সিরাজুল ইসলাম আপন, ক্রাইম রিপোর্টার (পাবনা): পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ফিরোজ হোসেন (৩২) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী, সুদের কারবারী ও পুলিশের চিহ্নিত সোর্সকে গ্রেফতারের দাবীতে একটি গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক মানুষ ভাঙ্গুড়া থানায় ঘন্টাব্যপি অবস্থান নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। শনিবার (১৫ জুলাই) রাতে উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের ০৯ নং ওযার্ডের সদস্য শফিকুলের নের্তৃত্বে উপজেলার নুর-নগর গ্রামের বাসিন্দারা থানায় উপস্থিত হয়ে গ্রামবাসীর পক্ষে আব্দুল জাব্বার নামে এক ব্যাক্তি লিখিত অভিযোগ দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এসময় তারা পুলিশকে তিন দিনের আল্টিমেটাম দেন অন্যথায় গ্রামবাসী মিলে তাকে (ফিরোজ হোসেন) গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে গ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবেন বলে স্লোগান দেন। ফিরোজ ঐ গ্রামের আলহাজ্ব আলীর ছেলে।
লিখিত অভিযোগ ও অসুসন্ধানে জানা যায়, ফিরোজ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করছে। এই সোর্সের পরিচয়ে সে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে ইয়াবা, গাঁজা, পতিতা সরবরাহ, সুদের কারবার সহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তার এহেন কর্মকান্ডের বিরোধিতা করায় বিভিন্ন সময় নিরীহ গ্রামবাসীদের অনেক কে গাঁজা হেরোইন ও বিভিন্ন মদাক দ্রব্য দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে ফিরোজ। গ্রামবাসীর দাবী ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কামরুজ্জামান (বর্তমানে পার্শবর্তী চাটমোহর থানায় কর্মরত) সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি সোবাহান আলীর ও প্রভাবশালী স্কুল শিক্ষক সালামের প্রশ্রয়েই ফিরোজের আজকের অবস্থান।
বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীরা জানান, গ্রামের স্কুল পড়ুয়া ছাত্রদের বাবা মা নজরদারীতে রাখলে ফিরোজ তার লোকদের দিয়ে গোপনে ছাত্রদের ঘরের জানালা দিয়ে গাঁজা, ইয়াবা পৌছে দেয়। এর আগে ফিরোজ ইয়াবা ও হিরোইনসহ আটক হয়ে কিছুদিন জেলে খেটে বের হয়ে আসে। এরপর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে। তার মাদক ছড়ানোর কারনে এলাকাবাসী ১৫ জুলাই শনিবার রাতে থানায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে ও ফিরোজকে গ্রেফতার করতে প্রায় একশত জনের স্বাক্ষর সহ লিখিত অভিযোগ দেয়।
তারা আরও জানায় বিভিন্ন সময় কোন কারনে পুলিশ ঐ এলাকায় গেলে তার সাথেই প্রথমে আলোচনা করে তার পর কাজ করে। এতে গ্রামবাসীর উপর তার প্রভাব বিস্তার সহজ হয়।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (বর্তমানে পাশ্ববর্তী চাটমোহর থানায় কর্মরত) কামরুজ্জামান তার বিরুদ্ধে করা গ্রামবাসীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ফিরোজকে তিনি সোর্স হিসেবে কাজে লাগিয়েছেন। তার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাদককারবারীকে আটক করেছেন। মূলত ফিরোজ তার সোর্স হওয়ায় গ্রামবাসী তাকে ভুল বুঝেছে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ফিরোজকে গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে থানা পুলিশ।