পাকশী রিসোর্ট অবৈধভাবে দখলের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের

আশরাফুল আবেদীন ঈশ্বরদী প্রতিনিধি ঃ রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অদূরে পদ্মা নদীর তীর ঘেষে রেলের ভূ-সম্পত্তিতে অবস্থিত ঈশ্বরদীর ভূস্বর্গ খ্যাত তিলোত্তমা প্রাচীন নগরী পাকশীতে গড়ে ওঠা দৃষ্টিনন্দন ‘পাকশী রিসোর্টে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে দখল করার অপচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়ভাবে রিসোর্টটি সঞ্জু খানের রিসোর্ট নামেই বেশী পরিচিত। পাকশী রিসোর্ট লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত  শিল্পপতি আকরাম আলী খান সঞ্জুর স্ত্রী মোনাজ্জামা মুশতারী তানিয়ার ঈশ্বরদী থানা এবং পাকশী ইউনিয়ন পরিষদে দাখিল করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২১ সালে আকরাম আলী খান সঞ্জুর আকষ্মিক মৃত্যুর পর তাঁর বড় ভাই আহসান আলী খান আরজুকে রিসোর্টটি অস্থায়ীভাবে পরিচালনার জন্য মৌখিকভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় । সে থেকে পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়া আরজু খান প্রতিমাসে ঢাকায় তানিয়ার নামে এক লক্ষ করে টাকা পাঠিয়ে দেন। ছয়মাস নিয়মিত টাকা প্রেরন করেন। কিন্তূ ছয়মাস পর থেকে ৫০ হাজার, তারপর টাকা নাই এবং করোনার অজুহাত দেখিয়ে নানা টালবাহানা শুরু করেন। বার বার টেলিফোন করে টাকা পাঠাচ্ছেন না কেন জানতে চাইলে অশালীন ভাষায় গালমন্দ করে বলেন, এখন রাশিয়ানরা রিসোর্টে আসছে না, তাই আয় হচ্ছে না, তাছাড়া উচ্চ আদালতে রেলকর্তৃপক্ষের দায়ের করা উচ্ছেদ মামলা ফেস করতে হিমসীম খাচ্ছি, টাকা দেব কোথা থেকে। অথচ সেখানে গোঁপনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন রিসোর্ট অগনিত রাশিয়ান এবং বিভিন্ন কোম্পানীর পর্য়র্টকদের ভীড়ে তিল ধারনের জায়গা থাকেনা এবং মামলা চলছে মামলার গতিতে, সেখানে উনার কিছু করার নেই ।
প্রকৃতিক সৌন্দর্য়্যের লীলাভূমি ঈশ্বরদীর পাকশীতে প্রায় ১৮ বছর পূর্বে প্রথম এই ‘রিসোর্ট ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। তথ্যপ্রমানে দেখা যায়, পাকশী রিসোর্ট লিঃ এর ৫০ ভাগের মালিক আকরাম আলী খান সঞ্জু এবং অবশিষ্ঠ ৫০ ভাগের মালিক তাঁর স্ত্রী মোনাজ্জামা মুশতারী তানিয়া। স্বামীর মৃত্যুর পরে দুই সন্তানসহ তানিয়া পুরা রিসোর্টের আইনতঃ বৈধ মালিক।  এমতাবস্থায় প্রায় সপ্তাহখানেক আগে রিসোর্ট পরিচালনা নিজ দায়িত্বে নেয়ার জন্য তানিয়া ঈশ্বরদীতে এলে আরজু খান রিসোর্ট তার নিজের দাবি করে বহিরাগত লোকজন নিয়ে তানিয়াকে রিসোর্টে প্রবেশে বাধা প্রদানসহ নানাভাবে লাঞ্ছিত করে। এসময় খোঁজ নিয়ে তানিয়া জানতে পারেন, আরজু খান ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে রিসোর্টের আয় আত্মসাতের উদ্দেশ্যে গোঁপনে জনতা ব্যাংকে পৃথক একাউন্ট করে টাকা জমানোর কাহিনী জানতে পারেন। এ অবস্থায় তানিয়া রিসোর্টে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকিয়ে স্বামী ও সন্তানের সম্পদ রক্ষার জন্য ঈশ্বরদী থানা ও পাকশী ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে আহসান আলী খান আরজু বলেন, মৌখিকভাবে আমাকে রিসোর্ট পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তানিয়া বাহিরে থাকায় আমি প্রতিমাসে টাকা পাঠিয়ে দিতাম কিন্তূ হঠাৎ করে তিনি রিসোর্টে এসে সমস্ত কিছু পরিচালনার দায়িত্ব নিজে নিতে চান। আমাকে এ বিষয়ে আগে থেকে অবহিত করা বা কোন সময় দেওয়া হয়নি।  আরজু খান আপন ভাই ‘সঞ্জু খানের মৃত্যুর পর রিসোর্ট পরিচালনার জন্য মৌখিকভাবে দায়িত্ব নেওয়ার কথা আবারও স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি নিতান্তই আমাদের পারিবারিক ব্যাপার । আমার আরেক ভাই আগামী ৫ তারিখ আমেরিকা থেকে বাড়ি আসছে, সে আসলে আমরা সব ভাই বোন একসাথে বসে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করব।
এ ব্যাপারে পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিন্টু বলেন, পরিষদে লিখিত অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে রিসোর্টে গিয়ে পরিবারের সকলের সাথে আলাপ করে সমাধানের চেষ্টা করছি। ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ওসি তদন্ত মনিরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তিনি রিসোর্টে গিয়ে বিষয়টির সঠিক তদন্ত করে আমাকে জানালে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.