আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে জেএসএফ বাংলাদেশ

হাকিকুল ইসলাম খোকন, প্রতিনিধি আমেরিকাঃ জাতীয় সম্মিলিত ফোরাম (জেএসএফ ) বাংলাদেশ। ২০২৫ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথমপ্রহরে যথাযথ মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করেছে। জাতিসংঘের সামনে এবং বাংলাদেশ সোসাইটির সাথে এই দিবস পালন করে। জাতীয় সম্মিলিত ফোরাম (জেএসএফ ) বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে হাজি আনোয়ার হোসেন লিটন এর নেতৃত্বে অন্যান্য নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা জানান।

শ্রদ্ধা জানানো শেষে জাতীয় সম্মিলিত ফোরাম (জেএসএফ ) বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে বক্তৃতায় বলা হয় , একুশে ফেব্রুয়ারিকে এ দেশের জনগণ একদিকে যেমন দুঃখের দিন মনে করে, অন্যদিকে প্রেরণা ও গৌরবের দিন হিসেবেও মনে করে। কারণ, একুশের পথ ধরেই ছাত্র আন্দোলন, স্বাধিকার আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং চূড়ান্ত স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি। এই পথ ধরেই নব্বইয়ের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটেছে।

১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য বুকের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করেছিলেন এ দেশের ছাত্র-তরুণরা। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর, অহিউল্লাহদের এই আত্মত্যাগ পৃথিবীর ইতিহাসে অনন্য উদাহরণ। এই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাকে তৎকালীন পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

শুধু তাই নয়, ভাষার জন্য একটি জাতির অসাধারণ এই ভালোবাসাকে স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থাও (ইউনেস্কো)। ১৯৯৯ সালে এই সংস্থাটি একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে। এর পর থেকে বিশ্বের ১৮৮টি দেশে একযোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হচ্ছে।

এই ভূখণ্ডে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের প্রথম সূত্রপাত ঘটেছিল ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি করাচিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানি গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে। এর মূল নায়ক ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের কংগ্রেস দলীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে পরিষদীয় ভাষা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার বক্তব্য ছিল, ‘পাকিস্তানের ৬ কোটি ৯০ লাখের মধ্যে বাংলা ভাষার মানুষ ৪ কোটি ৪০ লাখ। এদিক থেকে বাংলা ভাষা পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হওয়া দরকার।’

একুশে ফেব্রুয়ারি গুলিতে ছাত্রদের মৃত্যুসংবাদে বাংলা ভাষার প্রাণের দাবি সারা দেশে স্ফুলিঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়ে। ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় প্রতিবাদ মিছিলে গুলি চালানো হলে নিহত হন আবদুস সালাম, সফিউর রহমান ও কিশোল অহিউল্লাহ।

এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়।

১৯৫২ সালের অবিস্মরণীয় সেই ঘটনার পর প্রতি বছর একুশে ফেব্রুয়ারিকে ‘শহীদ দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দেওয়ার পর একই সঙ্গে পালিত হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *