আইনশৃঙ্খলার অবনতির সুযোগে হামলা ও লুটপাট- হেযবুত তওহীদের সদস্যদের জানমালের নিরাপত্তা দাবি

সারমিন সুলতানা চইতি প্রতিবেদকঃ   নোয়াখালীতে অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ সদস্যদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট,  গাইবান্ধা,  শেরপুর, জয়পুরহাট, পঞ্চগড়,  পাবনা, সুনামগঞ্জসহ ৮টি কার্যালয়ে হামলার প্রতিবাদজানিয়েছে সংগঠনটি আজ শনিবার (১০ আগস্ট ২০২৪) আন্দোলনটির মুখপাত্র মো. মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবাদ জানানো হয়

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার রাতে নোয়াখালীর সোনাইমুড়িউপজেলার পোরকরা গ্রামে হেযবুত তওহীদের সদস্যদের ৩০ একরজমি থেকে সংগ্রহকৃত আটটি খড়ের গাদা আগুন দিয়ে জ্বালিয়েদেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয় এর আগে গত আগস্টআইনশৃঙ্খলার অবনতির সুযোগে একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী হেযবুততওহীদ সদস্যদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় কোটিটাকার সম্পদ লুটপাটের ঘটনা উল্লেখ করে সোনাইমুড়ীতে হেযবুততওহীদের বিভিন্ন প্রকল্পে হামলার পাঁয়তারা হচ্ছে জানিয়ে এর বিরুদ্ধেবর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়

 

বিবৃতিতে মশিউর রহমান বলেন, আন্দোলন প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেইহেযবুত তওহীদের বিরুদ্ধে ধর্মের অপব্যবহারকারী উগ্রবাদীগোষ্ঠীগুলো নানা মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে ফলে আমাদেরকর্মীদেরকে অবর্ণনীয় নির্যাতন নিপীড়ন হয়রানির শিকার হতেহয়েছে উগ্রবাদী গোষ্ঠী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতার পিতৃনিবাস করটিয়াজমিদার বাড়িতে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করে মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, নোয়াখালী, পাবনায় হমালা চালিয়ে নৃশংসভাবে সদস্যদের হত্যাকরেছে এখন পর্যন্ত আমাদের উপর সহস্রাধিক হামলার ঘটনাঘটেছে আইন হাতে তুলে না নিয়ে আমরা আইনের দ্বারস্থ হয়েছিকিন্তু হামলাকারীরা ধর্মের মুখোশ পরে পার পেয়ে গেছে

 

তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে হেযবুত তওহীদের বর্তমান এমামহোসাইন মোহাম্মদ সেলিম নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে অবস্থিত তাঁরনিজ বাড়ির আঙিনায় একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন স্থানীয়উগ্রগোষ্ঠীমসজিদ নয়গির্জা বানাচ্ছেগুজব তুলে দিয়ে তারা ধর্মান্ধমানুষকে উস্কে দিয়ে সেদিন তাঁর বাড়িঘরসহ অন্যান্য সদস্যদেরবাড়িঘরও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয় মসজিটি ভেঙে গুড়িয়ে দেয় এরপরমসজিদের নির্মাণকাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে আগত দুই তরুণ সদস্যকেপ্রকাশ্য দিবালোক জবাই করে হত্যা করে তাদের হাত পায়ের রগকাটে, চোখ তুলে ফেলে এবং দেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়

 

তিনি বলেন, ২০১৬ সালের হামলার পর হাল ছেড়ে না দিয়ে হেযবুততওহীদের এমাম তাঁর গ্রামের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য অন্তত৫০টির মতো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছেন তার মধ্যে রয়েছে কয়েকটিগরুর খামার, মাছের ঘের, একটি বিদ্যালয়, চার তলা মসজিদকমপ্লেক্স, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ইত্যাদি সেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রমিক কর্মচারী মিলিয়েপ্রায় এক হাজারের মতো সদস্য তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে ওইগ্রামেই বসবাস করছেন বর্তমানের অস্থিতিশীল পরিবেশকে কাজেলাগিয়ে আবারো উগ্রবাদীরা ২০১৬ সালের মত একটি তাণ্ডব চালিয়েগণহত্যার ষড়যন্ত্র করছে হেযবুত তওহীদের এমামের গ্রাম চাষীরহাটথেকে এক বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে বিশেষ করে লাকসাম উপজেলারঅন্তর্গত বিপুলাসার বাজারের নিকটে আমাদের গার্মেন্টস কারখানা, খামার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত লোকজন বাসা ভাড়াকরে থাকেন অনেকে সেখানে মুদির দোকান করেন, রিকশা গ্যারেজইত্যাদিতে কাজ করেন আগস্ট সরকারের পতনের দিন দুর্বৃত্তরাতাদের প্রত্যেকটি বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে, গ্যারেজ লুট করেছে, দোকান লুট করেছে, বাড়িতে আগুন দিয়েছে পঞ্চাশটি পরিবারেরপ্রায় কোটি টাকার সম্পদ তারা লুট করে পরিবারগুলোকে সর্বস্বান্তকরেছে

 

এদিন হেযবুত তওহীদের শেরপুর, জয়পুরহাট, পাবনা, সুনামগঞ্জসহমোট ৮টি কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতির সাথে কোন সম্পৃক্ততা অতীতেও ছিল না, এখনও নেই আমাদের আইন ভঙ্গ করার কোন রেকর্ড নেই আমরাউগ্রবাদের বিরুদ্ধে কাজ করি তাই এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি মাননীয়এমামের বাড়িসহ হেযবুত তওহীদের সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালাতে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো লুণ্ঠন করার জন্য উসকানি দিয়ে যাচ্ছেঅনলাইনে তারা শত শত পোস্ট করেছে জাতীয় হুমকি দিয়ে আমরা সেখানে ভয় আতঙ্কের মধ্যে দিনানিপাত করছি

 

তিনি বলেন, আগস্ট সোনাইমুড়ি থানায় হামলা করা হয়েছে এবংসেখানে চারজন পুলিশসহ সাত জন মানুষ নিহত হয়েছে সেদিনবাজারে বাজারে হামলা লুটপাট হয়েছে সেদিন এবং তারপরেরদিন এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি বারবার চাষীরহাট বাজারে এসেহেযবুত তওহীদকে এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দিয়ে গেছে তবেএলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনিকিন্তু অনলাইনে অফলাইনে ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত রয়েছেআমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, সোনাইমুড়ীতে হেযবুত তওহীদের এমামের বাসগৃহকে কেন্দ্র করে একটাধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে সোনাইমুড়ীসহ সারাদেশেহেযবুত তওহীদের সদস্যদের জীবন সম্পদের নিরাপত্তায় দ্রুতব্যবস্থা গ্রহণ করুন

 

এমতাবস্থায় সরকারের নিকট হেযবুত তওহীদের পক্ষ থেকে ৪টি দাবিজানান মশিউর রহমান দাবিগুলো হলো. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেদ্রুত হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়াহোক . স্থানীয় বাজারে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা হোক . বিপুলাসারে তারিখে সংঘটিত লুটপাটে আমাদের অর্ধশতপরিবারের সদস্যরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন বিনা কারণে যারা তাদের এইক্ষতিসাধন করল তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক . এখনও প্রতিমুহূর্তে গুজব সৃষ্টি করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির যেষড়যন্ত্র হচ্ছে সে বিষয়ে সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনাকরছি

 

উল্লেখ্য অরাজনৈতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদ সম্পূর্ণনিঃস্বার্থভাবে মানবতার কল্যাণে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করেযাবতীয় উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, নারীনির্যাতন ইত্যাদির বিরুদ্ধে ইসলামের প্রকৃত আদর্শ প্রচারের কাজকরছে উপমহাদেশের প্রখ্যাত পন্নী পরিবারের সন্তান এমামমুযযামানজনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী ১৯৯৫ সালে হেযবুত তওহীদপ্রতিষ্ঠা করেন ধর্মীয় সংস্কারপন্থী আন্দোলন হেযবুত তওহীদএকাগ্রভাবে ইসলামের সুমহান আদর্শকে জনগণের মধ্যে প্রচারেরকাজ করে আসছে আদর্শ প্রচারের লক্ষ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতেঅন্তত দুই লক্ষাধিক জনসভা, সেমিনার, ্যালি, মানববন্ধন করে আন্দোলনটি

Leave a Reply

Your email address will not be published.