একটি গুষ্ঠির কারনে লাগামছাড়া দাম নিত্যপণ্যের-ভর্তুকির ক্ষেত্রেও যৌক্তিকতা বিবেচনা করার আহ্বান

কালের সংবাদ ডেস্কঃ বিশ্ববাজারে অনেক পণ্যের দাম নিম্নমুখী হলেও বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের দাম লাগামছাড়া। গরুর মাংস, চিনি, সয়াবিন তেলের দাম বিশ্ববাজারের তুলনায় বাংলাদেশে অনেক বেশি। এ ছাড়া পণ্য সংকটের সুযোগ নিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে সীমিত আমদানিকারকরা। অভ্যন্তরীণ নীতিমালা, সুশাসন, প্রয়োজনীয় সংস্কার না করার কারণে এসব দুর্লতা সৃষ্টি হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সঠিক পথে আনতে সরকারকে শক্ত পদক্ষেপ নিতেই হবে।

ধানমণ্ডিতে গতকাল সিপিডি অফিসের সম্মেলন কক্ষে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট: সিপিডি’র সুপারিশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এসব তথ্য তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলেন গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মো. তৌফিকুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অজুহাতে বিশ্ব পরিস্থিতির কথা বলে গত মার্চ মাস থেকে অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রায় প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। চাল, সয়াবিন তেল, চিনি ও গরুর মাংসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে বেশি। কিন্তু বিশ্ব বাজারে দাম কমলেও দেশের বাজার ব্যবস্থা খারাপের দিকে। এর ফলে একদিকে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমছে, অন্যদিকে বাজারে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

ভর্তুকির ক্ষেত্রেও যৌক্তিকতা বিবেচনা করার আহ্বান জানান তিনি। কারণ, ভর্তুকি অর্থনীতিকে চাপে ফেলে। মোট জিডিপির ১.৯ শতাংশ বা সরকারের মোট ব্যয়ের ১২ শতাংশ যাচ্ছে ভর্তুকিতে। তবে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য খাদ্যপণ্যসহ নগদ সহায়তাও দেয়া দরকার বলে জানান তিনি।
দেশের খাদ্যে মূল্যস্ফীতি মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সিপিডি বলছে, ফেব্রুয়ারিতে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫.১১ শতাংশ, মাছ-মাংস যোগ দিলে মূল্যস্ফীতি ২৫.৩৭ শতাংশ। অথচ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যে ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ৮.১৩ শতাংশ। সিপিডি বলছে, রাজধানী ঢাকায় ৪ সদস্যের একটি পরিবারের খাবারের পেছনে প্রতি মাসে খরচ হচ্ছে ২২ হাজার ৬৬৪ টাকা। আর খাদ্য তালিকা থেকে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে ছোট করলে ব্যয় দাঁড়ায় ৭ হাজার ১৩১ টাকা। কিন্তু নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের যে আয় তা দিয়ে খাদ্যপণ্য কিনে টিকে থাকা কঠিন। খাদ্যে মূল্যস্ফীতির ২৫ শতাংশের বেশি যে হিসাব সিপিডি দিয়েছে, তা গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন শিল্পখাতের শ্রমিকদের মজুরিতে ৫% ইনক্রিমেন্ট দেয়ার পাশাপাশি নতুন মজুরি কাঠামো গঠন করার সুপারিশ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.