কালের সংবাদ ডেস্কঃ বাংলাদেশের মানচিত্রটি স্বাধীনতার পর পতাকা থেকে বাদ দিয়ে পতাকার মাপ ও রঙ নির্ধারণ করে এর পরিমার্জন করা হয়, যা আজ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। সবুজ আয়তক্ষেত্রের মাঝখানে লাল বৃত্ত, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার এই রূপটি ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি সরকারিভাবে গৃহীত হয়।
জাতির জনকের সুকৌশল নির্দেশনায় তৎকালীন ডাকসু নেতাদের উদ্যোগে ২ মার্চ আমজনতাকে সংগে নিয়ে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ, অন্যায়, অত্যাচার, অবিচারের বিরুদ্ধে বাংলার পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়েই বাঙালি ছাত্র-জনতা স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্নিমন্ত্রে উজ্জীবিত হয় এবং স্বাধীনতা অর্জনের পথে যাত্রা শুরু করে। পতাকা উত্তোলনের মধ্যেই ছিল আর একটি কৌশল মুক্তিযুদ্ধে প্রেরণার উৎস। একটি দেশ, একটি পতাকা ও একটি জাতি সব কটিই পরিপূরক হিসেবে এগিয়ে নেন জাতির জনক যা পাকিস্তানিদের বোঝবার শক্তি হয়নি।
একটি জাতির প্রতীকী চরিত্রের পরিচয় হলো পতাকা।
জাতীয় পতাকা উত্তোলন দিবস আজ। ১৯৭১ সালে আজকের এ দিনে (২রা মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন ছাত্র ও জনতা। পতাকা উত্তোলন করেছিলেন ডাকসুর সহসভাপতি আ স ম আবদুর রব। পতাকাটি ছিল সবুজ জমিনের ওপর লাল বৃত্তের মাঝখানে সোনালি বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা।
৩রা মার্চ পল্টনের জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সাহিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ছাত্রনেতা মোহাম্মদ শাজাহান সিরাজ। তবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৩শে মার্চে সর্বপ্রথম ধানমন্ডিতে নিজ বাসভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
সর্বপ্রথম অর্থাৎ বিদেশের মাটিতে ভারতের কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল। ডেপুটি হাইকমিশনের প্রধান জনাব এম হোসেন আলী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন।
মার্চ মাসের ১৮-১৯ তারিখ আবদুর রাজ্জাকের উপস্থিতিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন এবার পাকিস্তান দিবসের পরিবর্তে ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পতাকা উঠবে। প্রতিটি যানবাহনে, ভবনে, সমস্ত কার্যালয়ে, উচ্চ আদালতে উত্তোলিত হবে ওই পতাকা। ঐ নির্দেশনার আলোকে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের পূর্বঘোষিত ও সুস্পষ্ট পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পতাকা উত্তোলন দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়ে ছিলো।