দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানায় পরকীয়ার জেরে চাঞ্চল্যকর চুমকী হত্যাকান্ডে জরিত সাবেক চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার ৩

মোঃ নয়ন মিয়া, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি: আনুমানিক ০৮.৩০ ঘটিকার সময় ঘোড়াঘাট থানাধীন ১নং বুলাকিপুর ইউপির অন্তগর্ত বুলাকিপুর সিংগানালা গ্রামস্থ মোঃ গোলাপ মিয়া এর বাড়ীর পশ্চিম-দক্ষিণ কোণে কানাগাড়ী হইতে বলগাড়ী গামী পাকা রাস্তা সংলগ্ন জনৈক মোজাম্মেল হক এর আমবাগানের কোণায় একজন অজ্ঞাতনামা মধ্যবয়সী মহিলার লাশ পাওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়। থানা পুলিশ ও পিবিআিই টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অজ্ঞাতনামা মহিলার পরিচয় সনাক্ত করে ভিকটিমের পিতা মামলার বাদী মোঃ মোখলেছুর রহমান (৬৭), পিতা-মৃত অকিব উদ্দিন মন্ডল, মাতা-মৃত রহিমন বেগম, সাং-মধ্যদড়ি পাড়া, থানা-জয়পুরহাট সদর, জেলা-জয়পুরহাটকে সংবাদ প্রদান করলে তিনি উক্ত ঘটনার বিষয় এজাহার দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে ঘোড়াঘাট থানার মামলা নং-১৭, তাং-২৯/০৭/২০২৩ খ্রিঃ ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ রুজু করা হয় এবং মামলার তদন্তভার এসআই (নিঃ) মোঃ আঃ ছালাম এর উপর অর্পন করা হয়।

মামলার বাদীর মেয়ে ভিকটিম ফারহানা আক্তার ওরফে চুমকি (৩৫) কে নিয়ে ভিকটিম এর স্বামী মোঃ এজাজুল হক ওরফে সনি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানাধীন বর্গাহাটি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে অনুমান ৩/৪ বৎসর যাবৎ বসবাস করিতেছিল। ভিকটিম এর স্বামী মোঃ এজাজুল হক ওরফে সনি গোবিন্দগঞ্জ থানাধীন কামদিয়া বাজারে মুদি খানার দোকানের ব্যবসা করে। ভিকটিম এর স্বামী মোঃ এজাজুল হক ওরফে সনি সারাদিন দোকান ব্যবসা শেষে প্রতিদিন রাত্রী অনুমান ১১.০০ ঘটিকায় ভাড়া বাসায় যায়। সেই সুযোগে তাহার স্ত্রী ভিকটিম ফারহানা আক্তার চুমকি এর সহিত তদন্তে প্রাপ্ত আসামী মোঃ আঃ রাজ্জাক এর প্রেম ভালবাসার সম্পর্ক গড়িয়া ওঠে এবং আসামী মোঃ আঃ রাজ্জাককে ২০২০ সালে গোপনে বিবাহ করে। পরবর্তীতে ভিকটিম ফারহানা আক্তার চুমকির সহিত তদন্তে প্রাপ্ত আসামী আঃ রাজ্জাক এর পরিবারে উক্ত বিবাহকে কেন্দ্র করে পারিবারিক অশান্তি সৃষ্টি হয় এবং উক্ত বিষয় নিয়ে ভিকটিম ও আসামী আঃ রাজ্জাক এর মধ্যে মনোমানিল্য সৃষ্টি হয়। উক্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানার ০৮নং আওলাই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক এর সামাজিক ও পারিবারীক ভাবে সম্মান হানি হওয়ায় ভিকটিমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে এবং সেই মোতাবেক ঘটনার আগেরদিন হত্যার পরিকল্পনাকারী আব্দুর রাজ্জাক ভিকটিমকে খারাপ চরিত্রের মেয়ে প্রমানিত করার উদ্দেশ্যে এবং মৃতদেহের পরিচয় সহজে যেন সনাক্ত না করা যায় সেই উদ্দেশ্যে কথিত মোজাম পার্কের আনুমানিক ৪০০শত গজ দুরে রাস্তার পাশে আমবাগানের কোনায় ভিকিটিম ফারহানার আক্তার চুমকির মৃতদেহ ফেলে রাখার পরিকল্পনা করে, সেই ধারাবাহিকতায় আগেরদিন মামলার ঘটনাস্থল রেকি করে আসেন।

