তমালিকা মল্লিক, প্রতিবেদক ঃ বৈশ্বিক উষ্ণতা আজ বিশ্বব্যাপী বহুল আলোচিত বিষয়। বৈশ্বিক উষ্ণতারকারণে গোটা বিশ্ব হুমকির মুখে পড়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে এইজলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে চলেছে, যে কারণেসারা বিশ্ব চিন্তিত। বাংলাদেশ ও সেই সাথে উদ্বিগ্ন। যদিও বৈশ্বিকউষ্ণতায় বাংলাদেশের অবদান সর্বনিম্ন কিন্তু দুর্যোগে সবচেয়ে বেশিক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। উপকূলবাসীকেএই ঝুঁকি থেকে পরিত্রাণ করতে দরকার নতুন ধরনের পরিকল্পনা এবংতার বাস্তবায়ন।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ রোজ বুধবার বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থালিডার্সের আয়োজনে এবং ব্রেড ফর দ্যা ওয়ার্ল্ড এর আর্থিকসহযোগিতায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেরাখার আহ্বান জানিয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে একটি মানববন্ধনঅনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালকজনাব মোহন কুমার মণ্ডল, অবসরপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল জনাব বিধুস্রবামণ্ডল, সাংবাদিক ও শিক্ষক জনাব রণজিৎ কুমার বর্মন, শিক্ষক জনাবমানবেন্দ্র দেবনাথ, জনাব সুজাতা রাণী মিস্ত্রি, লিডার্সের সকলকর্মীবৃন্দসহ আরও অনেকে। মানববন্ধনে বক্তারা আমাদের অস্তিত্বরক্ষায় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার জন্যদাবি তুলে ধরেন।
লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহন কুমার মণ্ডল তার বক্তব্যেবলেন যে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ মানুষউপকূলীয় অঞ্চলে বসবাস করে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট জলবায়ুপরিবর্তন জনিত প্রভাবে যদি এক মিটার সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়েতাহলে উপকূলের ১৫% স্থলভাগ হারাতে হবে এবং ৩ কোটি মানুষউদ্বাস্তু/শরনার্থী হতে পারে। বঙ্গোপসাগরের লবণপানি ইতিমধ্যে দেশেরঅভ্যন্তরে ১০০ কিলোমিটার প্রবেশ করেছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনেরবর্তমান পরিস্থিতি এরূপ বিদ্যমান থাকলে এর পরিধি আরও বাড়বে। তাই তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার বর্তমান প্রত্যাশার চেয়ে অনেক দ্রুত কমিয়েআনা জরুরী প্রয়োজন।
জনাব বিধুস্রবা মণ্ডল বলেন জলবায়ু পরিবর্তনে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিরকারণে মেরু অঞ্চলের বরফগলন ত্বরান্বিত হচ্ছে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাদিন দিন বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও লবনাক্ততা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জনাব রণজিৎ কুমার বর্মন বলেন যে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জলবায়ুপরিবর্তন খুব দ্রুত হচ্ছে। এই বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সঙ্গে খাপ খাইয়েনেওয়ার ক্ষেত্রে দরিদ্র দেশগুলিতে অভিযোজন কার্যক্রম বাস্তবায়নে ধনীদেশগুলির সহায়তা জরুরী প্রয়োজন। জনাব মানবেন্দ্র দেবনাথ বলেনতাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে শারীরিক ভাবেও অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতেহয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে হিটস্ট্রোক ও হাইপোথার্মিয়ার মত নানাঅসুস্থতা দেখা দিতে পারে, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই আমাদেরএখন ই তাপমাত্রা বৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরতে হবে এবং পৃথিবীকে পরবর্তীপ্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য করে যেতে হবে।