সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বৃদ্ধ কে আটকে রেখে নির্যাতনের প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

আশরাফুল আবেদীন, ঈশ্বরদী প্রতিনিধি: পাবনার ঈশ্বরদীতে মুলাডুলি ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার বাণেজ বাহিনী কর্তৃক হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্রী ফনি দাস (৬৫) নামের এক বৃদ্ধকে আটকে রেখে মধ্যরাত পর্যন্ত বেদম প্রহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে চাঁদার দাবীতে সৌদি আরব প্রবাসী মুরাদ হোসেনের স্ত্রী আফরোজা বেগমকে (৪২) কু প্রস্তাব সহ সম্মানহানি করায় ভুক্তভোগীরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ ঘটনার পৃথক দুটি অভিযোগ ঈশ্বরদী থানায় দায়ের করা হয়েছে।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ঈশ্বরদী থানায় অভিযোগ দায়েরের পর বাণেজ মেম্বার ও তার বাহিনী দ্বারা নির্যাতনের শিকার পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে স্থানীয়  দৈনিক স্বতঃকন্ঠ পত্রিকার কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা জানান, ঈশ্বরদীর মুলাডুলি ইউনিয়নের বাঘবাড়িয়া গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী মুরাদ আলীর স্ত্রী আফরোজা বেগমকে বানেজ মেম্বর বাহিনীর লোকজন বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করা সহ প্রায়ই কূ প্রস্তাব দেয়। এতে আফরোজা বেগম রাজি না হলে তার কাছে সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করে।
১ লা নভেম্বর সন্ধ্যায় দিনমজুর ফনি দাস (৬৫) আফরোজার বাড়িতে দিন মজুরের কাজের টাকা আনতে গেলে সন্ত্রাসীরা আফরোজা বেগমের সহিত অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে বলে মিথ্যা অভিযোগে তাকে বানেজ মেম্বারের বাড়িতে আটকে রেখে মধ্যরাত পর্যন্ত বেদম প্রহার করে গুরুতর আহত করে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আহত শ্রী ফনি দাসের ছেলে শ্রী সুজন দাস আরো জানান, উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের চক নারিচা বাঘবাড়িয়া, অরণকোলা ও বহরপুর এলাকায় বর্তমান মেম্বার বাণেজ আলী ও তার নিজস্ব বাহিনীর অন্যতম প্রধান শফি (৪৫), মোঃ বিল্লাল (৪২), মোঃ সানা (৩৮), মোঃ সোহেল (৩৭), হজরত শেখসহ (৫৮) ১৫ থেকে ২০ জনের একটি সঙ্ঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গ্রুপ এলাকায়  ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এই বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, চাঁদাদাবী, মেয়েদের সঙ্গে অশালিন আচরণ করা, কুপ্রস্তাব দেয়াসহ নানা মুখি নির্যাতন ও অত্যাচার করে আসছে।
ঐদিন পরে সাংবাদিক ও পৌর কাউন্সিলর আবুল হাশেমসহ অন্যান্যদের হস্তক্ষেপে ফনি দাসকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে ফনি দাস চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর আফরোজা বেগমসহ তার পরিবারের লোকজন লোক লজ্জার ভয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে গৃহবন্ধি হয়ে রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে নির্যাতিত বেশ কিছু পরিবারের সদস্য, সংখ্যালঘুু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলার ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার বাণেজ আলী বলেন, আমার কোন সন্ত্রাসী বাহিনী নেই। তারা সবাই আমার এলাকার লোক। শ্রী ফনি দাসের সঙ্গে সৌদি আরব প্রবাসী মুরাদ হোসেনের স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। লোকজন ফনি দাসকে আটক করে মারপিট করেছে। তবে কারও নিকট থেকে চাঁদা বা টাকা চাওয়া হয়নি।
ঈশ্বরদী থানা ওসি তদন্ত হাসান বাসীর বলেন, এই ঘটনায় পৃথক দুটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.