মায়ের জন্য ভালোবাসা থাকুক প্রতিটি মূর্হতে–কবি ফারহানা রহমান মিষ্টি.

মোহাম্মদ আককাস আলী প্রতিনিধি মহাদেবপুর  :  মায়ের কথা মনে পড়লেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে স্বর্গীয় এক প্রশান্তি স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠে স্নেহ, আদর মমতার এক রঙিন মুহূর্ত। মায়ের অকৃত্রিম এই ভালোবাসা আর কোথাও খুঁজ পাওয়া যাবেনা। এই অনাবিল সুখ শান্তি কেবল মায়ের কাছেই পাওয়া যায়। পৃথিবীর সবচেয়ে মায়াময় মুখ মায়ের। মা শব্দটিতে যে পরিমাণ ভালোবাসা মিশে আছে তা আর কোনো শব্দেই নেই। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শব্দ মা। এর থেকে গভীর কোন অনুভূতি হয় না। “মা ‘শব্দটির মধ্যে আছে এক অদ্ভুত পরিতৃপ্তি  এক অনাবিল শান্তি। মা এক অদ্ভূত নাম, যার মাঝে লুকিয়ে আছে পৃথিবীর সব ভালোবাসা।”মা” শব্দটি এক অক্ষরের হতে পারে, কিন্তু এর মধ্যে রয়েছে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।
‘মা’ শুধু একটি শব্দ নয়, একটি অনুভূতি, একটি ভালোবাসা, একটি আশ্রয়। সন্তানের জীবনে একজন মায়ের ভূমিকা অপরিসীম। জন্মের আগে থেকে শুরু করে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে মা সন্তানের পাশে থাকেন। মা মানে বেঁচে থাকার দ্বিতীয় অক্সিজেন। মা মানে যা হাত ধরে জীবনের প্রথম পা বাড়াতে শেখা। সন্তানের জন্য মা সবকিছুই করতে পারেন। নিজের অসংখ্য সুখ শান্তি বিসর্জন করতে মা কখনোই পিছপা হন না। মা সন্তানকে জন্ম দিতে জীবনের কঠিনতম কষ্ট সহ্য করেন অনেক ধৈর্য কষ্ট সহিংসু  নিরলস ও সার্থক ভাবে সংসারের হাল ধরার পরেও সন্তানের জন্য মা হয়ে ওঠেন একজন দায়িত্ববান চিরচেনা জননী থেকে সেরা জননীতে।
কত রকম চেনা জানা মানুষ আর আত্মীয়-স্বজনের মাঝে আমরা সব সময় আমরা পার করেছি কিন্তু মায়ের মত যেন কেউ নয়। সবাই মনের কষ্ট না বুঝলেও মা ঠিকই বুঝে  সন্তানের সবকিছু  বুঝতে পারেন।।আর এই হচ্ছে আমাদের মা এবং মায়ের মমতা। মায়ের তুলনা শুধু মাই।
সত্যিকার অর্থে মায়ের মতো ভালোবাসা অন্য কেউ দিতে পারে না।আসি এমন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা একমাত্র মা -ই  দিতে পারেন। মায়ের আদর স্নেহ ভালোবাসার ছায়ায়  প্রতিটি সন্তান থাকে পরম আনন্দে! যেন বটবৃক্ষের ছায়ায় পথিকের ক্লান্তি নিবারণ। নারীর প্রাণ বলে কথা। মা পরম সুখ স্মৃতি। মায়ের গুনগান, মায়ের ভালোবাসা, মায়ের স্নেহ মমতা, সন্তানের জন্য মায়ের দরদ, মায়ের প্রতি সন্তানদের দায়িত্ব কর্তব্য, সম্মান, ভালোবাসার কথা শেষ হবার নয়। মায়ের গুনগান করে কবি সাহিত্যিকরা কতো কিছুইনা লিখেন। ইতিহাসের পাতা থেকে মা দিবসের সমন্ধে জানা যায় ১৯০৫ সালে মাকে ভালোবাসা ও সম্মান জানাতে প্রবর্তন করেন মাদার্স ডে বা মা দিবসের। তবে যুক্তরাষ্ট্রে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর স্বীকৃতি ও প্রসার ঘটে ১৯১৪ সালে। কিন্তু এর প্রসার ঘটে আরও পরে। এর আগে আধুনিক মা দিবস পালনের কথা জানা যায়। মা দিবস উদযাপনের সূত্রপাত ঘটায় মার্কিন সমাজকর্মী জুলিয়া ওয়ার্টস। প্রতি বছর মে মাসের চতুর্থ রবিবারকে মাদারিং সানডে হিসাবে পালন করা হতো ব্রিটেনে। এটা ছিল সতের শতকের কথা। মায়ের সঙ্গে সময় দেওয়া ও মায়ের জন্য উপহার কেনা ছিল দিনটির কর্মসূচিতে। এরপর আমেরিকার পশ্চিম ভার্জিনিয়াতে প্রথম মা দিবস পালন করা হয় ১৮৫৮ সালে। জুনের ২ তারিখকে তারা বেছে নিয়েছিল মা দিবস হিসেবে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন সর্বপ্রথম মা দিবসকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেসে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে ‘মা’ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে এই দিনে আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হচ্ছে মা দিবস। অ্যান জার্ভিস দিনটির সরকারি অনুমোদন পাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা চালাতে থাকেন  কিন্তু সফল হতে পারেননি। তার মৃত্যুর পর তার মেয়ে অ্যান জার্ভিস মায়ের অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণের কাজে হাত দেন। তিনি চেষ্টা করতে লাগলেন একটি বিশেষ দিন ঠিক করে ‘মা দিবস’টি উদযাপন করার জন্য। সে লক্ষ্যেই ১৯০৮ সালের ১০ মে তিনি পশ্চিম ভার্জিনিয়ার গ্রাফিটন শহরের সেই চার্চে, যেখানে তার মা অ্যান জার্ভিস রবিবার পড়াতেন সেখানে প্রথমবারের মতো দিনটি উদযাপন করলেন। এরপর থেকেই আস্তে আস্তে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি বিস্তৃত হতে থাকে চারপাশে এবং এক সময় ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে।  ১৯০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আনা জারভিসের মা মারা গেলে তার মাকে স্মরণ করার উদ্দেশ্যে আনা জারভিস প্রথম মা দিবস পালন করেন। ১৯২০ সাল নাগাদ বিশ্বের প্রায় সব দেশে মা দিবসের প্রচলন শুরু হয়। তাই আমাদের দেশেও এর বেশ প্রচলন রয়েছে।
প্রতিটি সন্তানের জন্য তার  মা হচ্ছেন আমার পথপ্রদর্শক। প্রতিটা মা একেকজন যোদ্ধা, প্রতিটি সন্তানের কাছে একেকজন মা  একজন সেরা শিক্ষক, সেরা সুন্দরী নারী, সেরা অভিভাবক, সেরা কারিগর সেরা,  এসব বলার কারণ প্রতিটা মা যে যার জায়গা থেকে সন্তানকে তার সাধ্যমত মায়া আদর ভালোবাসা দিয়ে গড়ে তোলেন। প্রতিটি মা তার সন্তানের জন্য সবচেযে  একটা বড়  মানষিক শক্তি। মা,তার সন্তান কে   সু প্রতিষ্ঠিত, মানবিক মানুষ,   একজন সৎ মানুষ হয়ে উঠতে সাহায্য করেন।একজন ভালো মনের মানুষ হতে তিনি শেখান।
আমার ভুলগুলোকে শুধরে দিয়ে এবং অন্যায়কে ক্ষমা করে দিয়ে একজন একজন মানবিক মানুষ তৈরির চেষ্টা করেন। তাইতো সন্তানের চোখে তার মা   সবচেয়ে সুন্দরী নারী । আমি আমার মায়ের কাছে চিরঋণী। আমার জীবনের সব অর্জন নীতি-নৈতিকতা,বুদ্ধিমত্তা শিক্ষা সবকিছুই তার কাছ থেকে শিখা। মা কখনো অভিযোগ করে না, কেবল নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসে। তার হাসি যেন আশীর্বাদ, তার চোখে লুকানো গভীর মমতা।
মায়ের কাছেই যেহেতু সকল রাগ-অভিমান, আবদার, বায়না চলে তাই মা মানেই সব ভালো। মাকে ভালোবাসতে কোনো দিন,সপ্তাহ,মাস বা বছরের প্রয়োজন হয় না। মাকে প্রতিদিনই ভালোবাসা যায়।মাকে নিয়ে যতই বলবো ততই  কম হয়ে যাবে। এই ব্যাপারগুলি লিখে প্রকাশ করাটা সত্যি অনেক কঠিন। মায়ের সাথে সম্পর্ক আত্নার অন্তরের  ভালোবাসার এই বন্ধন অনেক জটিল।মায়ের সাথে নাড়ীর টান, একে ছিড়ে ফেলা মুছে ফেলা জন্ম জন্মান্তেও সম্ভব  না। আমার পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় নাম — “মা”।
আমি তোমাকে  ভালোবাসি, কিন্তু সেই ভালোবাসার গভীরতা আমিও পরিমাপ করতে পারি না।
পৃথিবীর সভ্যতার উত্থান-পতনের যত গল্পই বলা হোক না কেন মায়ের জন্য ভালোবাসার গল্পটি সব সময় একই মমতায় মাখা থাকবে। মায়ের হাসিমুখের তুলনা চলে না অনুভূতির ভান্ডারে জমে থাকা কোনো আনন্দ বা সুখের সঙ্গে। অজস্র দুঃখ-বেদনার ঝড় সামলে রাখা সেই মমতাময়ীমাকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসার জন্য নির্দিষ্ট দিনক্ষণের প্রয়োজন নেই। মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রতিটি মুহূর্তের। তারপরও বছরের  এই সময়টাতে বিশ্বের বিভিন্ন স্হানে “মা” দিবস  পালন করা হয়। তাই সবারই বোঝা উচিত বলে বিশেষ  কোন দিন নয় সন্তানের জন্য মায়ের মুখে হাসি থাকুক প্রতিটি মুহূর্তে অটুট থাকুক মায়ের জন্য সন্তানের ভালোবাসার বন্ধন।
সবশেষে একটা কথা বলবো অনেক ভালোবাসি তোমাকে মা। পৃথিবীর সকল মা দীর্ঘজীবি হউন।ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল মা। পৃথিবীর সব মায়ের প্রতি রইল ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *