প্রেম গোঁসাই”য়ের মেলা নিয়ামতপুর(নওগাঁ)

নিশাত বানু রত্না, নিয়ামতপুর(নওগাঁ)ঃ ” আমি মেলা থেকে তালপাতার এক বাঁশী কিনে এনেছি” বাঁশী কই আগের মত বাজেনা, মন আমার তেমন কেনো সাজেনা।”

মেলা থেকে তালপাতার বাঁশী কিনি নাই, তবে আমাদের প্রেম গোঁসাইয়ের মেলা থেকে কিনেছি একটা বাঁশের বাঁশী।
সেই ছোট বেলায় স্কুল থেকে ফিরবার সময়; অলস দুপুরে রাখাল যখন মাঠে বাঁশী বাজাতো, আমি মুগ্ধ হয়ে শুনতাম। আর সেই ভালো লাগা আজও আমার মনকে আচ্ছন্ন করে। নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার গুজিশহর গ্রামে বহুযুগ ধরে আয়োজিত হয়ে আসছে বিরাট ঐতিহ্যবাহী এক মেলা। এই মেলার নাম। “প্রেম গোঁসাই”য়ের মেলা”
কি নেই এই মেলায়?
বাঁশ-বেত থেকে শুরু করে সবকিছু দিয়ে তৈরি প্রাচীন এবং আধুনিক যাবতীয় সামগ্রী রয়েছে এই মেলায়। এই মেলার বিশেষ বৈশিষ্ট্য লুচি আর মিস্টি। মনকে মন লুচি প্রতিদিন তৈরি হয়। এই লুচি মিস্টি নিয়ে এখানকার মানুষ আত্মীয় -স্বজনের বাড়ি যায় আত্মীয়তা করতে। পাঁচ কেজি ওজনের মিস্টি পাওয়া যায় এই মেলায়। শুনেছি এক একটা মিস্টি দশ কেজি পর্যন্তও আগে বানাতো। আমি শুধুমাত্র এক দোকানে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম তাঁরা প্রতিদিন ১০ মন আটার লুচি বানায়। বিষয়টা ভাবা যায়? বলুন?

এখানে রয়েছে বিরাট কাঠের মেলা। এই উপজেলার প্রতিটি বাড়ির ৯০% আসবাব পত্র এই মেলা থেকে কেনা।
মেলায় ঢোকার মুখে দেখলাম মণকে মণ জিলাপি। কিন্তু আসার সময় সব দোকান খালি। আর হ্যাঁ, খুব ছোট বেলায় দেখেছিলাম, ” দি রওশন সার্কাস।” বহুযুগ পরে এই মেলায় এসে দেখলাম,
” দি রাজমনি সার্কাস। ” আহা! এই বুড়ো বয়সে ক্ষণিকের জন্য চলে গিয়েছিলাম সেই শৈশবে। খাওয়া -দাওয়ার কোনো সমস্যা নেই, মেলায় হরেক রকমের মাছ, মাংস দিয়ে ভাত- তরকারি রান্না করে নিয়ে বসে আছে অসংখ্য দোকানী। চাইলে টেবিল চেয়ারে খেতে পারেন আবার বাংলা মাদুর বিছিয়ে রেখেছে, সেখানে আরাম আয়েশ করে বসেও খেতে পারেন।

বন্ধুরা মাসব্যাপী আয়োজিত এই মেলায় আপনারা আমন্ত্রিত। স্বপরিবারে চলে আসুন আমাদের উপজেলার এই ঐতিহ্যবাহী ” প্রেম গোঁসাই”য়ের মেলায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.