মোঃ আনিছুর রহমান, বেনাপোল প্রতিনিধিঃ বেনাপোল পোর্ট থানার এস আই নুর আলম ক্ষমতার দাপটে এলাকার মানুষকে জিম্মি করে ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা জোর পুর্বক আদায় করত। কেউ টাকা দিতে না চাইলে তার নামে মিথ্যে মামলা দিয়ে জেল হাজাতে পাঠিয়ে তাদের নিশ্ব করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সে এসব অবৈধ টাকা দিয়ে বেনাপোল পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড বড়আঁচড়া গ্রামে তৈরী করেছেন তিন তলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ি। যার বর্তমান মুল্য কয়েক কোটি টাকা।
বেনাপোল পোর্ট থানার সাবেক ওসি অপুর্ব হাসানের আশির্বাদপুষ্ট ছিল এস আই নুর আলম। তার বাড়ি বরিশাল জেলায়। সে বেনাপোল পোর্ট থানায় থাকাকালে দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়ে। বাজার থেকে ডাইকোফেন সংগ্রহ করে যাদের গায়ে একটু গন্ধ ছিল মাদকের তাদের পকেটে অথবা বাড়িতে রেখে ইয়াবা নাটক সাজিয়ে ধরে থানায় এনে নির্যাতন ও ক্রস ফায়ার এর ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিত লক্ষ লক্ষ টাকা। একই ভাবে হেরোইন ও ফেনসিডিল নাটক সাজিয়ে সে অপুর্ব হাসানের নেতৃত্বে হাতিয়ে নিত অর্থ।
ভয়ে ওই সময়ে কেউ মুখ না খুললে ওগত ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর থেকে মুখ খুলতে শুরু করেছে এলাকার নিরীহ মানুষ। নারী শিশু পাচার এর মত ভুয়া মিথ্যা অভিযোগ তুলে বেনাপোল চেকপোস্টের দোকানদার মামুনের নিকট থেকে কয়েকদফায় আদায় করেছে ১২ লাখ টাকা। চেকপোষ্টের সাদিপুর রোডের সেলুনের দোকান বিনোদ এর নিকট থেকে মিথ্যা অভিযোগ তুলে আদায় করে ২ লাখ টাকা। তার অপরাধ ছিল পাসপোর্ট বাদে অবৈধ পথে ভারত যাওয়ার কোন এক যাত্রীর নিকট বিনোদের ভিজিটিংকার্ড ছিল। এভাবে অবৈধ ব্যবসা বানিজ্য সহ নানা অভিযোগ তুলে চেকপোষ্টের ব্যবসায়ি গোপাল এর নিকট থেক ৫০ হাজার, সন্তু এন্টারপ্রাইজে সাবেক প্রধান মন্ত্রী খালেদা জিয়ার ফেষ্টুন থাকায় কামালকে ধরে নিয়ে আটক করে ৬৫ হাজার টাকা আদায় বড়আচড়ার গাজীর নিকট থেকে ৭০ হাজার, যশোর মানিচেঞ্জার এর মুকুলকে নাটকিয় আটক দেখিয়ে ৬০ হাজার টাকা বড়আঁচাড়ার মহিউদ্দিন এর নিকট থেকে ১০ হাজার টাকা, পুটখালী গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে রাশেদ আলীর নিকট থেকে জোর করে ৪৫ হাজার টাকা, একই গ্রামের রবিউল এর ছেলে আলাউদ্দিনকে আটক করে শারীরীক নির্যাতন করে ৮৫ হাজার টাকা সাহেবের ছেলে রমজান আলীকে আটক করে মাদক দিয়ে চালানের ভয় দেখিয়ে ৭০ হাজার টাকা, শুকুর এর ছেলে আরিফকে আটক করে ৭০ হাজার টাকা মুনছুর এর ছেলে জাফরকে আটক করে ১০হাজার টাকা আদায় করে।
সীমান্ত বর্তী থানা বেনাপোলে যোগদান করার পর থেকে নুর আলম এক আতঙ্কর নাম হয়ে উঠে। সে এলাকার লোককে মিথ্যা মামলার ভয় ভিতী দেখিয়ে জিম্মি করে হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা। এভাবে সে এই পৌরসভায় জমি ক্রয় করে বাড়িও নির্মান করে। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। প্রত্যেককে সে টাকা নেওয়ার পর ভয় দেখিয়ে বলত কারো কাছে বা কোন সাংবাদিকের কাছে টাকা নেওয়ার কথা বলবে না। বললে তাকে মাদক দিয়ে চালান দেওয়া হবে। এছাড়া সে আরো শত শত লোকের নিকট থেকে এ ভাবে টাকা নিয়ে কোটি কোটি টাকা ঘুষ বানিজ্য করেছে।
এছাড়া নুর আলম বেনাপোল পোর্ট থানার কলেজ ছাত্র রেজওয়ানকে গুম করে। সে ঘটনায় সম্প্রতি সে সহ সাবেক পোর্ট থানা ওসি অপুর্ব হাসান ও ওসি তদন্ত শামিম সহ নুর আলম এর নামে মামলা হয়েছে। রেজওয়ান থানার মহিষাডাঙ্গা গ্রামের মিজানুর রহমান এর ছেলে । সে ওই সময় অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল্।