পরবর্তীতে ইং ২৭/০৭/২৩ তারিখ মামলার তদন্তে প্রাপ্ত আসামী আঃ রাজ্জাক তাহার বিশ্বস্ত সহযোগী গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ এমদাদুল হক কে জানায় যে, সে ভিকটিম ফারহানাকে বিয়ের কথা বলে মাইক্রোবাস যোগে ঘোড়াঘাট থানাধীন রানীগঞ্জ এলাকায় নিয়ে যাবে এবং সেখানে ভিকটিম ফারহানাকে হত্যা করে অজ্ঞাতস্থানে লাশ ফেলে চলে আসবে এবং উক্ত হত্যা কান্ডে এমদাদকে সাথে থাকতে হবে। আসামী রাজ্জাক তার এক নিকটআত্মীয়কে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে তার বাড়ীতে আসতে বলে। আসামী আঃ রাজ্জাক এর কথা মতে উক্ত আসামী ঘোড়াঘাট থানাধীন মরিচা গ্রামের মাইক্রোবাস যাহার রেজীঃ নং-ঢাকা মেট্রো-১১-৯৭৯৬ এর গাড়ীর ড্রাইভার গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ এমদাদুল হক এর মাইক্রোবাস সহ পাঁচবিবি থানা এলাকা ছাতিনালী গ্রামে যায়। চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক কে শালায়পুর বাজার থেকে, অপর ২ সহযোগীকে মলান বাজার থেকে গাড়িতে তোলে। সেখান থেকে আসামীগন পাঁচবিবিতে যায়। কিছুক্ষন পাঁচবিবিতে ঘোরাফেরা করার পর ইং ২৭/০৭/২৩ তাং রাত্রী অনুমান ২০.৩০ ঘটিকার সময় পাঁচবিবি থেকে সুকৌশলে আসামী ড্রাইভার মোঃ এমদাদুল এর সাদা রংয়ের নোহা মাইক্রোবাস যোগে ভিকটিম ফারহানা কে পাঁচবিবি থানার হাকিম মন্ডলের চাতালের পাশ থেকে গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর আসামী আঃ রাজ্জাক ভিকটিমকে কাজী অফিসে বিবাহ করার কথা বলে জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানা এলাকা হইতে অত্র থানাধীন রানীগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা করেন। উক্ত সময় ভিকটিম ফারহানা ও আসামী আঃ রাজ্জাক এর মধ্যে মাইক্রোবাসের ভিতরে বিবাহ সংক্রান্তে কথা কাটা-কাটি হয়। একপর্যায়ে অত্র থানাধীন ডুগডুগীরহাট এলাকায় চলন্ত মাইক্রোবাসে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ এমদাদুল, আসামী মোঃ আঃ রাজ্জাকসহ অপর ৩ আসামী ভিকটিম এর গলায় নাইলনের রশি দ্বারা পেচাইয়া শ্বাসরোধ পূর্বক হত্যা করে ঘোড়াঘাট থানাধীন মোজাম পার্কের আনুমানিক ৪০০শত গজ দুরে রাস্তার পাশে আমবাগানের কোনায় ভিকটিম ফারহানা আক্তার চুমকি‘র মৃতদেহ ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীতে ২৮ জুলাই সকাল আনুমানিক ৮:৩০ ঘটিকায় স্থানীয় লোকজন ভিক্টিম এর লাশ উদ্ধার করে থানায় সংবাদ দেন।

দিনাজপুর জেলার সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব শাহ ইফতেখার আহমেদ পিপিএম মহোদয়ের সরাসরি নির্দেশনা ও তত্তাবধানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জনাব আব্দুল্লাহ-আল- মাসুম এর পরিকল্পনায় সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হাকিমপুর সার্কেল জনাব মোঃ শরিফুল ইসলাম এর নেতৃত্বে ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ, পুলিশ পরিদর্শক(নিঃ) মোঃ আসাদুজ্জামান, পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) মোঃ এনামুল হক এবং তদন্তকারী অফিসার এসআই(নিঃ) মোঃ আব্দুস ছালাম এর সাথে বিশেষ টিমের সদস্য এসআই(নিঃ) মোঃ মোজাফ্ফর রহমান, এএসআই(নিঃ) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, এএসআই(নিঃ) মোঃ সাজ্জাদ হোসেনসহ আরো অনেকে অত্র দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানা, জয়পুরহাট জেলা, বগুড়া ও গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন জায়গায় ঝটিকা অভিযান শুরু করেন। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষন করে ক্লুলেস হত্যা মামলার ঘটনা উৎঘাটন ও হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী সনাক্ত করনসহ মামলার ঘটনায় ভিকটিম ফারহানা আক্তার চুমকি (৩৫) কে হত্যা কান্ডে ব্যবহৃত একটি নোহা মাইক্রোবাস যাহার রেজি নং-ঢাকা মেট্রো-চ-১১-৯৭৯৬, গত ইং-০১/০৮/২৩ তার

Leave a Reply

Your email address will not be published.