মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার সহ চলতি বোরো মৌসুমের শুরুতেই শীতকে উপেক্ষা করে ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
বাজারে আমন ধানের দাম ভালো পাওয়া এবার বোরো ধান চাষে ঝুঁকেছেন কৃষকরা।ফলে বোরো ধান রোপণে মাঠে নেমে পড়েছে এ উপজেলার কৃষকরা। দিন – রাত জমিতে সেচ দেয়া,জমিতে চাষ দেয়া,বীজতলা থেকে চারা তোলাসহ বোরো ধান চাষের নানা কাজে এখন দারুণ ব্যস্ত তারা। ইতোমধ্যে উপজেলা জুড়ে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১২ ভাগ জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে। শীত উপেক্ষা করে কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোমর বেঁধে মাঠে কাজ করছেন কৃষকেরা।
এদিকে বাজারে ডিজেল তেল ও কীটনাশক ওষুধের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ধান চাষে বিঘা প্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে বলে কৃষকেরা জানান। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১২ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উপজেলাজুড়ে উফশী ১০ হাজার ৯শত৪৫ হেক্টর ও হাই ব্রিট জাতের ১১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ধান রোপন করা হচ্ছে। উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়রের হাতিয়র গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান মন্ডল জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় বর্তমান বাজারে ধান বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।
এই মাঠের অধিকাংশ জমিতেই ধান রোপনের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। তিনি আরো বলেন, বাজারে ডিজেল তেল ও কীটনাশক ওষুধের দাম বৃদ্ধি ও বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপের মাধম্যে পানি সেচের নেওয়ায় কৃষকদের ধান চাষে বিঘা প্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে।এসবের দাম কমে গেলে কৃষকরা ধান চাষে অধিক লাভবান হবেন বলে আশা করেন।
কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হাতিয়র গ্রামের কৃষক মোঃ জালাল উদ্দীন জানান, ৫বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও এ বছর বোরো ধান চাষে খরচ অন্যান্য বছরের চেয়ে দিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, বলে খানিকটা চিন্তিত আমি।
মাত্রাই ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল মজিদ সোনার বলেন, গত বছর তিনি ৭বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন। এবার করছেন ৫বিঘা জমিতে। প্রচন্ড শীত আর ঘনকুয়াশাকে উপেক্ষা করে প্রায় জমি তৈরির কাজ শেষের দিকে। আর ক’দিনের মধ্যে চারাগাছ রোপন করা শুরু করবো।
কালাই উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় জানান, বোরো ধান চাষে সুষমের মাত্রায় সার দেওয়ার জন্য এবং সঙ্গে সঙ্গে লাইন, লগো এবং পাশিং করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১২হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে বোরো চাষে বেশি হওয়ার সম্ভবনা। তিনি আরো বলেন, এবার উপজেলা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩ হাজার ৬শত জন কৃষকের মাঝে উফশী জাতের ৫ কেজি ধান, ১০ কেজি ডিওপি ও ১০ কেজি এম ও পি এবং ২ হাজার ২শত জন কৃষকের মাঝে হাই ব্রিট জাতের ২ কেজি করে বীজ বোরো চাষের জন্য প্রনোদনা দিয়েছেন।