বেনাপোল স্থল বন্দর প্যাচেঞ্জার টার্মিনালের মধ্যে যাত্রীদের বিজিবি কর্তৃক তাড়িয়ে বের করার অভিযোগ

আনিসুর রহমান প্রতিনিধি বেনাপোল: বেনাপোল চেকপোষ্টে পাসপোর্ট যাত্রী কমে গেলেও হয়রানি কমে নাই। চেকপোষ্টের কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশন এর আনুষ্ঠানিকতা নিয়ম মাফিক  শেষ হওয়ার পর যাত্রীদের শুরু হয় হয়রানির পালা।

তবে বর্হিগমন যাত্রী নয়। ভারত থেকে আসা দেশী ও ভারতীয় যাত্রীরা এ হয়রানির শিকার হয় বলে  অভিযোগ উঠেছে। কাস্টমস তল্লাশির পর আর কোন যাত্রী তল্লাশি হওয়ার কোন কথা নয় আইন অনুযায়ী এমনটি অভিযোগ করেছে কয়েকজন পাসপোর্ট যাত্রী। তাদের অভিযোগ কাস্টমস থেকে বের হওয়ার পর বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ বিজিবি  সদস্যরা কয়েক দফায় তাদের হয়রানি করে।

ভারত থেকে আসা ভারতীয় নাগরিক অরিন্দম ব্যানার্জি বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের পর সে দেশের প্রধান ফটকে বিজিবি তাদের ল্যাগেজ স্কানিং ও হাত দিয়ে তল্লাশি করে। এরপর বেনাপোল ইমিগ্রেশনে প্রবেশের পর তাদের পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে কাস্টমস স্কানিং করে তারা বের হয়। কাস্টমস তাদের ল্যাগেজ নিয়ম অনুযায়ী আছে কি না তা দেখে শুনে ছাড়ে। যদি কোন অতিরিক্ত পণ্য থাকে তাহলে তারা শুল্ক পরিশোধ করে নেওয়ার জন্য ডিএম স্লিপ দেয়। এরপর তারা সেখান থেকে বের হয়ে বেনাপোল আন্তর্জাতিক প্যাচেঞ্জার টার্মিনালে একটু বিশ্রাম নিতে গেলে ব্যাগ টানা টানি করে বিজিবি সদস্যরা। যা দেখতে একটি রাষ্টের জন্য অত্যান্ত দুর্ভাগ্য। সেখান থেকে যাত্রীদের বিশ্রামের আগে বিজিবির টানা হেচড়া করা মানে রিতি মত হয়রানি।

ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রী অপর্না রায় বলেন, টার্মিনাল থেকে টেনে হেচড়ে এনে তাদের বের করা মানে পাসপোর্ট যাত্রীদের অসন্মান করা। রাষ্ট্রের গুরুত্বপুর্ণ প্রবেশদ্বার এই বেনাপোল। এতে আমরা বৈদেশিক নাগরিক হিসাবে মনে করি বহিবিশ্বের কাছে পাসপোর্ট যাত্রীদের হয়রানি করা  মানে বাংলাদেশকে ছোট করা। বাংলাদেশী বিজিবি টার্মিনালের পর  টার্মিনালের সামনে ব্যাগ একটি টেবিলে উঠিয়ে সকল পণ্য সামগ্রী  নামিয়ে চেক করে। আবার ব্যাগে সেসব পণ্য উঠিয়ে পাঠায় তাদের ক্যাম্পে। সেখানে দীর্ঘ সময় রেখে আমাদের ক্যাম্পের বাহিরে দাড় করিয়ে রেখে দুই চার ঘন্টা পর সামন্য কিছু পণ্য দিয়ে দেয় বাকিটা তারা রেখে দেয়। আর রেখে দেওয়া পণ্যর কোন স্লিপ না দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। শুনেছি তারা নাকি এসব পণ্য আবার কাস্টমসে জমা করে।

ষষ্টী রানি বলেন, আমরা বাংলাদেশে রিতিমত ৫৭.২৬ টাকা টার্মিনাল চার্জ দেই বিশ্রামের জণ্য। অথচ সেখানে আমাদের ৫ মিনিট ও বিশ্রাম নিতে দেয় না।

একাধিক পাসপোর্টযাত্রীদের অভিযোগ, আজ মঙ্গলবার আইসিপি ক্যাম্পের ইনচার্জ মিজানুর রহমান ও একজন সিপাই তাদের টার্মিনাল থেকে তাড়িয়ে ঠেলিয়ে বের করে দেয়। এটা আমাদের যাত্রীদের জন্য অপমান। যাত্রীরা বলে বিজিবি টার্মিনারের বাহিরে চেকপোষ্ট বসিয়ে চেক করে থাকে। আমরা যদি অধিক কোন পণ্য আনি তাহলে আমরা টার্মিনাল থেকে বের হলে তো তারা আমাদের ল্যাগেজ চেক করতে পারবেন। আমাদের একটু বিশ্রামের সুযোগ না দেওয়ায় আমরা লজ্জিত। আপনাদের বিশ্বাস না হলে আপনারা বন্দরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন।

এ বিষয় বেনাপোল টার্মিনালে কর্তব্যরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক   জনৈক একজন  এ পিবিএন এর সহকারী পরিদর্শক বলেন যাত্রীরা ভারতে গমনের সময় এই টার্মিনালে এসে কিছু সময় বিশ্রাম নিতে পারে। তার জন্য স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি চার্জ নেন। কিন্তু এর মধ্যে এসে বিজিবি যাত্রীদের যে ভাবে টানা টানি করে এটা কোন সভ্য রাষ্ট্রের কাজ হতে পারে না।

বেনাপোল চেকপোষ্টের একধিক ব্যাক্তি বলেন, আসলে সমন্যহীনতা কারনে এরকম হতে পারে। এখানে একই সরকারী সংস্থার কয়েকটি বিভাগ কাজ করে। তারা যদি একটি জায়গায় যাত্রীদের তল্লাশির দায়িত্ব নেয় তাহলে বার বার যাত্রীদের ল্যাগেজ খোলা পণ্য নামানো উঠানো লাগে না। সব কিছু মিলিয়ে এখানে আমরা মনে করি এসব সংস্থার লোক দেখায় কার চেয়ে কার শক্তি বেশী। নিয়ম নিতীর কোন তোয়াক্কা নাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *