মোঃ আনিছুর রহমান,বেনাপোল প্রতিনিধি: বেনাপোল দিয়ে ভারত গামী পাসপোর্ট যাত্রী প্রায় শুন্যের কোটায় এসে পড়েছে। এ পথে প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১১ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ভারত আসা যাওয়া করত। গত জুলাই আগষ্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর থেকে ভারত সরকার সে দেশের ভিসা বন্ধ করে দেওয়ায় বেনাপোল এর পরিবহন মানিচেঞ্জার ব্যবসায়িদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ধ্বস নেমেছে।
তবে ভিসা না থাকায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীরা ও ছাত্ররা। আর কাজ না থাকায় ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস অলস সময় পার করছে।
গতবছর থেকে ভিসা সীমিত করে ভারত সরকার। এরপর গত ৫ই আগষ্টের পর থেকে আরো কমিয়ে এনে শুধু মাত্র ষ্টুডেন্ট ও মেডিকেল ভিসা সীমিত পরিসরে চালু রাখে। তাতে ভ্রমণ পিপাসুরা ও ব্যবসায়ি এবং আত্নীয় বাড়িতে যাতায়াত করা মানুষ পড়ে বিপাকে। ভারতের হায়দ্রাবাদ, ব্যাঙ্গালারু, কোলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গায় সে সকল বাংলাদেশী ছাত্ররা ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারে পড়াশুনা করছিল তাদের মধ্যে যারা ভিসা নিতে দেশে আসে তারা পড়েছে সবথেকে অসুবিধায়। এরা ভিসা চালু না থাকায় যেতে পারছে না তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ফলে তাদের পড়াশুনায় ভাটা পড়েছে বলে অভিভাবকরা উদ্দিগ্ন।
এদিকে বেনাপোল ফাইভ স্টার পরিবহন এর ম্যানেজার আশাদুজ্জামান আশা বলেন, ভিসা বন্ধ থাকায় তাদের পরিবহন ব্যবসায় লোকশান গুনতে হচ্ছে। একই শুর দেন আলম মানিচেঞ্জার এর সত্বাধিকারী মশিয়ার রহমান। তিনি বলেন ভারতে চিকিৎসা, ব্যবসায়ি ছাত্র সহ বিভিন্ন কাজে এ পথে যেত আগে প্রায় ১০ হাজার লোকের উপরে যাত্রী। তাতে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ডলার কেনা বেচা হত। এতে করে কর্মচারী সহ নিজেরা স্বাচ্ছন্দে কেটে যেত। বর্তমান যে অবস্থা অফিস চালানো দুস্কর হয়ে পড়েছে।
বেনাপোল গ্রিন লাইন পরিবহনের ম্যানেজার রবিন্দ্রনাথ বলেন, তাদের এসি গাড়ি। সামান্য কয়েকজন যাত্রী নিয়ে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্য যেতে হয়। এতে তাদের গাড়ির তেল খরচ হচ্ছে না। তিনি বলেন এখানে থেকে যে সকল পরিবহন ঢাকা সহ দেশের প্রত্যান্তঞ্চালে ছেড়ে যায় তারা সকলে পড়েছে বিপাকে। ফলে পরিবহন স্টাফদের বেতন ভাতা না দিতে পারায় তারা কাজ ছেড়ে দিতে হচ্ছে। আর বেকারত্বর হারও দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এদিকে আমদানি রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি যমুনা ট্রেডিং কর্পোরেশন এর সত্বাধিকারী আমিনুল হক বলেন, ভারত ভিসা বন্ধ রাখায় আমাদের ব্যবসায়িক কাজেও সংকট দেখা দিয়েছে। আমদানি রফতানির কাজে পণ্যর গুনগত মান যাচাইয়ের জন্য ব্যবসায়িদের ভারত যাতায়াত করা লাগে। বর্তমানে ভিসা না থাকায় তারা ভারত গমন করতে পারছে না।
এদিকে বেনাপোল বড়আঁচড়া গ্রামের আশরাফ আলী বলেন তার ছেলে ভারতের ব্যাঙ্গালারুতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি সেকশনে পড়াশুনা করে। ছেলে ভিসার জন্য বাড়িতে এসেছে প্রায় ৬ মাস গত হয়ে গেল। কিন্তু দেশে এসে দৌড়াদৌড়ি করে ভিসা না পাওয়া দুশ্চিন্তায় আছি।
খুলনার কমলা দেবী জানান, ভিসা না থাকায় সে ক্যান্সারের চিকিৎসা নিতে যেতে পারছে না। তার খুব দ্রুত ভারতের চেন্নাই যাওয়ার কথা। ওসুধ ও ফুরাইয়াছে তার জন্য সে বেনাপোল এসেছে কারো কাছে কাগজ পাঠিয়ে ওপার ( ভারত) থেকে ওষুধ আনা যায় কি না।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি ইমতিয়াজ মোহাম্মাদ আহসানুল কাদের ভুঁইয়া বলেন, ভিসা জটিলতার কারনে তাদেরও অফিসারদের তেমন কাজ নেই। এ পথে আগে প্রায় ১০/১২ হাজার যাত্রী যাতায়াত করত। এখন মাত্র ৫ থেকে ৬ শত যাত্রী এ পথে যাতায়াত করে থাকে। দিন দিন কমে যাচ্ছে। এতে করে সরকারের রাজস্ব আয়ও কম হচ্ছে।