মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি: প্রাচীনকাল থেকেই আলু উৎপাদনের জন্য পরিচিত জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা। আগাম জাতের আলু উত্তোলন শুরু করছেন কৃষক। অনুকূল আবওহাওয়ায় ফলন হয়েছে বাম্পার। নতুন আলু বাজারে আসলেও দাম কমছে না। তবে দাম বেশি হওয়ায় কৃষক আলুর বয়স ৪৫-৪৮ দিন হলেও তুলছেন। পাইকারী বাজারে আলুর দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও খুচরাতে বেড়েছে দ্বিগুন।
আলুচাষিরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার আলু চাষাবাদে খরচ বেড়েছে আবার লাভও ডবল হচ্ছে। আলুর ফলনও বেড়েছে। বর্তমানে যারা আলু উত্তোলন করছেন তারা সবাই লাভের মুখ দেখছেন। চাষাবাদ, সার, বীজ, সেচ ও শ্রমসহ সব খরচ বাদ দিয়ে এবার ডবল লাভ টিকছে। তিন/চার দিন আগে নতুন আলু প্রতি মণ (৪০ কেজি) ২৪’শ থেকে ২৬’শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।
সেই আলু গত রোববার বিক্রি হয়েছে ১৯’শ থেকে ২’হাজার টাকায়। প্রথমদিকে দাম বেশি ছিল কিন্তু ফলন কম হয়েছে। এখন দাম একটু কমেছে কিন্তু ফলন বেশি হচ্ছে। গড়ে সমানই ধরা যায়। এই দাম থাকলে আগামী সপ্তাহে যারা আলু তুলবেন তারা ফলনের সাথে মোটা অংকের লাভের মুখও দেখবেন।
গতকাল রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার ভাদসা, ক্ষেতলাল উপজেলার গোপিনাথপুর, কালাই উপজেলার ইমামপুর ও বেগুনগ্রাম মাঠে চাষীরা মহিলা শ্রমিক নিয়ে আগাম জাতের আলু তুলছে। বেগুনগ্রাম মাঠের চাষিরা জানান, যারা আলু তুলছেন তারা সবাই জমি থেকেই বিক্রি করছেন। কারন পাইকাররা সরাসরি মাঠে আসছেন।
এতে করে খরচও কম পড়ছে। গত দুইদিন ধরে উন্নত জাতের আলু প্রতি মণ (৪০ কেজি) বিক্রি হয়েছে ১৯’শ থেকে ২’হাজার টাকায়। আর লাল পাকড়ি বিক্রি হয়েছে ২২’শ থেকে ২৪’শ টাকা। এতে করে চাষীরা খুশি।
বেগুনগ্রাম মাঠের কৃষক খোকন বলেন, আলু রোপণ থেকে শুরু করে নিড়ানি, বাঁধানোসহ যাবতীয় কাজ করেছি আমিসহ পরিবারের লোকজন মিলে।
তাই অন্যের থেকে বিঘাপ্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ কম হয়েছে। ২০ শতক জমির আলু তুলেছি। ফলন হয়েছে ৩০ মণ। ১ হাজার ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করে প্রায় ৩৯ হাজার টাকা লাভ হয়েছে। আলু বিক্রি করে এবার ভালই লাগছে।
আলু ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান বলেন, আগাম জাতের আলু রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন মোকামে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাঁচা মালের মূল্য সঠিকভাবে বলা যায় না। আমদানীর উপর দাম ওঠা-নামা করে। আর মোকাগুলোতে আলুর ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। বর্তমানে যে দামে আলু ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে তা আসলে অস্বাভাবিক।
পাইকারি বাজারেই ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা কেজি দরে আলু ক্রয় করতে হচ্ছে। অথচ গত বছর এ সময় আগাম জাতের আলু ১৪ থেকে ১৬ টাকা কেজি দরে ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে। কালাই পৌর বাজারে খুচরা ব্যবসায়ী অশোক কুমার বলেন, বাজারে বিভিন্ন জাতের নতুন আলু ওঠেছে।
পাইকারী বাজারে দাম বেশী হওয়ায় তার প্রভাব খুচরা বাজারে পরেছে। জাত ভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে।
কালাই উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, এই উপজেলায় অনেক জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ হয়েছে ।ইতোমধ্যে কৃষকরা আগাম জাতের আলু তুলতে শুরু করেছেন এবং আগাম আলুর বাজার ধরে লাভবান হচ্ছে এখানকার কৃষকরা ।আগাম আলু চাষ খুব লাভজনক ।প্রত্যাশিত ফলন ও ভালো দাম পেয়ে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে