বিজিবি’র মাসব্যাপী অভিযানে শতাধিক একর পপিখেত ধংস

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবানঃ ২৪শে ফেব্রুয়ারী ২০২৩ইং বান্দরবানের থানচি উপজেলা প্রত্যন্ত এলাকার তিন্দুতে ইউনিয়নের গহীন অরণ্যে অভিযান চালিয়ে ৪৫ একর পপিক্ষেত ধ্বংস করে পুড়িয়ে দিয়েছে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ ( বিজিবি) বলিপাড়া ৩৮ ব্যাটালিয়ন ।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) রুমা উপজেলার ২ নং তিন্দু ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডে তিন্দুমুখ বিওপি ক্যাম্প কাছাকাছি কোঅং খুমি পাড়া এলাকায় বিশেষ টহল টিম অভিযান পরিচালনা করে। এসয় নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য পপিখেত ধ্বংস করে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

বলিপাড়া ব্যাটালিয়ন (৩৮ বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল খন্দকার মুহাম্মদ শরীফ-উল-আলম পিএসসি সাংবাদিকদের জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায় বিজিবি। অভিযানে নেতৃত্ব দেন বলিপাড়া ব্যাটালিয়ন (৩৮ বিজিবি) সহকারী পরিচালক ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাষ্টার মুন্সী ইমদাদুর রহমানের একটি বিশেষ দল । অভিযানে গহীন অরণ্যে কোঅং খুমি পাড়া এলাকায় ২০টি টিলায় ৪৫ একর জমি পপিক্ষেত ধ্বংস করে দেয়া হয়।

তিনি আরো জানান, বাংলাদেশের সীমান্ত ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা ছাড়াও চোরাচালান দমন, মাদকদ্রব্য ও অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ, দুর্গম পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও পাহাড়ী-বাঙ্গালী সীমান্ত অপরাধ দমনে মাদক নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

বিজিবির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ জানুয়ারী হতে ২৩ ফেব্রুয়ারী মাসব্যাপী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি জোয়ানরা পাঁচ দফা অভিযান চালিয়ে প্রায় একশ একরের বেশি পাহাড়ী উচুঁ নিচু জমি (টিলায়) ব্যাপক পরিমান নিষিদ্ধ পপিক্ষেত ধংস করে পুড়িয়ে দিয়েছে। বিজিবি যতবার অভিযান পরিচালনা করে ততবারই বিপুল পরিমান পপিক্ষেত সন্ধান পাওযা যায়। থানচি উপজেলা চারটি ইউনিয়নের মধ্যে ২নং তিন্দু ইউনিয়নের ১ ও ২ নং ওয়ার্ডে গত ২৪ জানুয়ারী হতে ২৩ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত নিজস্ব গোয়েন্দার তথ্য ভিত্তিত্তে পাঁচ দফা অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত একশ একরের বেশি পাহাড়ী উচুঁ নিচু ভূমিতে নিষিদ্ধ মাদক দ্রব্য পপিক্ষেত ধংস করে পুড়িয়ে দিয়েছে।

এব্যাপারে ২নং তিন্দু ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে মেম্বার ক্রানিঅং মারমা সাংবাদিকদের জানান,তিন্দু এলাকা এক শ্রেনির মানুষ নিষিদ্ধ আফিম আসক্ত রয়েছে। তারা আফিম সেবন না করলে চলে না। নিজেরা সেবনের জন্য পপি চাষ করে থাকে।
সূত্রমতে, প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে ঝরনা, খাল ও নদীর ধারে ছায়াযক্ত স্থানে ঝোপ জঙ্গল পপি বীজ ছিটিয়ে দেয়। সেখান থেকে গজিয়ে ফেব্রুয়ারী মাসে পপি ফল থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় কষ সংগ্রহ করা হয়। কষগুলো এক জায়গায় বিশেষ প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে আফিম তৈরী হয়। এ নিষিদ্ধ আফিম-ই
দেশের অন্যান্য জায়গায় বিক্রি করে।

থনাচি উপজেলায় তিন্দু ইউনিয়নেনর দুর্গম অরণ্যে বসবাস করা লোকজন নিষিদ্ধ পণ্য হিসেবে মনে করছেন না। তারা এটি একটি লাভজনক বানিজ্যিক ফলন মনে করে থাকে।
ফলে পপি চাষ সেখানে ব্যাপক আকারে ধারন করেছে। সাধারণ মানুষেমানুষের পপি চাষের উৎসাহিত করছে স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী নেতারা। তবে পপি চাষের সরাসরি পপি চাষ করে থাকে দরিদ্র চাষিরা।

সূত্রটি আরও বলেন, এ পর্যন্ত বিজিবি ধ্বংস করে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে পপিখেত আর ও রয়েছে এক টানা অভিযান করে ধ্বংস করা প্রয়োজন বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনপ্রতিনিধি। ধ্বংস হলে এ এলাকার সাধারন মানুষের জীবন যাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে মনে করেন তিনি।।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.