কালাইয়ে তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই দুটিই পরিত্যক্ত

মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার সরকারি ৫০ শয্যা হাসপাতালের প্রায় কোটি টাকা মূল্যের পরিত্যক্ত দুটি অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘদিন খোলা জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে। গোপন সূত্রে জানা যায়, দায়িত্বে থাকা হাসপাতালের কর্মচারীরা চুরি হওয়ার কথা বলে সুযোগ বুঝে অ্যালম্বুলেন্স দুটির ইঞ্জিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি সব খুলে নিয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় পরিত্যক্ত অ্যাম্বুলেন্সের একটি খোলা আকাশের নিচে এবং অপরটি খাঁচায় বন্দী থেকে জং লেগে কলকব্জা নষ্ট হয়েছে। ওই পরিত্যক্ত অ্যাম্বুলেন্স দুটি নিলামে বিক্রির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। তবে সব যন্ত্রপাতি নষ্ট এবং চুরি হওয়ায় এখন আর নিলামে তোলার অবস্থাতেও নেই বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
হাসপাতালে সূত্রে জানা গেছে, বিদেশি সংস্থার দেয়া অ্যাম্বুলেন্সটি পরিত্যক্ত হওয়ার পর থেকে ২৪ বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখায় বডিসহ ইঞ্জিনের সব যন্ত্রপাতি সুযোগ বুঝে হাসপাতালের অসাধু কর্মচারীরা চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছে। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া আরেকটি অ্যাম্বুলেন্স অকেজো হওয়ার পর মেরামত না করে বিআরটিএ কর্তৃক পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।১২ বছর ধরে এই অ্যাম্বুলেন্সটিকেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পিছনে খোলা জায়গায় খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে।
নির্জন স্থানে পড়ে থাকার সুযোগে ইঞ্জিনসহ ভেতরের সবকিছু চোরেরা খুলে নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাইরে থেকে এটির চারটি চাকাসহ কিছু কিছু অংশ খসে যাওয়া দৃশ্যমান থাকলেও ভেতরের অবস্থা জানা সম্ভব হয়নি। তবে পরিত্যক্ত অ্যাম্বুলেন্স দুটির ইঞ্জিনসহ ভেতরের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি না থাকার বিষয়ে জানা নেই বলে দাবি করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক মো.জেকের আলি বলেন,‘তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দু’টিই অকেজো। আমি ছাড়া অ্যাম্বুলেন্সের কোনো ড্রাইভারও নাই। একা রোগী আনা-নেয়ায় খুবই অসুবিধা হয়। অতিরিক্ত চালক নিয়োগের কোনো উদ্যোগ নেই।’
হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কর্তৃপক্ষের গড়িমসির কারণেই অ্যাম্বুলেন্স দুটি এভাবে নষ্ট হয়েছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ইঞ্জিনসহ সব যন্ত্রপাতি চুরি হয়ে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকায় মূল্যবান গাড়ি তিলে তিলে ক্ষয়ে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ না করলে সরকারী সম্পত্তি এভাবে নষ্ট হয়ে যাবে, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাষ্ট্র।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.ফয়সল নাহিদ বলেন, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স নিলামে তোলার প্রক্রিয়াটি একটু জটিল ও সময়সাপেক্ষ।স্থানীয়ভাবে নিলামে দেয়ার কোনো নিয়ম নেই।তবে শিগগিরই নিলামে বিক্রির অনুমতি চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলেই নিলামে তুলে বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.