হাকিকুল ইসলাম খোকন, প্রতিনিধি আমেরিকাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিয়েছেন।অধ্যাপক সি আর আবরার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করেছেন পিএইচডি।
গত বুধবার (৫ মার্চ) সকাল এগারোটায় বঙ্গভবনে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।সংক্ষিপ্ত শপথ অনুষ্ঠানে সি আর আবরার প্রথমে উপদেষ্টা পদে ও পরে গোপনীয়তার শপথ পাঠ করেন। শপথগ্রহণ শেষে তিনি শপথ বইয়ে সই করেন।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের শুরুতেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরবর্তী সময় কোরআন থেকে তিলাওয়াত করা হয়।
অধ্যাপক সি আর আবরার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। নতুন একজন উপদেষ্টা যুক্ত হওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারে প্রধান উপদেষ্টাসহ মোট উপদেষ্টার সংখ্যা হলো ২৩ জন।প্রফেসর ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ অনেক দিন ধরেই বলছিলেন, উনি একসঙ্গে দুটি মন্ত্রণালয় কাজ করতে পারছেন না। যেহেতু উনি অ্যাডভান্সড স্টেজে, প্ল্যানিং মিনিস্ট্রিতে অনেক বড় দায়িত্ব ওনার। এ জন্য অধ্যাপক সি আর আবরার যুক্ত হচ্ছে উপদেষ্টা পরিষদে।’
শরণার্থী ও শ্রম অভিবাসন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সি আর আবরারের জন্ম ১৯৫২ সালের ১৭ আগস্ট ফরিদপুরে। তার পিতা আবদুস সাত্তার চৌধুরী ও মা সোফিয়া সুলতানা। মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেন তিনি। এরপর যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে এমএ এবং অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। ১৯৭৯ সাল থেকে টানা চার দশক ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষকতা করছেন।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের খ্যাতিমান এই অধ্যাপক শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক প্রতিষ্ঠান রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) নির্বাহী পরিচালক। দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করছেন তিনি। তার গবেষণার বিষয় রোহিঙ্গা শরণার্থী, স্বল্পমেয়াদি শ্রম অভিবাসী এবং বাংলাদেশে ক্যাম্পে বসবাসকারী উর্দুভাষী সম্প্রদায়ের নাগরিকত্ব প্রসঙ্গে। তিনি শ্রম নিয়োগ শিল্প, সামাজিক সুরক্ষা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অধিকার বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন।
সি আর আবরার উর্দু ভাষাভাষী তরুণদের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য ক্যাম্প সংগঠিত করার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন।