নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামীলীগ অফিস ভাঙচুর আহত ১০

মোহাম্মদ আককাস আলী : নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় আওয়ামীলীগ অফিস ভাঙচুরসহ ১০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দুপুরে শহরের সরিষাহাটির মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।
জানা গেছে, কোটা আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের কাজির মোড়ে সমবেত হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায় তারা মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে প্রধান সড়ক ধরে এগিয়ে আসতে থাকে। এক সময় সরিষা হাটির মোড়ে জেলা আওয়ামীলীগ অফিসের সামনে এলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ সেখানে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে উভয়পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় ইটের আঘাতে নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, সাংবাদিক মনিরুল ইসলামসহ ১০ জন আহত হয়েছেন।
ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীরা আবারও জমায়েত হয়ে মুক্তির মোড়ে অবস্থান নিয়ে সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। শিক্ষার্থীরা রাস্তার উপর বসে পড়ে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখে। দুপুর দেড়টার দিকে পরবর্তী দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজকের আন্দোলন শেষ করেন। পরে কোটা আন্দোলনকারীরা সরিষা হাটির মোড়ে এবং আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে অবস্থান গ্রহণ করে। মাঝখানে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা অবস্থান নেয়।
উভয়পক্ষ হতে থেকে মুহুর্মুহু স্লোগান দেয়া হয়। এক পর্যায় কোটা আন্দোলকারীরা সেখান থেকে সরে মুক্তির মোড়ে অবস্থান নেয়। পরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসলেও শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা করছে। নওগাঁ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক লায়লা আক্তার বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত ১০ জন রোগী হাসপাতালে এসেছেন। এদের সবাই মাথায় ইটের আঘাত লেগে আহত হয়েছেন। এদের একজনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।  নওগাঁর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক বলেন, মিছিলের শুরু থেকেই পুলিশ সহনশীল আচরণ করেছে। শিক্ষার্থীদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য তাদের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। কিন্তু মিছিলটি আওয়ামীলীগের পার্টি অফিসের কাছে পৌঁছালে মিছিল থেকে কিছু দুষ্কৃতকারী আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়ে। এরপরই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। ইটের আঘাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমানের হাত ভেঙে গেছে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছোঁড়া হয়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.