নওগাঁয় রাস্তার ধারে রোপনকৃত প্রায় দের লাখ টাকা মূল্যের গাছ কর্তন তদন্তের দাবি স্থানিয়দের

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোর্টারঃ নওগাঁয় গ্রামীন পাকা রাস্তার দু’ ধারে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের রোপন কৃত আনুমানিক দের লাখ টাকা মূল্যের মোট ১৯টি গাছ কাটার নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। গাছগুলো কাটার সময় স্থানিয়রা ঘটনাটি পুলিশ প্রশাসন সহ সংবাদকর্মীদের জানায়। স্থানিয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সংবাদকর্মীরা পৌছালে এসময় ঘটনাস্থলে থাকা কাঠও গাছ ব্যাপারী নজরুল ও তার ব্যবসায়িক আরেক পাটর্নার জানান, আমরা বৈধ্যভাবে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে রাস্তার ধারের মরা ১৯ টি গাছ ক্রয় করেছি। এসময় গাছ ক্রেতা নজরুল আরো বলেন, গত ১৫ অক্টোবর স্থানিয় ইউনিয়ন পরিষদে বরেন্দ্র বহুমূখী কর্তৃপক্ষের কাছে থেকে টেন্ডার (ডাকের) মাধ্যমে গাছগুলো ক্রয় করা হয়।
কথা বলার এক পর্যায়ে বরেন্দ্র বহুমূখী কর্তৃপক্ষের কাছে থেকে টেন্ডার এর মাধ্যমে গাছগুলো ক্রয় করার কাগজ বের করে পুলিশ কে দেখালে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ চলে যায়। তবে
এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানিয়রা প্রতিবেদক কে জানান,
রাস্তার ধারের যে ১৯ টি মরা আম ও শিশু গাছগুলো কাটা হচ্ছে এগুলো গাছের মূল্য প্রায় দের লাখ টাকা মতো। এছাড়া ইতি পূর্বে স্থানিয় ঈদগাহ মাঠের উন্নয়ন কাজ করার জন্য সরকারী নিয়ম-নীতি মেনে চৌমাশিয়া রাস্তার ধারে থাকা ৬-৭টি মরা গাছ ক্রয় করার জন্য   আমরা স্থানিয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, বরেন্দ্র অফিস সহ বন বিভাগ অফিসে একাধীকবার ধর্না দিয়েছি কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান, বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ও বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ কোন ভাবেই এসব গাছ বিক্রি করা সম্ভব নয় বলে আমাদের জানিয়ে দেয় বলে জানিয়ে তারা বলেন, আমাদের সন্দেহ হচ্ছে আসলে কর্তৃপক্ষ গাছগুলো টেন্ডারে বিক্রি করেছেন কিনা সেটা খতিয়ে দেখার জন্যও প্রতিবেদক এর কাছে দাবি জানান স্থানিয়রা। এমন দাবির পেক্ষিতে ঘটনাস্থলে থাকা কাঠ ব্যবসায়ী ও গাছগুলোর ক্রেতা দাবিদার নজরুল এর কাছে টেন্ডার এর কাগজ দেখতে চাইলে তিনি  বরেন্দ্র বহুমূখী কর্তৃপক্ষের টেন্ডার এর কাগজ এনে প্রতিবেদকে দেখান যাতে ১৯ টি মরা গাছের মোট মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে মাত্র ১৯ হাজার ২ শত টাকা। এসময় গাছের ক্রেতা নজরুল কে আবারো জিজ্ঞাসা করা হয় আপনি কত টাকা মূল্যে গাছগুলো ক্রয় করেছেন সে আবারো জানায় ৬০ হাজার টাকায় তিনি ১৯ টি গাছ ক্রয় করেছেন। এসময় টেন্ডার কাগজে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ এর পক্ষে ১৬ অক্টোবর ১৯ হাজার ২ শত টাকা গ্রহনের কোষাধ্যক্ষ এর স্বাক্ষর থাকলেও সেখানে কোন সিল মারা হয়নি, এছাড়া অপর কোন কর্মকর্তার স্বাক্ষর বা সিল না থাকায় গাছ বিক্রির সত্যতা জানতে প্রতিবেদক বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নওগাঁর মহাদেবপুর জোন এর সহকারী প্রকৌশলী মোঃ ইমদাদুল হকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ১৯ টি মরা গাছ ১৯ হাজার ২শ’ টাকায় বিক্রির বিষয় প্রতিবেদক কে নিশ্চিত করেন। তবে এসময় গাছের ক্রেতা জানাচ্ছেন ৬০ হাজার টাকায় ১৯টি গাছ ক্রয় করেছেন এমন প্রশ্নের উক্তর তিনি এড়িয়ে যান।
এব্যাপারে স্থানিয় ইউপি চেয়ারম্যান শিবনাথ মিশ্র বলেন, গাছগুলো বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করেছেন। যে ১৯ টি গাছ বিক্রি করা হয়েছে সেই গাছের ক্রেতা জানাচ্ছেন তিনি ৬০ হাজার টাকায় গাছগুলো কিনেছেন এমন প্রশ্ন এড়িয়ে ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের এখানে হরি বাসর অনুষ্ঠানের জন্য খড়ি প্রয়োজন, যাদের গাছ দেওয়া হয়েছে তারা গাছগুলোর ডাল-পালা আমাদের অনুষ্ঠানে খড়ি হিসেবে দিবে, এ ঘটনায় নিউজ প্রকাশ না করলে কি নয় এমন কথা বলে ইউপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, গাছগুলোর পিছনে খরচ হয়েছে প্রায় ৩২ হাজার টাকা, এক পর্যায়ে তিনি ফোন কেটে দেন।
এব্যাপারে হাসেম রেজা, এনামুল ওরফে আলী ও মাসুদ রানা সহ স্থানিয়রা অভিযোগ করে ভিডিওতে প্রতিবেদককে, আমাদের ঈদগাহ মাঠের উন্নয়ন কাজের জন্য ইতি পূর্বে দফায় দফায় আমরা ইউপি চেয়ারম্যান শিবনাথ মিশ্র’র কাছে গিয়েছি এবং বলেছি যে আমাদের এলাকায় থাকা ৬-৭ টি গাছ নিলামের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য তিনি আমাদের বরেন্দ্র অফিসে পাঠিয়ে দেন, বরেন্দ্র অফিসে যাওয়ার পর বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বন বিভাগ অফিসে পাঠান। এভাবেই বহুদিন ধর্ণা দিয়েছি জানিয়ে তারা আরো বলেন, আমরা ত ১৯টি গাছ নিতে চাইনি, আমরা বৈধ্য টেন্ডারের মাধ্যমে ৬-৭ টি মরা গাছ নিতে ৪০ হাজার টাকা দিতাম বলেই ইউপি চেয়ারম্যান, বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ও বন বিভাগ সব জাঁয়গায় ধর্ণা দিয়েছি। কিন্তু মঙ্গলবার গাছগুলো কাটার সময় জানতে পারছি যে মাত্র ১৯ হাজার ২শ’ টাকায় রাস্তার ১৯ টি গাছ টেন্ডারে বিক্রি করা হয় জানিয়ে তারা আরো বলেন, ৬-৭ টি গাছ ঈদগাহ মাঠের উন্নয়ন কাজের জন্য ৪০ হাজার টাকায় দেওয়া হয়নি। সেখানে মাত্র ১৯ হাজার ২শ’ টাকায় ১৯ টি গাছ বিক্রি টেন্ডার কাগজে দেখানো হয়েছে যা খুবই রহস্যময় দাবি করে স্থানিয়রা ঘটনাটি তদন্ত পূর্বক সত্য উদর্ঘাটনের দাবি জানান।
একই সাথে গাছ কাটার ঘটনাস্থলে ক্রেতা নিজেই (গাছের ব্যাপারী) যেখানে ৬০ হাজার টাকায় ১৯ টি মরা গাছ ক্রয় করেছেন বলে জানাচ্ছেন আর কর্তৃপক্ষের টেন্ডার কাগজে  মাত্র ১৯ হাজার ২ শ’ টাকা দেখানো হয়েছে তাহলে ৬০ হাজার এর বাঁকি টাকা গেলো কোথায় এমন প্রশ্ন ও দেখা দিয়েছে জনমনে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.