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্বল্পতা তৈরি করতে পারে। বর্তমানে কোনও নিয়ন্ত্রক নীতি না থাকায় যত্রতত্র এই গাছ রোপণ করা হচ্ছে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশ ও কৃষির ওপর নেতিবাচক প্রভাব আরও প্রকট হতে পারে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বন পুনরুদ্ধারের চিন্তা থেকে সামাজিক বনায়নকে প্রাধান্য দিয়ে দেশে নান কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৭০ সালের মাঝামাঝি সময়ে বিভিন্ন উন্নয়নমুলক প্রকল্পের মাধ্যমে ইউক্যালিপটাসসহ বেশকিছু বিদেশি প্রজাতির দ্রুত বর্ধনশীল গাছ এ দেশে আসে। পরবর্তীতে উপজেলা পর্যায়ে ‘সামাজিক বনায়ন’ কর্মসূচি এবং সরকারের বনবিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইউক্যালিপটাস ও অন্যান্য বিদেশি গাছ ব্যাপকভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় প্রথম এই গাছের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *