বদলগাছী‌তে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপল‌ক্ষে সঙ্গীত প্রতি‌যোগীতায় বিচারক মন্ডলীর পক্ষপা‌তের অ‌ভি‌যোগ

আবু সাইদ বদলগাছী ঃ নওগাঁর বদলগাছী‌তে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪ উপল‌ক্ষে মাধ‌্যমিক ও দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় বিচারক মন্ডলীর বিরু‌দ্ধে পক্ষপা‌তের অ‌ভি‌যোগ উ‌ঠে‌ছে।

প্রতক্ষ‌্যদর্শী ও প্রতি‌যো‌গী শিক্ষা‌র্থিদের অ‌ভিভাবক সু‌ত্রে জানা যায়, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপল‌ক্ষে গতকাল সোমবার সকাল ১১ টা থে‌কে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বদলগাছী মহিলা ডিগ্রী কলেজের তৃতীয় তলায় একটি রুমে সঙ্গীত, নৃত‌্য, ক‌বিতা আবৃ‌ত্তি, হামদ, নাত ও রচনা প্রতি‌যো‌গিতা অনু‌ষ্টিত হয়। উক্ত প্রতি‌যো‌গিতায় সঙ্গীত ও নৃত‌্য শাখায় বিচারক মন্ডলীর দা‌য়িত্ব পালন ক‌রেন বদলগাছী বঙ্গবন্ধু সরকারী ক‌লে‌জের বাংলা বিভা‌গের বিভাগীয় প্রধান ড. ফাল্গু‌নী চক্রবর্তী ও গোবরচাপাহাট ডিগ্রী ক‌লে‌জের প্রভাষক অ‌সিম কুমার নন্দী। উপ‌জেলা মাধ‌্যমিক শিক্ষা অ‌ফিস সু‌ত্রে জানা যায়, সঙ্গীত বিষ‌য়ে ৭ টি ক‌্যাটাগ‌রি‌ দেশ্বাত্ববোধক, নজরুল সঙ্গীত, র‌বিন্দ্র স‌ঙ্গীত, লোক সঙ্গীত , উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত ও জা‌রি গান ছিল। এর ম‌ধ্যে জা‌রিগা‌নে কোন শিক্ষা‌র্থি অংশ গ্রহন ক‌রে‌নি। অন‌্য সব ক‌্যাটাগ‌রি‌তে ক, খ, গ ও ঘ শাখায় শিক্ষা‌র্থী অংশ গ্রহন ক‌রে। সেখা‌নে খ শাখায় লোক সঙ্গীত বিভা‌গে অংশ গ্রহন ক‌রেন ৪ জন প্রতি‌যো‌গি শিক্ষার্থী। তার ম‌ধ্যে বদলগাছী সরকারী ম‌ডেল উচ্চ বিদ‌্যালয় থে‌কে ৩ টি ক‌্যাটাগ‌রি‌তে অংশ গ্রহন ক‌রেন ১০ শ্রেণির ছাত্র সিজান সিদ্দিকী। সিজান সি‌দ্দিকী খ শাখা হ‌তে দেশাত্ব‌বোদক ও র‌বিন্দ্র সঙ্গী‌ত ২ কাট‌্যাগ‌রি‌তে প্রথম স্থান অর্জন ক‌রে। আর লোক সঙ্গী‌তে অপর ৩ জন প্রতি‌যো‌গি‌ শিক্ষার্থী‌দের চাই‌তে নিজ হা‌তে হার‌মো‌নিয়াম বা‌জি‌য়ে তাল ও লয় ঠিক রেখে অত‌্যান্ত সুন্দর গান প‌রি‌বেশন কর‌লেও আ‌গে দুই ক‌্যাটাগ‌রি‌তে প্রথম স্থান অর্জন করায় লোক সঙ্গী‌তে তা‌র কোন স্থান নির্বাচন ক‌রেন‌নি দুই বিচারক। তার কারন হিসে‌বে জানা যায়, সিজান সি‌দ্দিকী ২ ক‌্যাটাগ‌রি‌তে প্রথম স্থান অর্জন ক‌রে‌ছে, তা‌কে ৩ ক‌্যাটাগ‌রি‌তে লোক সঙ্গী‌তে প্রথম স্থান ই‌চ্ছে করে পক্ষ‌্যপাত মুলক দুই বিচারক মন্ডলী আ‌লোচনা ক‌রে সিজান সি‌দ্দিকী‌কে প্রথম স্থান না দি‌য়ে লিখন না‌মে এক প্রতি‌যো‌গিকে প্রথম ক‌রে‌ছেন। তি‌নি হার‌মো‌নিয়াম বা‌জি‌য়ে গান ক‌রেন‌নি। নিয়ম র‌য়ে‌ছে প্রতি‌যো‌গি হার‌মো‌নিয়াম নি‌জে বা‌জি‌য়ে গান না কর‌লে ৫ মার্কস কম পা‌বে। তার পর ও লিখন‌কে প্রথম করায় সিজা‌নের বাবা আবু সাইদ সহ উ‌স্থিত ক‌য়েক জন শিক্ষক বিচারক মন্ডলীর এমন পক্ষ্যপাত মুলক বিচা‌রের অ‌ভি‌যোগ তু‌লেছেন এবং তাৎক্ষ‌নিক ভা‌বে এর সু‌বিচার দাবী ক‌রে মৌ‌খিক অ‌ভি‌যোগ ও ক‌রে‌ন উপ‌জেলা মাধ‌্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম ও অনুষ্ঠান পরিচালনাকারী একা‌ডে‌মিক কর্মকর্তা অনিল কুন্ডুর কা‌ছে। তারা দুজ‌নেই জনান, যে‌হেতু দুই বিচারক মন্ডলী দা‌য়িত্ব পালন ক‌রে‌ছেন তা‌দের এখন করার কিছুই নেই। দুই বিচারক মন্ডলীর ম‌ধ্যে ড. ফাল্গুনী চক্রবর্ত্তীর বিচা‌রিক ক্ষমতা বা বিচার‌কের দা‌য়ি‌ত্বে বসা‌নো মো‌টেই ঠিক হয়‌নি। কারন ড. ফাল্গুনী চক্রবর্ত্তী অধ‌্যাপক হ‌লে ও সঙ্গীত বিষ‌য়ে তার কোন একা‌ডে‌মিক ও বাস্তব কোন অ‌ভিজ্ঞতা নেই। কারন তি‌নি কোন গা‌নের শি‌ল্পী বা শিক্ষক ও নয়। এমন ব‌্যা‌ক্তি‌কে বিচারক মন্ডলীতে রাখা ঠিক হয়‌নি ব‌লে উপ‌স্থিত একা‌ধিক শিক্ষক, সাংবা‌দিক ও এক ক‌লে‌জের অধ‌্যক্ষ মন্তব‌্য ক‌রে‌ছেন। নাম প্রকাশ না করার শ‌র্তে সেখা‌নে উপ‌স্থিত এক ডিগ্রী ক‌লে‌জের অধ‌্যক্ষ জানান, অধ‌্যাপক ড. ফাল্গুনী ম‌্যাডাম ই‌তি পূ‌র্বে ও এক সঙ্গীত প্রতি‌যে‌গিতায় বিচারক হি‌সাবে পক্ষ‌্যপাত মুলক আচারণ ক‌রে‌ছেন। তি‌নি আর ও জানান, ড. ফাল্গুনী চক্রবর্ত্তীর এমন পক্ষ‌্যপাত মুলক সঙ্গীত প্রতি‌যোগীতায় বিচার করার কার‌নে শিক্ষার্থী‌দের সঙ্গী‌তে মনো‌নি‌বেশ ক‌মে যা‌বে। এ বিষ‌য়ে উপ‌জেলা শিক্ষা অ‌ফি‌সের একা‌ডে‌মিক কর্মকর্তা অ‌নিল কুন্ডু জানান, অনুষ্ঠান‌টি সা‌র্বিক প‌রিচালনার দা‌য়ি‌ত্বে আ‌মি ছিলাম। কিন্তু বিচারক মন্ডলীরা আমার সা‌থে কোন পরামর্শ না ক‌রেই রেজাল্ট আমার হ‌তে তু‌লে দি‌য়ে চ‌লে গে‌ছেন। এখন তারা ন‌্যয় বিচার ক‌রে‌ছে না অ‌বিচার ক‌রে‌ছে আ‌মি কিছু বল‌তে পার‌বো না।
উপ‌জেলা মাধ‌্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শ‌ফিউল আলম এর সা‌থে যোগা‌যোগ করা হ‌লে তি‌নি জানান, বিচার‌কের কাজ বিচারক ক‌রে‌ছে। এ বিষ‌য়ে আ‌মি কোন মন্তব‌্য কর‌তে চাই না।

উক্ত অনুষ্ঠা‌নের বিচারক মন্ডলীর সদস‌্য অ‌সিম কুমার নন্দীর সা‌থে‌ কথা হ‌লে সে জানায়, সিজান লো‌ক সঙ্গী‌তে ন‌্যায় বিচার পায়‌নি এমন প্রশ্নে আমি বিবৃত বোধ কর‌ছি।

অপর বিচারক ড. ফাল্গুনী চক্রবর্ত্তীর সা‌থে কথা হ‌লে সে জানায়, প্রকৃত সঙ্গীত নীতামালায় যা র‌য়ে‌ছে সেটা ফ‌লো না ক‌রে এখা‌নে বিচারকের দা‌য়িত্ব পালন করা হ‌য়ে‌ছে। স্থনীয় শিক্ষা ক‌মি‌টি থেকে যে ভা‌বে পরামর্শ দেওয়া হ‌য়ে‌ছে সে ভা‌বেই বিচার‌কের দা‌য়িত্ব পালন করা হ‌য়ে‌ছে। ত‌বে এখা‌নে বিচার‌কের প‌্যা‌নে‌লে ৩ জ‌নের নাম ছিল। তার ম‌ধ্যে উপ‌জেলা শিক্ষা অ‌ফি‌সের একা‌ডে‌মিক কর্মকর্তা অ‌নিল কুন্ডু উপ‌স্থিত থাক‌লে ও তি‌নি বিচারকের দা‌য়িত্ব পালন ক‌রেন‌নি। অথচ অনিল কুন্ডুর ও বিচারকের দায়িত্বে থাকার কথা কিন্তু তিনি ছিলেন না। ২ জন মি‌লে কোন বিচার করা সম্ভব হয় না। ৩ জন হ‌লে বিচার কার্য স‌ঠিক হয়। ত‌বে ভু‌লের উ‌র্দ্ধে কেহ নেই।

প্রতিযো‌গি শিক্ষার্থী‌ অ‌ভিভাব‌কেরা বিষয়টি মে‌নে না নি‌য়ে ওই দুই প্রতিযোগি সিজান সিদ্দিকী ও লিখনকে নিয়ে দুজনের মধ্যে পূনরায় খ শাখা লোক সঙ্গীত বিভাগে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে বিষয়টি সমাধানের জন্য উপ‌জেলা ‌শিক্ষা ক‌মি‌টির সভাপ‌তি ও উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ মাধ‌্যমিকের উর্ধতন কর্তৃপ‌ক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা ক‌রে‌ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.