খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহযোদ্ধা কদরুল নিখোঁজ: স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

: খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহযোদ্ধা মো. কদরুল হাসান নামের এক কর্মী দুই দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) তিনি মহানগরীর সোনাডাঙ্গার সোনারবাংলা গলির বাসা থেকে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেননি। এ ঘটনায় তার স্ত্রী সাঈদা খাতুন সোনাডাঙ্গা ও খুলনা সদর থানায় পৃথক দুটি জিডি করেছেন। গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন নিখোঁজ কদরুল হাসানের স্ত্রী সাঈদা খাতুন।

 

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার স্বামী কদরুল হাসান খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সোনারবাংলা গলির বাসিন্দা। তার স্থায়ী ঠিকানা খুলনার তেরখাদা থানাধীন বিরি আজগড়া। আমরা স্বামী-স্ত্রী নগরীর সোনাডাঙ্গার সোনারবাংলা গলিতে ভাড়া বাসায় বসবাস করি। আমার স্বামী খুলনার খালিশপুর সরকারি হাজী মোহাম্মদ মুহসীন কলেজের ছাত্র। পাশাপাশি নগরীর শেখপাড়া পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পার্ট টাইম চাকরি করেন। সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন অগ্রসেনানী হিসেবেও তার ভূমিকা ছিল অনন্য। বিশেষ করে সম্প্রতি দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যার কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গঠিত ত্রাণ সংগ্রহের কাজেও রাত-দিন পরিশ্রম করে নগরীর ময়লাপোতা এলাকায় কাজ করেছিলেন।

 

সাঈদা খাতুন আরও বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩ টার দিকে আমার স্বামী বাসা থেকে বের হন। ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার সঙ্গে আমার মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান যে, আমি বন্যার্তদের ত্রাণের কাজে ব্যস্ত আছি। খুব দ্রুত বাসায় ফিরবো। পরবর্তীতে সে বাসায় ফেরেননি। রাত ১১টার দিকে আমি আমার স্বামীকে ফোন দিলে ১ বার তার নম্বর খোলা পাই। কিন্তু ফোন রিসিভ করে না। তারপর থেকে ফোন নম্বর বন্ধ। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আমার স্বামীর কোনো সন্ধান পাইনি। এরপর থেকে আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ও কয়েকজন সমন্বয়কের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সম্ভাব্য সকল স্থানে তাকে খুঁজেছি। কিন্তু কোন সন্ধান পাইনি। সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রথমে কেএমপির সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। এছাড়া রাতে আবার পুলিশের পরামর্শে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি’র) খুলনা থানায় আরও একটি জিডি করা হয়। কেননা হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাস্থল খুলনা সদর থানা হওয়ায় পুলিশ এমন পরামর্শ দেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কোন সন্ধান মেলেনি। এ অবস্থায় আমরা পরিবারের সকলেই উদ্বিগ্ন।

তিনি বলেন, পরিবারের অন্যতম সদস্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহযোদ্ধা কদরুল হাসানের সন্ধান পেতে প্রশাসনের তথা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।

এ ব্যাপারে খুলনা সদর থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, নিখোঁজ কদরুল হাসানের এখনো পর্যন্ত কোন সন্ধান পাওয়া পাওয়া যায়নি। তাকে খুঁজে বের করতে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.