জয়পুরহাটে কলেজে ভর্তি হতে না পারায় আত্মহত্যার চেষ্টা প্রাণ বাঁচালেন ওসি

মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা এলাকার এক ছাত্র জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি ভোকেশনাল শাখা থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও পরিবারের অভাব-অনটনের কারনে কলেজে ভর্তি হতে না পারায় পরিবারের কাউকে না জানিয়ে রাতের আঁধারে সড়কে দাঁড়িয়ে ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা কর ছিলেন ওই ছাত্র।

এদিকে প্রতিদিনের মতো উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাতের বেলায় ওই পথে টহল দিচ্ছিলেন পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক।

দূর থেকে গাড়ি আলোয় দেখতে পান কেউ একজন ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। তখন দ্রুত গাড়িটি ওই ছাত্রের সামনে দাঁড় করিয়ে ওসি গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে ওই ছাত্রকে রাস্তার পাশে নিয়ে গিয়ে তার প্রাণ বাঁচায়।

ওই ছাত্রের মা-বাবা বলেন, কিছু দিন আগে স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এস এসসি পরীক্ষায় এ-প্লাস পেয়ে পাশ করেছে ছেলের পাশের খবর শুনে বুকটা আনন্দে ভরে গেলেও ছেলে কলেজে ভর্তি করে দিতে না পারার দুঃখে আমরা হতাশায় দিন পার করছিলাম।

সেদিন ছেলে এসে বললো মা আমি কলেজে ভর্তি হবো টাকা দাও তখন আমি একটু রাগ করেই বলে ছিলাম তোর পড়শোনা করা লাগবেনা তুই কাজ কাম কর তোকে আর পড়াশোনা আর করতে হবে না।

এই বলে ছেলেও মন খারাপ করে বাড়ী থেকে বেরিয়ে যায়। রাতের বেলায় কাউকে না জানিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশে ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিল।

ওই রাস্তা দিয়ে পাঁচবিবি থানার ওসি যাওয়ার সময় আমার ছেলের প্রাণ বাঁচায় এবং পরের দিন সকালে আমাদের কে থানায় দেখা করতে বলে। সকালে থানায় গেলে আমাদেরকে নাস্তা খেতে বলেন আর আপনাদের ছেলের কলেজের ভর্তি খরচ আমি নিলাম।

এই শুনে চোখ দিয়ে আমাদের আনন্দের জ্বল চলে আসে। ভগবান মানবিক এই ওসির ভালো করুক। ছেলে এখন কলেজে যাচ্ছে।

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, জন গণের জানমালের নিরপত্তায় কাজ করছেন পুলিশ। সেদিন রাতে পাঁচবিবি উপজেলার সীমান্তবর্তী বাগজানা এলাকায় টহলে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই গাড়ীর আলোয় দেখতে পাই কেউ একজন ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে।

তখন ড্রাইভারকে দ্রুত গাড়ি চালাতে বলি আর অবশেষে ছেলেটার সামনে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করালে ছেলেটি ভয় পায়।

তিনি আরো বলেন,পরে ছেলেটির কাছ থেকে আত্মহত্যার কারন জানতে চাইলে সে বলেন এ বছর জিপিএ-৫ পেয়ে পাশ করেছি কিন্তু পরিবারের অভাবের কারনে সে কলেজে ভর্তি হতে পারিনি একারনে হতাশায় নিজের জীবন শেষ করে দিতে চাই।

রাতের বেলায় ছেলে টাকে নিরাপদে বাড়ী পৌঁছে দিয়ে সকালে মা-বাবাকে নিয়ে থানায় আসতে বলি। এদিকে বিষয়টি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম স্যারকে জানালে তিনি ছেলে টার কলেজে ভর্তি করে দেওয়ার নির্দেশ দেন আর ওই ছেলের কলেজে ভর্তি করে দায়িত্ব আমরা পাঁচবিবি থানার পুলিশ নিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.